স্পোর্টস ডেস্ক :
টানা দ্বিতীয় ম্যাচ গোল পেলেন না লিওনেল মেসি। তবে টানা দুই ম্যাচে তার বড় ভূমিকা থাকবে না, তা তো আর হয় না! গোল করতে না পারলেও তিনটি গোল বানিয়ে দিলেন তিনি। ইন্টার মায়ামি পেল বড় জয়ের দেখা।
মেজর লিগ সকারে নিউ ইংল্যান্ড রেভোলুশনকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দেয় ইন্টার মায়ামি। মেসি গোল না পেলেও তার স্বদেশী উইঙ্গার তাদেও আইয়েন্দে করেন দুটি গোল। মেসির দীর্ঘদিনের সঙ্গী ও সতীর্থ জর্দি আলবা করেন দুটি গোল। তিন অ্যাসিস্টের মাঝে একবার জালের দেখা পান মেসিও। তবে অফসাইডের কারণে গোল হয়নি।
মেসির এই পারফরম্যান্সে যোগ হলো নতুন এক কীর্তি। এটা তার মৌসুমে ৪১তম গোল কন্ট্রিবিউশন (গোল ও অ্যাসিস্ট)। এমএলএস ইতিহাসে তিনি এখন দ্বিতীয় খেলোয়াড়, যিনি এক মৌসুমে অন্তত ৪০টি গোল অবদান রেখেছেন; তার আগে এটি করেছিলেন কার্লোস ভেলা।
বাংলাদেশ সময় রোববার (৫ অক্টোবর) ভোরে এই ম্যাচের শুরুতে বিশেষ এক আয়োজন ছিল সের্হিও বুসকেতসকে নিয়ে। এই মৌসুম শেষে বর্ণাঢ্য ফুটবল ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন সর্বকালের সেরা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারদের একজন। তার স্ত্রী ও সন্তানেরা, মায়ামির মালিকপক্ষ ও ম্যানেজমেন্টের অনেকেই ছিলেন আয়োজনে।
মায়ামির মাঠে ম্যাচের শুরুতে এগিয়ে যেতে পারত নিউ ইংল্যান্ড। নবম মিনিটে কার্লেস হিলের দুর্দান্ত এক ক্রসে ব্র্যান্ডন বাইয়ের হেড ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে।
১৪তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে মেসির শট সোজাসুজি যায় গোলকিপারের কাছে। মিনিট দুয়েক পরই আইয়েন্দের শট কোনোরকমে বাইরে পাঠিয়ে দেন নিউ ইংল্যান্ড গোলকিপার। একটু পর বল জালে পাঠান রদ্রিগো দে পল। কিন্তু অফসাইডের কারণে গোল হয়নি।
৩২তম মিনিটে আলবার কাছ থেকে বল পেয়ে মেসি বাড়িয়ে দেন আইয়েন্দেকে। চমৎকার ফিনিশিংয়ে বল জালে জড়ান আর্জেন্টাইন উইঙ্গার। ৪৫তম মিনিটে বল জালে পাঠান মেসি। কিন্তু এটিও গোল হয়নি অফসাইডের কারণে।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে বক্সের ভেতর জাদু দেখিয়ে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের বিভ্রান্ত করে মেসি বল দেন আলবাকে। ভারসাম্য হারিয়েও বল জালে পাঠাতে পারেন এই ডিফেন্ডার।
৫৩তম মিনিটে আলবার ক্রস থেকে লুইস সুয়ারেসের হেড চলে যায় বাইরে দিয়ে। মিনিট খানেক পরই সুবর্ণ সুযোগ পান মেসি। বুসকেতসের ডিফেন্সচেরা দুর্দান্ত পাস ধরে গোলকিপারের পাশ দিয়ে টোকা দিয়ে বল পাঠান মায়ামি অধিনায়ক। কিন্তু একটুর জন্য তা চলে যায় বাইরে দিয়ে।
নিউ ইংল্যান্ড একটি গোল ফিরিয়ে দেল ৫৯তম মিনিটে। পরের মিনিটেই ব্যবধান আবার বাড়ায় মায়ামি। মাঝমাঠ থেকে উঁচু করে বল বাড়ান মেসি। সেটি ধরে সঙ্গে লেগে থাকা ডিফেন্ডারকে ছিটকে গোল করেন আইয়েন্দে। ৬৩তম মিনিটে তেলাস্কো সেগোভিয়ার কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতর একজনকে কাটিয়ে কোনাকুনি শটে নিজের দ্বিতীয় ও দলের চতুর্থ গোল করেন আলবা। ৮৩তম মিনিটে আবার সুযোগ পান মেসি। তবে তার দুর্বল শট জালের ঠিকানা পায়নি।
৩২ ম্যাচে ৫৯ পয়েন্ট নিয়ে মায়ামি এখন আছে তিনে। প্লেঅফের আগে তাদের দুটি ম্যাচ বাকি এখনও। তবে ৩৩ ম্যাচে ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা ফিলাডেলফিয়া নিশ্চিত করেছে সাপোর্টার্স শিল্ড।
মেজর লিগ সকারে নিয়মিত মৌসুমে সর্বোচ্চ পয়েন্ট পাওয়া দল পায় এই সাপোর্টাস শিল্ড। গত মৌসুমে পয়েন্টের রেকর্ড গড়ে এটি জিতেছিল মায়ামি।
ম্যাচ শেষে মায়ামি কোচ হাভিয়ের মাসচেরানো বলেন, ‘মেসি আমাদের খেলার রিদমটাই বদলে দিয়েছে, প্রথম গোল, তারপর জর্দির গোল, এমনকি ওরা যখন ব্যবধান কমাল, সঙ্গে সঙ্গে সে যেভাবে অ্যাসিস্ট করল; এগুলো শুধু মেসিই পারে। তার ক্ষুধা ও আগ্রহ এখনো আগের মতোই তীব্র। ‘
মেসির এই পারফরম্যান্স শুধু মায়ামিকে শীর্ষ তিনে ফেরায়নি, বরং তাকে এমএলএস ইতিহাসের অন্যতম সেরা প্লেমেকারের আসনে বসিয়েছে।