নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, নয়টি আইন আমরা সংশোধন করছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রস্তুতি নেওয়ার, অনেক কিছু এগিয়ে নিয়েছি।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নির্বাচনী সংলাপে শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংলাপে সভাপতিত্বে করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনাব এ এম এম নাসির উদ্দিন। এ ছাড়া অন্য চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদসহ ইসির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন।
সিইসি বলেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অনেক কাজ সম্পন্ন করেছি। এরমধ্যে বিশাল একটা কাজ ভোটার তালিকা, তা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শেষ করেছি। নারী ভোটার ব্যবধান কমিয়েছি।
তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের আলোচনায় অনেক কিছু হয়েছে। আর যেটুকু গ্যাপ আছে তা আপনারা (সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা) আজ পূরণ করে দেবেন। আইটি সাপোর্ট পোস্টাল ব্যালট অনেক পরীক্ষা করার পরে আমরা তা হাতে নিয়েছি। ভোটে ১০ লাখ মানুষ দায়িত্বে নিয়োজিত থাকে। তারা ভোট দিতে পারেন না। আমরা এবার সবার ভোটের ব্যবস্থা করব।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, অনেকে জেলখানায় আছেন, যারা ভোট দিতে পারেন না। তাদেরকে এবার ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। ভোট দিতে পারবেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তারাও। আজকের সংলাপ কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে এই সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, আমরা সুষ্ঠু সুন্দর ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আপনাদের পরামর্শ আমাদের পথ চলার সহায়ক হবে।
নির্বাচন কমিশন বেশ কিছু নতুন বিষয়ে হাত দিয়েছে জানিয়ে সিইসি বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আমরা বিশাল কর্মযজ্ঞে হাত দিয়েছি। সবথেকে বড় কাজ হচ্ছে নতুন করে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা। নারী ভোটারদের সংখ্যা অনেক কম ছিল। পুরুষদের থেকে ৩০ লক্ষ কম ছিল। তবে সেটাও আমরা অনেক কমিয়ে এনেছি। আরপিও সংশোধনসহ বিভিন্ন কাজ করেছি।
তিনি বলেন, এছাড়া পোস্টাল ব্যালট আইনে থাকলেও এর প্রয়োগ ছিল না। এটি নিয়ে কাজ করেছি। দেশে যারা নির্বাচনে জড়িত থাকেন তারা ভোট দিতে পারেন না। আমরা এবার সবার ভোটের ব্যবস্থা করবো। এটি একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।
সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির সিনিয়র সচিবসহ সংস্থাটির অন্য কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন। এছাড়া সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবী প্রতিনিধির ১২ জনের মধ্যে রয়েছে, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টার রাশেদা কে চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাহমুদ হাসানউজ্জামান, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মো. মাহফুজুর রহমান, অধ্যাপক আব্দুল ওয়াজেদ, বিজিএমইএ পরিচালক রশিদ আহমেদ হোসাইনি, কবি মোহন রায়হান, পুলিশ রিফর্ম কমিশনের মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি জারিফ রহমান, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস ও টিআইবি পরিচালক মোহাম্মদ বদিউজ্জামান।
অক্টোবরে রাজনৈতিক দল, সাবাদিক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, পর্যবেক্ষক, নারীনেত্রী, জুলাই যোদ্ধাসহ সংশ্লিষ্ট অন্য সবার সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি।
ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো.আশাদুল হক জানান, দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত ৩৩ জন শিক্ষাবিদের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি।
জানা যায়, ইসি অক্টোবরের মাঝামাঝি পূজার ছুটির শেষে রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, পর্যবেক্ষক, নারীনেত্রী, জুলাই যোদ্ধাসহ সংশ্লিষ্ট অন্য সকলের সঙ্গে সংলাপে বসবে।
বর্তমানে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫২টি (আওয়ামী লীগসহ)। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। এ পর্যন্ত ৫৬টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও পরবর্তীতে শর্ত পূরণ, শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়।
দলগুলো হলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা। সস্প্রতি আদালতের আদেশে জামায়াতে ইসলামী ও জাগপা নিবন্ধন ফিরে পেলেও ইসি কেবল জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিয়েছে। এদিকে আদালতের আদেশে নতুন দল হিসেবে নিবন্ধন পেয়েছে বাংলাদেশ লেবার পার্টি।
রোজার আগে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটের লক্ষ্যে কাজ করছে ইসি। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।
নিজস্ব প্রতিবেদক 



















