Dhaka শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাজারে চালের ঘাটতি নেই, দাম বৃদ্ধি অযৌক্তিক : বাণিজ্য উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাজারে চালের কোনো ঘাটতি নেই। নিজস্ব মজুদেও ঘাটতি নেই। স্থানীয় উৎপাদনেও ঘাটতি নেই। আমরা আমনের ভরা মৌসুম পার করছি। ঠিক এই মুহূর্তে বাজারে এই দামের কোনো যৌক্তিক কারণ আমরা দেখছি না। এটার কারণ আমরা খোঁজার চেষ্টা করছি, বোঝার চেষ্টা করছি। আমাদের কাছে এটা অযৌক্তিক মনে হচ্ছে। আশা করি কিছুদিনের মধ্যে দাম নেমে আসবে।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বেগুনবাড়ি দীপিকার মোড়ে দেশব্যাপী স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ভোক্তা পর্যায়ে বিশেষ করে নাজিরসাইল ও মিনিকেট, এই দুইটা চালের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। খুচরা লেভেলে যে ধরনের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে তার থেকে পাইকারি লেভেলে দামের বৃদ্ধিটা অনেক বেশি।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমাদের যেটা করতে হবে সেটা হচ্ছে যে আমদানিকে উদারীকরণ করতে পারি। আলুর ক্ষেত্রেও আমরা উদারীকরণ করেছি। আলুর দাম ব্যাপকভাবে নেমে এসেছে। আমার কাছে মনে হচ্ছে, সাময়িক মজুদদারীর ঘটনা ঘটছে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাণিজ্য উদারীকরণের জন্য গতকাল আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ টিসিবির চেয়ারম্যানাকে নিয়ে বসেছি। বাজারের সরবরাহ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার জন্য আপাতত আমদানিকেন্দ্রীক ব্যবস্থা নিচ্ছি। ব্যাপক আমদানি প্রস্তুতি চলছে। আমদানি ব্যাপকতার ফলে স্থানীয় বাজারে দামের হ্রাস ঘটবে। যারা মজুদ করছেন তারা ভোক্তাদের কষ্টের সাময়িক মুনাফা করছেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, এই মুহূর্তে আলুর দাম ৫০ টাকারও কম। কিছুদিন আগেও অপ্রত্যাশিতভাবে আলুর দাম বেড়ে গিয়েছিল। আস্তে আস্তে সহনীয় পর্যায়ে আসছে। আরো সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে। সরকারি পর্যায়ে বছর শেষে কিছু আলু মজুত করব। প্রয়োজন হলে আমদানি করে মজুত করব। গত বছর মূল্য বেশি হওয়ার কারণে আলুর চাষ ব্যাপক হয়েছে। এবছর স্বাভাবিকভাবে আশা করা আলু ও পেঁয়াজের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। শুধু বাজার মূল্য না, কৃষকদের ব্যবস্থাও চিন্তা করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য একটা যৌক্তিক পর্যায়ে বাজার ব্যবস্থা করা।

এবছর স্বাভাবিকভাবে আশা করা আলু ও পেঁয়াজের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। শুধু বাজার মূল্য না, কৃষকদের ব্যবস্থাও চিন্তা করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য একটা যৌক্তিক পর্যায়ে বাজার ব্যবস্থা করা।

ব্যাংকে ডলারের সংকট আছে বলে যে তথ্য, তা সঠিক নয় বলে দাবি করে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, গত বছর আমাদের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে। আমাদের রপ্তানিতে প্রায় ১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। ব্যাংকে ডলার সংকট, এ তথ্য সঠিক নয়। ব্যাংকে কোনো ডলার সংকট নেই।

তিনি আরো বলেন, আজ থেকে টিসিবির কাগজের কার্ডের যে ব্যবস্থা ছিল, সেই ব্যবস্থাকে বাতিল করা হলো। নতুন স্মার্ট কার্ডেই টিসিবির পণ্য বিতরণ কার্যক্রম হবে।

টিসিবির পণ্যের ক্ষেত্রে যে ধরনের নৈরাজ্য এবং দুর্বৃত্তায়ন হয়েছিল, এটাকে ডিজিটাল করার মাধ্যমে যত ধরনের অনিয়ম ছিল তার একটা বড় অংশ দূর করতে পেরেছি। এ প্রক্রিয়া চলমান। এক কোটি কার্ডের মধ্যে প্রথমে ৫৭ লাখ, পরে আরো ৬ লাখ ডিজিটাল কার্ড বাজারে ছেড়েছি। আমরা আরো ৩০/৩৫ লাখ কার্ড দিতে পারি। সেটা আমরা নিয়ে আসব।

উপদেষ্টা বলেন, আমরা টিসিবির ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ এবং আরো অংশগ্রহণমূলক করতে চাই। আমরা আরো বেশি লোকের কাছে এই উপকার পৌঁছে দিতে পারব।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে টিসিবির চেয়রাম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোস্তফা ইকবালসহ টিসিবির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান সিইসির

বাজারে চালের ঘাটতি নেই, দাম বৃদ্ধি অযৌক্তিক : বাণিজ্য উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ১২:৫৪:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাজারে চালের কোনো ঘাটতি নেই। নিজস্ব মজুদেও ঘাটতি নেই। স্থানীয় উৎপাদনেও ঘাটতি নেই। আমরা আমনের ভরা মৌসুম পার করছি। ঠিক এই মুহূর্তে বাজারে এই দামের কোনো যৌক্তিক কারণ আমরা দেখছি না। এটার কারণ আমরা খোঁজার চেষ্টা করছি, বোঝার চেষ্টা করছি। আমাদের কাছে এটা অযৌক্তিক মনে হচ্ছে। আশা করি কিছুদিনের মধ্যে দাম নেমে আসবে।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বেগুনবাড়ি দীপিকার মোড়ে দেশব্যাপী স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ভোক্তা পর্যায়ে বিশেষ করে নাজিরসাইল ও মিনিকেট, এই দুইটা চালের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। খুচরা লেভেলে যে ধরনের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে তার থেকে পাইকারি লেভেলে দামের বৃদ্ধিটা অনেক বেশি।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমাদের যেটা করতে হবে সেটা হচ্ছে যে আমদানিকে উদারীকরণ করতে পারি। আলুর ক্ষেত্রেও আমরা উদারীকরণ করেছি। আলুর দাম ব্যাপকভাবে নেমে এসেছে। আমার কাছে মনে হচ্ছে, সাময়িক মজুদদারীর ঘটনা ঘটছে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাণিজ্য উদারীকরণের জন্য গতকাল আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ টিসিবির চেয়ারম্যানাকে নিয়ে বসেছি। বাজারের সরবরাহ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার জন্য আপাতত আমদানিকেন্দ্রীক ব্যবস্থা নিচ্ছি। ব্যাপক আমদানি প্রস্তুতি চলছে। আমদানি ব্যাপকতার ফলে স্থানীয় বাজারে দামের হ্রাস ঘটবে। যারা মজুদ করছেন তারা ভোক্তাদের কষ্টের সাময়িক মুনাফা করছেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, এই মুহূর্তে আলুর দাম ৫০ টাকারও কম। কিছুদিন আগেও অপ্রত্যাশিতভাবে আলুর দাম বেড়ে গিয়েছিল। আস্তে আস্তে সহনীয় পর্যায়ে আসছে। আরো সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে। সরকারি পর্যায়ে বছর শেষে কিছু আলু মজুত করব। প্রয়োজন হলে আমদানি করে মজুত করব। গত বছর মূল্য বেশি হওয়ার কারণে আলুর চাষ ব্যাপক হয়েছে। এবছর স্বাভাবিকভাবে আশা করা আলু ও পেঁয়াজের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। শুধু বাজার মূল্য না, কৃষকদের ব্যবস্থাও চিন্তা করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য একটা যৌক্তিক পর্যায়ে বাজার ব্যবস্থা করা।

এবছর স্বাভাবিকভাবে আশা করা আলু ও পেঁয়াজের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। শুধু বাজার মূল্য না, কৃষকদের ব্যবস্থাও চিন্তা করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য একটা যৌক্তিক পর্যায়ে বাজার ব্যবস্থা করা।

ব্যাংকে ডলারের সংকট আছে বলে যে তথ্য, তা সঠিক নয় বলে দাবি করে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, গত বছর আমাদের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে। আমাদের রপ্তানিতে প্রায় ১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। ব্যাংকে ডলার সংকট, এ তথ্য সঠিক নয়। ব্যাংকে কোনো ডলার সংকট নেই।

তিনি আরো বলেন, আজ থেকে টিসিবির কাগজের কার্ডের যে ব্যবস্থা ছিল, সেই ব্যবস্থাকে বাতিল করা হলো। নতুন স্মার্ট কার্ডেই টিসিবির পণ্য বিতরণ কার্যক্রম হবে।

টিসিবির পণ্যের ক্ষেত্রে যে ধরনের নৈরাজ্য এবং দুর্বৃত্তায়ন হয়েছিল, এটাকে ডিজিটাল করার মাধ্যমে যত ধরনের অনিয়ম ছিল তার একটা বড় অংশ দূর করতে পেরেছি। এ প্রক্রিয়া চলমান। এক কোটি কার্ডের মধ্যে প্রথমে ৫৭ লাখ, পরে আরো ৬ লাখ ডিজিটাল কার্ড বাজারে ছেড়েছি। আমরা আরো ৩০/৩৫ লাখ কার্ড দিতে পারি। সেটা আমরা নিয়ে আসব।

উপদেষ্টা বলেন, আমরা টিসিবির ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ এবং আরো অংশগ্রহণমূলক করতে চাই। আমরা আরো বেশি লোকের কাছে এই উপকার পৌঁছে দিতে পারব।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে টিসিবির চেয়রাম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোস্তফা ইকবালসহ টিসিবির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।