Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হতে হবে : তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

রোববার (২৫ মে) রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় ভার্চ্যুয়ালি দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সঙ্গে দেখা করে রাজনৈতিক দলগুলো আবারও জাতীয় নির্বাচনের দিন-তারিখ সুস্পষ্ট ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। বিএনপির দাবি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে জনপ্রশাসন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য আমরা যারা রাজপথে আন্দোলন করেছি তারা সরকারকে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। সুতরাং আশা করি দেশ-বিদেশের সম্মানিত, দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিত্বসহ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের নেতৃত্বে জনগণ অবিলম্বে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে অবাধ-নিরপেক্ষ একটি জাতীয় নির্বাচন দেখতে পাবে।

অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়মমাফিক চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করতে হবে বলে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, অতীতের প্রতিটি বাজেটের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, বাজেট বাস্তবায়নের ঘাটতি বাজেট হচ্ছে মূল প্রতিবন্ধকতা। বাজেট প্রণয়নে হয়ত এনবিআরের সরাসরি কোনো ভূমিকা নেই। তবে, রাজস্ব আদায় করে বাজেট বাস্তবায়নে এনবিআরের ভূমিকা মুখ্য। এমন বাস্তবতায় বাজেট পাসের আগ মুহূর্তে অন্তর্বর্তী সরকার হঠাৎ করে এনবিআরের সংস্কার চাপিয়ে দিয়ে যে অচল অবস্থার সৃষ্টি করেছে এটি আমাদের অর্থনীতির জন্য ভালো বিষয় নয়।

তারেক রহমান বলেন, এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনগণের নির্বাচিত সরকার সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। বর্তমান সরকারের যোগ্যতা কিংবা অযোগ্য বলে বিষয় নয়, দেশে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক সরকার না থাকায় একদিকে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের স্থবিরতা নেমে এসেছে, অপরদিকে এক রাজৈনিতক-অর্থনৈতিক অনিশ্চিত পরিবেশের কারণে মানুষের মধ্যে অস্থিরতা নেমে এসেছে। এই কারণে মানুষ প্রতিদিন বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে রাস্তায় নেমে আসছে। যদিও তাদের সেই দাবি-দাওয়া শোনার কেউ নেই।

তিনি বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদ কোনোরূপেই যেন ফিরতে না পারে সেটাই হোক বাংলাদেশের পক্ষের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য। ফ্যাসিবাদের পথরুদ্ধ করে রাষ্ট্র, সরকার ও রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের জন্য দরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার। সময়ের প্রয়োজন সাংবিধানিক ও আইনগত উভয় প্রকারের সংস্কারের বিকল্প নেই। অল্প কিংবা বেশি সংস্কার বলে কিছু নেই। এটি একটি চলমান ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।

রাষ্ট্র স্বৈরাচার কিংবা ফ্যাসিবাদ রুখে দিতে বেশি প্রয়োজন জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে সংসদ এবং সরকার গঠিত হলে সেই সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য।

দেশে জনগণের ক্ষমতা নিশ্চিত থাকলে সরকারের পক্ষে ফ্যাসিবাদী চরিত্র ধারণ করা সহজ হয় না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, সরাসরি ভোটে সরকার কিংবা অন্তর্বর্তী সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার যাই হোক না কেন, তাদের জনগণের কাছে বাধ্য করা না গেলে হয়ত নিজেরাই স্বৈরাচার হয়ে ওঠে। তাই হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে হলে নাগরিকদের সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা জারি রাখতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, প্রতিটি নাগরিককে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। কারণ, দেশের জনগণ সরকারের করুণার পাত্র নয়। সরকার অবশ্যই জনগণের কথা শুনতে এবং ন্যায্য দাবি মানতে বাধ্য। এখানে সরকারের মান-অভিমান কিংবা রাগ-অনুরাগের সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, হাজার শহীদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নৈতিক এবং রাজনৈতিক বৈধতার হয়তো সংকট নেই। তবে, এই সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক নয়। তাই তাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জনগণের কাছে স্পষ্ট থাকা প্রয়োজন।

জনগণকে অন্ধকারে রেখে কিংবা রাজনৈতিক দলগুলোকে অনিশ্চয়তায় রেখে শেষ পর্যন্ত কোনো পরিকল্পনা কার্যকর ও টেকসই হয় না বলেও মন্তব্য করেন তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, হঠাৎ করেই এনবিআর সংস্কার অর্থনীতির জন্য ভালো নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিয়মমাফিক বাজেট ঘোষণা করতে হবে। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, প্রতিবছর জাতীয় বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ঘাটতি বাজেট হচ্ছে মূল প্রতিবন্ধকতা। বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে এনবিআরের হয়তো সরাসরি কোনো ভূমিকা নেই। তবে রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এনবিআরের ভূমিকা মূখ্য।

‘এমন বাস্তবতায় বাজেট পাসের ঠিক আগ মুহূর্তে অন্তর্বর্তী সরকার হঠাৎ করেই এনবিআরের ওপর সংস্কার চাপিয়ে দিয়ে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে যে একটি অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে এটি আমাদের অর্থনীতির জন্য খুব ভালো বিষয় নয়। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক সরকার সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে গণতন্ত্রকামী জনগণ বিশ্বাস করে।’

সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা জারি রাখার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত থাকলে সরকারের পক্ষে ফ্যাসিবাদী চরিত্র ধারণ করা সহজ হয় না। সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সরকার, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সরকারের চরিত্র যা-ই হোক, সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য করা না গেলে ক্ষমতাসীন সরকার হয়তো নিজেদের অজান্তেই স্বৈরাচারী হয়ে ওঠে।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জবাবদিহিমূলক নয় মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, হাজারো শহীদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৈতিক ও রাজনৈতিক বৈধতার হয়তো সংকট নেই। তবে অবশ্যই এই সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক নয়।

তিনি বলেন, সরকার যেহেতু জবাবদিহিমূলক নয় ফলে নৈতিক কারণেই সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জনগণের সামনে স্পষ্ট থাকা প্রয়োজন। জনগণকে অন্ধকারে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোকে অনিশ্চয়তায় রেখে শেষ পর্যন্ত কোনো পরিকল্পনাই কার্যকর ও টেকসই হয় না, হবেও না।

দেশে অনিশ্চিত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিষয় নয়, দেশে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক সরকার না থাকায় একদিকে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা নেমে এসেছে। অন্যদিকে এক অনিশ্চিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দেশে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে প্রতিনিয়ত এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে।

তারেক রহমান বলেন, এ কারণে আমরা দেখছি প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে রাজপথে নেমে আসছে। যদিও আনফোরচুনেটলি তাদের এসব দাবি-দাওয়া শোনার মতো কেউ নেই এ মুহূর্তে।

স্বৈরাচারের মাথাচাড়ায় সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমি একটি বিষয়ে গণতন্ত্রকামী জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, বাংলাদেশে জনগণের ভোটে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠায় যেকোনো ধরনের অজুহাত কিংবা গড়িমসির সুযোগ নিয়ে পরাজিত স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা মাধ্যমে ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব।

এসপিপি সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মাহদী আমিন, বিএলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, ভাসানী জনশক্তির শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার একাংশের খন্দকার লুৎফুর রহমান, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী ও সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হতে হবে : তারেক রহমান

প্রকাশের সময় : ০৮:৫০:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

রোববার (২৫ মে) রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় ভার্চ্যুয়ালি দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সঙ্গে দেখা করে রাজনৈতিক দলগুলো আবারও জাতীয় নির্বাচনের দিন-তারিখ সুস্পষ্ট ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। বিএনপির দাবি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে জনপ্রশাসন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য আমরা যারা রাজপথে আন্দোলন করেছি তারা সরকারকে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। সুতরাং আশা করি দেশ-বিদেশের সম্মানিত, দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিত্বসহ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের নেতৃত্বে জনগণ অবিলম্বে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে অবাধ-নিরপেক্ষ একটি জাতীয় নির্বাচন দেখতে পাবে।

অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়মমাফিক চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করতে হবে বলে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, অতীতের প্রতিটি বাজেটের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, বাজেট বাস্তবায়নের ঘাটতি বাজেট হচ্ছে মূল প্রতিবন্ধকতা। বাজেট প্রণয়নে হয়ত এনবিআরের সরাসরি কোনো ভূমিকা নেই। তবে, রাজস্ব আদায় করে বাজেট বাস্তবায়নে এনবিআরের ভূমিকা মুখ্য। এমন বাস্তবতায় বাজেট পাসের আগ মুহূর্তে অন্তর্বর্তী সরকার হঠাৎ করে এনবিআরের সংস্কার চাপিয়ে দিয়ে যে অচল অবস্থার সৃষ্টি করেছে এটি আমাদের অর্থনীতির জন্য ভালো বিষয় নয়।

তারেক রহমান বলেন, এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনগণের নির্বাচিত সরকার সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। বর্তমান সরকারের যোগ্যতা কিংবা অযোগ্য বলে বিষয় নয়, দেশে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক সরকার না থাকায় একদিকে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের স্থবিরতা নেমে এসেছে, অপরদিকে এক রাজৈনিতক-অর্থনৈতিক অনিশ্চিত পরিবেশের কারণে মানুষের মধ্যে অস্থিরতা নেমে এসেছে। এই কারণে মানুষ প্রতিদিন বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে রাস্তায় নেমে আসছে। যদিও তাদের সেই দাবি-দাওয়া শোনার কেউ নেই।

তিনি বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদ কোনোরূপেই যেন ফিরতে না পারে সেটাই হোক বাংলাদেশের পক্ষের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য। ফ্যাসিবাদের পথরুদ্ধ করে রাষ্ট্র, সরকার ও রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের জন্য দরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার। সময়ের প্রয়োজন সাংবিধানিক ও আইনগত উভয় প্রকারের সংস্কারের বিকল্প নেই। অল্প কিংবা বেশি সংস্কার বলে কিছু নেই। এটি একটি চলমান ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।

রাষ্ট্র স্বৈরাচার কিংবা ফ্যাসিবাদ রুখে দিতে বেশি প্রয়োজন জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে সংসদ এবং সরকার গঠিত হলে সেই সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য।

দেশে জনগণের ক্ষমতা নিশ্চিত থাকলে সরকারের পক্ষে ফ্যাসিবাদী চরিত্র ধারণ করা সহজ হয় না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, সরাসরি ভোটে সরকার কিংবা অন্তর্বর্তী সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার যাই হোক না কেন, তাদের জনগণের কাছে বাধ্য করা না গেলে হয়ত নিজেরাই স্বৈরাচার হয়ে ওঠে। তাই হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে হলে নাগরিকদের সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা জারি রাখতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, প্রতিটি নাগরিককে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। কারণ, দেশের জনগণ সরকারের করুণার পাত্র নয়। সরকার অবশ্যই জনগণের কথা শুনতে এবং ন্যায্য দাবি মানতে বাধ্য। এখানে সরকারের মান-অভিমান কিংবা রাগ-অনুরাগের সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, হাজার শহীদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নৈতিক এবং রাজনৈতিক বৈধতার হয়তো সংকট নেই। তবে, এই সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক নয়। তাই তাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জনগণের কাছে স্পষ্ট থাকা প্রয়োজন।

জনগণকে অন্ধকারে রেখে কিংবা রাজনৈতিক দলগুলোকে অনিশ্চয়তায় রেখে শেষ পর্যন্ত কোনো পরিকল্পনা কার্যকর ও টেকসই হয় না বলেও মন্তব্য করেন তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, হঠাৎ করেই এনবিআর সংস্কার অর্থনীতির জন্য ভালো নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিয়মমাফিক বাজেট ঘোষণা করতে হবে। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, প্রতিবছর জাতীয় বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ঘাটতি বাজেট হচ্ছে মূল প্রতিবন্ধকতা। বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে এনবিআরের হয়তো সরাসরি কোনো ভূমিকা নেই। তবে রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এনবিআরের ভূমিকা মূখ্য।

‘এমন বাস্তবতায় বাজেট পাসের ঠিক আগ মুহূর্তে অন্তর্বর্তী সরকার হঠাৎ করেই এনবিআরের ওপর সংস্কার চাপিয়ে দিয়ে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে যে একটি অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে এটি আমাদের অর্থনীতির জন্য খুব ভালো বিষয় নয়। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক সরকার সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে গণতন্ত্রকামী জনগণ বিশ্বাস করে।’

সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা জারি রাখার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত থাকলে সরকারের পক্ষে ফ্যাসিবাদী চরিত্র ধারণ করা সহজ হয় না। সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সরকার, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সরকারের চরিত্র যা-ই হোক, সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য করা না গেলে ক্ষমতাসীন সরকার হয়তো নিজেদের অজান্তেই স্বৈরাচারী হয়ে ওঠে।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জবাবদিহিমূলক নয় মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, হাজারো শহীদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৈতিক ও রাজনৈতিক বৈধতার হয়তো সংকট নেই। তবে অবশ্যই এই সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক নয়।

তিনি বলেন, সরকার যেহেতু জবাবদিহিমূলক নয় ফলে নৈতিক কারণেই সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জনগণের সামনে স্পষ্ট থাকা প্রয়োজন। জনগণকে অন্ধকারে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোকে অনিশ্চয়তায় রেখে শেষ পর্যন্ত কোনো পরিকল্পনাই কার্যকর ও টেকসই হয় না, হবেও না।

দেশে অনিশ্চিত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিষয় নয়, দেশে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক সরকার না থাকায় একদিকে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা নেমে এসেছে। অন্যদিকে এক অনিশ্চিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দেশে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে প্রতিনিয়ত এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে।

তারেক রহমান বলেন, এ কারণে আমরা দেখছি প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে রাজপথে নেমে আসছে। যদিও আনফোরচুনেটলি তাদের এসব দাবি-দাওয়া শোনার মতো কেউ নেই এ মুহূর্তে।

স্বৈরাচারের মাথাচাড়ায় সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমি একটি বিষয়ে গণতন্ত্রকামী জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, বাংলাদেশে জনগণের ভোটে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠায় যেকোনো ধরনের অজুহাত কিংবা গড়িমসির সুযোগ নিয়ে পরাজিত স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা মাধ্যমে ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব।

এসপিপি সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মাহদী আমিন, বিএলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, ভাসানী জনশক্তির শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার একাংশের খন্দকার লুৎফুর রহমান, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী ও সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।