Dhaka মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রোমাঞ্চকর ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করলো বাংলাদেশ

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১১:৪৬:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৯৫ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

এশিয়া কাপের ব্যর্থতার পর একটি সাফল্যের প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। আফগানিস্তানকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারিয়ে সে সাফল্য খুঁজে পেল। তিন ম্যাচের সিরিজ এক ম্যাচ হাতে রেখেই জিতে নিল বাংলাদেশ। শারজাতে পরপর দুইদিন দুই ম্যাচে রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) লড়াইটা জমেছিল আরেকটু বেশি। ১৪৮ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশ ৫ বল ও ২ উইকেট হাতে রেখে ছুঁয়ে ফেলে। কিন্তু শেষটা ছিল চরম রোমাঞ্চকর। ১২ বলে ১৯ রানের জয়ের সমীকরণে সোহান ও শরিফুল ছিলেন প্রচন্ড চাপে। কিন্তু নুরের করা ১৯তম ওভারে ১৭ রান তুলে জয়ের কাজটা সহজ করে ফেলে বাংলাদেশ।

১৪৮ রান তাড়ায় শুরুতে বাংলাদেশের রান তাড়ার শুরুটা ভালো হয়নি একদমই। আগের ম্যাচে শতরানের বিধ্বংসী উদ্বোধনী জুটি গড়া তানজিদ হাসান ও পারভেজ হোসেন ফেরেন দ্রুতই। দুই ওপেনারকেই ফেরান আজমাতউল্লাহ ওমারজাই। তিনে নেমে পাল্টা আক্রমণ করা সাইফ হাসানকেও বেশি দূর যেতে দেননি একাদশে ফেরা মুজিব-উর-রহমান। দুই ছক্কা ও এক চারে তিনি ফেরেন ১৮ রান করে।

২৪ রানে ৩ উইকেট হারানো দলকে অনেকটা দূর এগিয়ে নেন জাকের আলি ও শামীম হোসেন। ৩৭ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়েন তারা চতুর্থ উইকেটে। দৌড়ে খুব বেশি রান নেই সেই জুটিতে, চার ও ছক্কা আছে চারটি করে!

রাশিদ খানকে একটি রিভার্স সুইপে চার মেরে পায়ে ক্র্যাম্প করায় মাঠেই কিছুটা চিকিৎসা নেন জাকের আলি। এলবিডব্লিউ হয়ে যান তিনি পরের বলেই (২৫ বলে ৩২)। একটু পর শামীম (২২ বলে ৩৩) উইকেট বিলিয়ে দেন নুর আহমাদের বলে সুইচ হিট খেলতে গিয়ে।

তখনও দলের বিপদ খুব বোঝা যায়নি। সোহান ক্রিজে যাওয়ার পরপরই ছক্কা মারেন মোহাম্মাদ নাবিকে, চার মারেন রাশিদকে। তাকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দেন নাসুম আহমেদ।

নাসুমের বিদায় দিয়েই মুলত আতঙ্কের রেশ ফিরে আসে আবার। সাইফ উদ্দিন ক্রিজে গিয়ে প্রথম বলে চার মারলেও পরের বলে বাজে শটে আউট হন। রিশাম হোসেন প্রথম বলে ক্যাচ হতে হতেও বেঁচে যান। পরের বলে বাজে এক শটে উইকেট হারান। আগে দিনের মতো ৯ রানে ৬ উইকেটের পতন না হলেও ৭ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চরম বিপাকে পড়ে যায় বাংলাদেশ। এক ওভারে দুটিসহ চার উইকেট শিকার করেন আজমাতউল্লাহ ওমারজাই।

তবে স্নায়ুর চাপকে পাত্তা দেননি সোহান। শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৯ রানের। নুর আহমাদের বলে সোহানের বিশাল এক ছক্কায় ম্যাচ হেলে পড়ে বাংলাদেশের দিকে। ওই ওভারেই শরিফুলের চারে ম্যাচ চলে আসে নাগালে।

শেষ ওভারের প্রথম বলে ওমারজাইকে চার মেরে খেলা শেষ করে দেন শরিফুলই।

এর আগে টস জিতে দারুণ সূচনা পায় আফগানরা। সেদিকুল্লাহ ও ইব্রাহিম খুব বেশি আক্রমণাত্মক না হলেও প্রায় আট ওভারে ওপেনিং জুটিতে ৫৫ রান এনে দেন। তাতে বড় পুঁজির স্বপ্নই দেখছিল দলটি। এরপর অবশ্য বাংলাদেশের বোলাররা ঘুরে দাঁড়ান, বিশেষকরে দুই স্পিনার রিশাদ হোসেন ও নাসুম আহমেদ। তাতে রানের গতিতে লাগাম থাকে।

রিশাদ ও নাসুম দুইজনই পেয়েছেন দুটি করে উইকেট। সেদিকুল্লাহকে ফিরিয়ে রিশাদ জুটি ভাঙার পর আরেক ওপেনার ইব্রাহিমকে তুলে নেন নাসুম। এরপর ওয়াফিউল্লাহ তারাখিলকে দ্রুত ফেরান রিশাদ। আর দারউইস রাসুলিকে ছাঁটাই করেন নাসুম।

তবে গুরবাজ এক প্রান্তে টিকে গিয়েছিলেন। দারুণ কিছু বাউন্ডারি আদায় করে হুমকি দিচ্ছিলেন টাইগারদের। তাকে দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে বোল্ড করেন শরিফুল ইসলাম। তাতে শেষ দিকের সুবিধা আদায় করতে পারেনি আফগানরা। পাঁচ উইকেট হাতে থাকলেও শেষ চার ওভারে ৩০ রান তুলতে পারে দলটি।

আফগানিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন ইব্রাহিম ৩৭ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় এই রান করেন। এছাড়া গুরবাজ ৩০ ও সেদিকুল্লাহ ২৩ রান করেন। শেষদিকে মোহাম্মদ নবি ১২ বলে ২০ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন।

সিরিজ জয় নিশ্চিত করা বাংলাদেশ রোববার (৫ অক্টোবর) মাঠে নামবে ৩-০ ব্যবধানে জিততে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

রোমাঞ্চকর ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করলো বাংলাদেশ

প্রকাশের সময় : ১১:৪৬:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫

স্পোর্টস ডেস্ক : 

এশিয়া কাপের ব্যর্থতার পর একটি সাফল্যের প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। আফগানিস্তানকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারিয়ে সে সাফল্য খুঁজে পেল। তিন ম্যাচের সিরিজ এক ম্যাচ হাতে রেখেই জিতে নিল বাংলাদেশ। শারজাতে পরপর দুইদিন দুই ম্যাচে রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) লড়াইটা জমেছিল আরেকটু বেশি। ১৪৮ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশ ৫ বল ও ২ উইকেট হাতে রেখে ছুঁয়ে ফেলে। কিন্তু শেষটা ছিল চরম রোমাঞ্চকর। ১২ বলে ১৯ রানের জয়ের সমীকরণে সোহান ও শরিফুল ছিলেন প্রচন্ড চাপে। কিন্তু নুরের করা ১৯তম ওভারে ১৭ রান তুলে জয়ের কাজটা সহজ করে ফেলে বাংলাদেশ।

১৪৮ রান তাড়ায় শুরুতে বাংলাদেশের রান তাড়ার শুরুটা ভালো হয়নি একদমই। আগের ম্যাচে শতরানের বিধ্বংসী উদ্বোধনী জুটি গড়া তানজিদ হাসান ও পারভেজ হোসেন ফেরেন দ্রুতই। দুই ওপেনারকেই ফেরান আজমাতউল্লাহ ওমারজাই। তিনে নেমে পাল্টা আক্রমণ করা সাইফ হাসানকেও বেশি দূর যেতে দেননি একাদশে ফেরা মুজিব-উর-রহমান। দুই ছক্কা ও এক চারে তিনি ফেরেন ১৮ রান করে।

২৪ রানে ৩ উইকেট হারানো দলকে অনেকটা দূর এগিয়ে নেন জাকের আলি ও শামীম হোসেন। ৩৭ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়েন তারা চতুর্থ উইকেটে। দৌড়ে খুব বেশি রান নেই সেই জুটিতে, চার ও ছক্কা আছে চারটি করে!

রাশিদ খানকে একটি রিভার্স সুইপে চার মেরে পায়ে ক্র্যাম্প করায় মাঠেই কিছুটা চিকিৎসা নেন জাকের আলি। এলবিডব্লিউ হয়ে যান তিনি পরের বলেই (২৫ বলে ৩২)। একটু পর শামীম (২২ বলে ৩৩) উইকেট বিলিয়ে দেন নুর আহমাদের বলে সুইচ হিট খেলতে গিয়ে।

তখনও দলের বিপদ খুব বোঝা যায়নি। সোহান ক্রিজে যাওয়ার পরপরই ছক্কা মারেন মোহাম্মাদ নাবিকে, চার মারেন রাশিদকে। তাকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দেন নাসুম আহমেদ।

নাসুমের বিদায় দিয়েই মুলত আতঙ্কের রেশ ফিরে আসে আবার। সাইফ উদ্দিন ক্রিজে গিয়ে প্রথম বলে চার মারলেও পরের বলে বাজে শটে আউট হন। রিশাম হোসেন প্রথম বলে ক্যাচ হতে হতেও বেঁচে যান। পরের বলে বাজে এক শটে উইকেট হারান। আগে দিনের মতো ৯ রানে ৬ উইকেটের পতন না হলেও ৭ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চরম বিপাকে পড়ে যায় বাংলাদেশ। এক ওভারে দুটিসহ চার উইকেট শিকার করেন আজমাতউল্লাহ ওমারজাই।

তবে স্নায়ুর চাপকে পাত্তা দেননি সোহান। শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৯ রানের। নুর আহমাদের বলে সোহানের বিশাল এক ছক্কায় ম্যাচ হেলে পড়ে বাংলাদেশের দিকে। ওই ওভারেই শরিফুলের চারে ম্যাচ চলে আসে নাগালে।

শেষ ওভারের প্রথম বলে ওমারজাইকে চার মেরে খেলা শেষ করে দেন শরিফুলই।

এর আগে টস জিতে দারুণ সূচনা পায় আফগানরা। সেদিকুল্লাহ ও ইব্রাহিম খুব বেশি আক্রমণাত্মক না হলেও প্রায় আট ওভারে ওপেনিং জুটিতে ৫৫ রান এনে দেন। তাতে বড় পুঁজির স্বপ্নই দেখছিল দলটি। এরপর অবশ্য বাংলাদেশের বোলাররা ঘুরে দাঁড়ান, বিশেষকরে দুই স্পিনার রিশাদ হোসেন ও নাসুম আহমেদ। তাতে রানের গতিতে লাগাম থাকে।

রিশাদ ও নাসুম দুইজনই পেয়েছেন দুটি করে উইকেট। সেদিকুল্লাহকে ফিরিয়ে রিশাদ জুটি ভাঙার পর আরেক ওপেনার ইব্রাহিমকে তুলে নেন নাসুম। এরপর ওয়াফিউল্লাহ তারাখিলকে দ্রুত ফেরান রিশাদ। আর দারউইস রাসুলিকে ছাঁটাই করেন নাসুম।

তবে গুরবাজ এক প্রান্তে টিকে গিয়েছিলেন। দারুণ কিছু বাউন্ডারি আদায় করে হুমকি দিচ্ছিলেন টাইগারদের। তাকে দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে বোল্ড করেন শরিফুল ইসলাম। তাতে শেষ দিকের সুবিধা আদায় করতে পারেনি আফগানরা। পাঁচ উইকেট হাতে থাকলেও শেষ চার ওভারে ৩০ রান তুলতে পারে দলটি।

আফগানিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন ইব্রাহিম ৩৭ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় এই রান করেন। এছাড়া গুরবাজ ৩০ ও সেদিকুল্লাহ ২৩ রান করেন। শেষদিকে মোহাম্মদ নবি ১২ বলে ২০ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন।

সিরিজ জয় নিশ্চিত করা বাংলাদেশ রোববার (৫ অক্টোবর) মাঠে নামবে ৩-০ ব্যবধানে জিততে।