নিজস্ব প্রতিবেদক :
আগামী সাত থেকে দশদিনের মধ্যে সয়াবিন তেলের বাজার স্থিতিশীল হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে নৌ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বর্তমান শ্রম পরিস্থিতি বিষয়ে এ সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন তিনি।
বাজারে তেলের সংকট চলছে, এই সুযোগে অতিরিক্ত দাম নেওয়া হচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, এই মুহূর্তে আপনারা যদি বাজারে দেখেন রমজানের যত পণ্য- খেজুর, ছোলা, ডাল, চিনি; শুধু তেলে একটা সমস্যা বিরাজ করছে। আশা করি আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে তেলের বাজার স্থিতিশীল থেকে নিম্নমুখী হয়ে যাবে এবং সরবরাহের যে ঘাটতি ঘটেছে সেটা দূর হবে।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, এই মুহূর্তে দুঃখজনকভাবে বাজারে ভোজ্যতেলের প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে কিছু স্বল্পতা আছে, এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। আপনারা জানেন যে তেলের বাজার ও তেলকে বৈচিত্র্যময় করার জন্য আমরা স্থানীয় বাজার থেকে যে ৬ লাখ টন তেল পাই, যেটা আগে ক্রুড আকারে ভারতে রপ্তানি হয়ে যেতো, এটার ওপরে আমরা ২৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছি। এতে আমরা মনে করছি এ তেলটা স্থানীয় বাজারে চলে আসবে। এতে তেল আমদানির জন্য যে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহার হয়, সেটা সাশ্রয় হবে। দীর্ঘমেয়াদে আমাদের এই উপকারটা আসবে। আমাদের এখনো পরিশোধন সক্ষমতা শতভাগ নেই। আমাদের ৫০ শতাংশের মতো পরিশোধন সক্ষমতা আছে। আশা করি এবার পরিশোধন সক্ষমতা বাড়বে, সঙ্গে সঙ্গে বাজারের বৈচিত্র্যও বাড়বে।
পামওয়েল সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক কমে বিক্রি হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমার তথ্য যদি ভুল না হয়ে থাকে, ১৫০ টাকা বা এ রকম দামে বিক্রি হচ্ছে। এটি সয়াবিনের চাহিদা কিছুটা পূরণ করতে সাহায্য করছে।
চাহিদার চেয়ে লক্ষাধিক টন বেশি ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে বলেও জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আমাদের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে শুরু করে যে বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা আছে, সবাই একযোগে কাজ করছে। টিসিবির ট্রাক সেলের পরিধি আরও বাড়ানো হয়েছে। আশা করি কিছুদিনের মধ্যেই তেলের সমস্যাটা সমাধান হয়ে যাবে।
এই সুযোগে তো তেল কোম্পানিগুলো বাজার থেকে অতিরিক্ত টাকা উঠিয়ে নিচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, কোম্পানিগুলোকে এককভাবে দায়ী করার সুযোগ সম্ভবত নেই। এসও ব্যবসায়ী যারা আছেন, এছাড়া মিডিয়াতে এই ধরনের নিউজ হয়, এই নিউজের ফলেও খুচরা ও ডিলার পর্যায়ে সবাই এক ধরনের মজুতে অনুপ্রাণিত হয়। এক টন চাহিদার বিপরীতে বাজারে যখন ৩ টন ম্যাটেরিয়াল না দেওয়া হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত তার গুদামজাত করার সক্ষমতা থেকে যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত বাজারে বিভিন্ন রকমের নিউজের কারণে একটা অস্থিরতা বিরাজ করে।
কোম্পানিগুলো বাজারে প্রয়োজনের থেকেও অতিরিক্ত তেল সরবরাহ করছে বলেও দাবি করেন বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, আপনারা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে এই মজুতের বিষয়টি প্রকাশ করবেন এবং আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো ইনশাআল্লাহ।
রমজানকে সামনে রেখে অন্য কোনো পণ্যে আর সংকট নেই জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, পণ্যের মূল্য এখন যা আছে আমার কাছে মনে হয় ইনশাল্লাহ প্রত্যেকটা রোজার পণ্যের মূল্য আরও কমবে। এসব পণ্য নিয়ে আমি কোনো অস্থিরতা দেখি না।
সভায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।