Dhaka শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিরপুরেই ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে চান সাকিব

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৪০:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৭৮ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

ক্রিকেটের কোনো ফরম্যাট থেকেই এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেননি বলে দাবি করেছেন সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। দেশে ফিরে হোম অব ক্রিকেট খ্যাত মিরপুর শের-ই-বাংলায় নিজের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার ইচ্ছার কথাও জানালেন তিনি। ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন সাকিব।

গত বছর ভারত সিরিজ চলাকালে টি-টোয়েন্টি এবং টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন সাকিব। টেস্ট ক্রিকেটের শেষ ম্যাচটা দেশের মাটিতে খেলতে চেয়েছিলেন। সরকারের তরফে সবুজ সংকেত পাওয়ার পর মিরপুর টেস্টের স্কোয়াডেও রাখা হয়েছিল তাকে। কিন্তু সাকিব বিরোধীদের আন্দোলনে বাধার মুখে পড়ে থমকে যায় কার্যত তার বিদায়ী টেস্ট খেলা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাই পর্যন্ত এসে ফিরে যেতে হয় সাকিবকে।

সেখানে ক্রিকবাজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট ভাষায় সাকিব আল হাসান জানান, তিনি এখনো বাংলাদেশের হয়ে কোনো ফরম্যাট থেকেই অবসর নেননি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সত্যি বলতে, আমি এখনো কোনো ফরম্যাট থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেইনি।

সাকিব জানিয়েছেন, তিনি চান দেশের মাটিতে বিশেষ করে মিরপুরে নিজের ক্রিকেটজীবনের শেষ ম্যাচটি খেলতে। তার ভাষায়, হ্যাঁ, শতভাগ। এটা আমার চেয়ে বেশি আমার ভক্তদের জন্য। যদি সেটা সম্ভব হয়, তাহলে সেটিই হবে আমার আর আমার সমর্থকদের জন্য সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত।

১৮ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে একের পর এক রেকর্ড গড়েছেন বলে সাকিব পেয়েছেন ‘রেকর্ড আল হাসান’ উপাধি। তেমনি বিতর্কও তাঁকে নিয়ে কম হননি। বিভিন্ন কারণে খবরের শিরোনাম হয়েছেন বারবার। এমনকি বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডারের নামের পাশে ‘শোরুম আল হাসান’ উপাধিও জুটে গিয়েছিল। যদিও ৩৮ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার এগুলো নিয়ে তেমন একটা মাথা ঘামান না।

তবে সত্য হলো, সাকিবই ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রকৃত বাণিজ্যিক সুপারস্টার। মাঠে দাপট দেখানোর পাশাপাশি মাঠের বাইরেও নিজের সাফল্যকে যেভাবে অর্থে রূপ দিয়েছেন, তা তার আগে আর কেউ পারেননি।

সাকিব বলেন, ‘আমার মনে হয়, এসব আসলে কিছু সাংবাদিক ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম বানিয়ে তুলেছে। ফলে মানুষ এমনটা ভাবতে শুরু করেছে। কারণ, বাংলাদেশে আমি যেভাবে কাজ করেছি, সেটা আগে কেউ করেনি। তাদের কাছে বিষয়টা ছিল নতুন, আর সেটা হজম করাও তাদের জন্য কঠিন ছিল। এখন যদি অন্য কেউ একইভাবে (ব্র্যান্ড প্রচার) করে, তাতে মানুষের তেমন প্রতিক্রিয়া হয় না। কিন্তু আমি যেহেতু প্রথম ছিলাম, সেটাই ছিল একদিকে ভালো আবার অন্যদিকে খারাপও।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে এটাও সত্য, মানুষ তাদের মতো করে ভাবতে পারে। আমি তাতে বিচলিত নই। মানুষ আমার সম্পর্কে কী ভাবছে, সেটা নিয়ে আমি খুব একটা মাথা ঘামায় না। আমি শুধু আমার কাছের মানুষরা কী ভাবছে, সেটাতেই আগ্রহী। আর আমার মনে হয়, ওদের কেউই এভাবে ভাবে না।’

সাকিবের পরিবার আগেই আমেরিকায় থিতু হয়েছিল। দেশে ফেরার পথ বন্ধ হওয়ার পর সাকিবও পরিবারের সাথে মার্কিন মুল্লুকে আছেন। জাতীয় দলে না থাকলেও বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলছেন। সম্প্রতি খেলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মাইনর লিগে। অনেকটা অখ্যাত এই লিগে সাকিবই ছিলেন বড় তারকা।

যদিও এসব টুর্নামেন্টও এখন উপভোগ করছেন সাকিব। বলছিলেন, সত্যি বলতে আমি খুব উপভোগ করেছি। অনেক লোকাল প্লেয়ারের সাথে পরিচয় হয়েছে। অনেকের সাথে দেখা হয়েছে যাদের ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে দেখেছিলাম, অনূর্ধ্ব-১৯ এর দিনগুলোতে ফিরে গিয়েছি। ছোটবেলার মতো এমন একটা ক্রিকেটীয় পরিবেশ পেয়ে খুব ভালো লেগেছে। মনে হয়েছে আগের সময় কাটাচ্ছি আবার।

ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত এক ভেন্যুতে সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড সাকিবের। মিরপুরে ৮৯ ওয়ানডেতে ৪.০৮ ইকোনমিতে নিয়েছেন ১৩১ উইকেট। এই তালিকায় তিনি পেছনে ফেলেছেন পাকিস্তানি কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরামকে। শারজায় পাকিস্তানি বাঁহাতি পেসার ৭৭ ওয়ানডেতে ৩.৫৫ ইকোনমিতে নিয়েছেন ১২২ উইকেট।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিরপুরেই ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে চান সাকিব

প্রকাশের সময় : ০৩:৪০:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

স্পোর্টস ডেস্ক : 

ক্রিকেটের কোনো ফরম্যাট থেকেই এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেননি বলে দাবি করেছেন সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। দেশে ফিরে হোম অব ক্রিকেট খ্যাত মিরপুর শের-ই-বাংলায় নিজের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার ইচ্ছার কথাও জানালেন তিনি। ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন সাকিব।

গত বছর ভারত সিরিজ চলাকালে টি-টোয়েন্টি এবং টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন সাকিব। টেস্ট ক্রিকেটের শেষ ম্যাচটা দেশের মাটিতে খেলতে চেয়েছিলেন। সরকারের তরফে সবুজ সংকেত পাওয়ার পর মিরপুর টেস্টের স্কোয়াডেও রাখা হয়েছিল তাকে। কিন্তু সাকিব বিরোধীদের আন্দোলনে বাধার মুখে পড়ে থমকে যায় কার্যত তার বিদায়ী টেস্ট খেলা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাই পর্যন্ত এসে ফিরে যেতে হয় সাকিবকে।

সেখানে ক্রিকবাজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট ভাষায় সাকিব আল হাসান জানান, তিনি এখনো বাংলাদেশের হয়ে কোনো ফরম্যাট থেকেই অবসর নেননি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সত্যি বলতে, আমি এখনো কোনো ফরম্যাট থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেইনি।

সাকিব জানিয়েছেন, তিনি চান দেশের মাটিতে বিশেষ করে মিরপুরে নিজের ক্রিকেটজীবনের শেষ ম্যাচটি খেলতে। তার ভাষায়, হ্যাঁ, শতভাগ। এটা আমার চেয়ে বেশি আমার ভক্তদের জন্য। যদি সেটা সম্ভব হয়, তাহলে সেটিই হবে আমার আর আমার সমর্থকদের জন্য সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত।

১৮ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে একের পর এক রেকর্ড গড়েছেন বলে সাকিব পেয়েছেন ‘রেকর্ড আল হাসান’ উপাধি। তেমনি বিতর্কও তাঁকে নিয়ে কম হননি। বিভিন্ন কারণে খবরের শিরোনাম হয়েছেন বারবার। এমনকি বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডারের নামের পাশে ‘শোরুম আল হাসান’ উপাধিও জুটে গিয়েছিল। যদিও ৩৮ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার এগুলো নিয়ে তেমন একটা মাথা ঘামান না।

তবে সত্য হলো, সাকিবই ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রকৃত বাণিজ্যিক সুপারস্টার। মাঠে দাপট দেখানোর পাশাপাশি মাঠের বাইরেও নিজের সাফল্যকে যেভাবে অর্থে রূপ দিয়েছেন, তা তার আগে আর কেউ পারেননি।

সাকিব বলেন, ‘আমার মনে হয়, এসব আসলে কিছু সাংবাদিক ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম বানিয়ে তুলেছে। ফলে মানুষ এমনটা ভাবতে শুরু করেছে। কারণ, বাংলাদেশে আমি যেভাবে কাজ করেছি, সেটা আগে কেউ করেনি। তাদের কাছে বিষয়টা ছিল নতুন, আর সেটা হজম করাও তাদের জন্য কঠিন ছিল। এখন যদি অন্য কেউ একইভাবে (ব্র্যান্ড প্রচার) করে, তাতে মানুষের তেমন প্রতিক্রিয়া হয় না। কিন্তু আমি যেহেতু প্রথম ছিলাম, সেটাই ছিল একদিকে ভালো আবার অন্যদিকে খারাপও।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে এটাও সত্য, মানুষ তাদের মতো করে ভাবতে পারে। আমি তাতে বিচলিত নই। মানুষ আমার সম্পর্কে কী ভাবছে, সেটা নিয়ে আমি খুব একটা মাথা ঘামায় না। আমি শুধু আমার কাছের মানুষরা কী ভাবছে, সেটাতেই আগ্রহী। আর আমার মনে হয়, ওদের কেউই এভাবে ভাবে না।’

সাকিবের পরিবার আগেই আমেরিকায় থিতু হয়েছিল। দেশে ফেরার পথ বন্ধ হওয়ার পর সাকিবও পরিবারের সাথে মার্কিন মুল্লুকে আছেন। জাতীয় দলে না থাকলেও বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলছেন। সম্প্রতি খেলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মাইনর লিগে। অনেকটা অখ্যাত এই লিগে সাকিবই ছিলেন বড় তারকা।

যদিও এসব টুর্নামেন্টও এখন উপভোগ করছেন সাকিব। বলছিলেন, সত্যি বলতে আমি খুব উপভোগ করেছি। অনেক লোকাল প্লেয়ারের সাথে পরিচয় হয়েছে। অনেকের সাথে দেখা হয়েছে যাদের ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে দেখেছিলাম, অনূর্ধ্ব-১৯ এর দিনগুলোতে ফিরে গিয়েছি। ছোটবেলার মতো এমন একটা ক্রিকেটীয় পরিবেশ পেয়ে খুব ভালো লেগেছে। মনে হয়েছে আগের সময় কাটাচ্ছি আবার।

ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত এক ভেন্যুতে সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড সাকিবের। মিরপুরে ৮৯ ওয়ানডেতে ৪.০৮ ইকোনমিতে নিয়েছেন ১৩১ উইকেট। এই তালিকায় তিনি পেছনে ফেলেছেন পাকিস্তানি কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরামকে। শারজায় পাকিস্তানি বাঁহাতি পেসার ৭৭ ওয়ানডেতে ৩.৫৫ ইকোনমিতে নিয়েছেন ১২২ উইকেট।