Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিরসরাইয়ে ১০ বছরেও সংস্কার হয়নি ভেঙে পড়া ব্রিজ, দুর্ভোগে পাঁচ হাজার মানুষ

মিরসরাই উপজেলা প্রতিনিধি : 

ব্রিজের মাঝের অংশ ধসে পড়েছে। রেলিং ভেঙে গেছে। বের হয়ে এসেছে রড়। ভেঙে পড়ার ১০ বছরেও সংস্কার হয়নি ব্রিজটি।

মিরসরাই উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রিজনি নির্মাণ হয় অন্তত ৫০ বছর আগে। ১০ বছর আগে সেটি ভেঙে যায়। এ ভাঙা ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করছেন ওই গ্রামের অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৫ সালে ব্রিজটিতে প্রথম ভাঙন দেখা দেয়। এরপর যতই দিন যাচ্ছে ততই নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। ব্রিজের উপরের দুটি অংশে ভেঙে পড়েছে। ফাটল ধরেছে পিলারে। দুই পাশের রেলিং ভেঙে গেছে। অথচ ব্রিজ দিয়ে আশপাশের বেশ কয়েকটি স্কুল, মাদরাসার শত শত শিক্ষার্থী চলাচল করে।

বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ব্রিজটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। যে কোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে প্রাণহানিও। জনপ্রতিনিধিরা নতুন ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে কোনো উদ্যোগ নেননি।

সাজেদিয়া নুরানি ও ইবতেদায়ি মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা আতা উল্ল্যাহ বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে ৩ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। আড়াই শতাধিক কোমলমতি শিশু প্রতিদিন এ ব্রিজ ব্যবহার করে। আমরা সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকি।

শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা নাইমুল হুদা বলেন, মিরসরাই উপজেলার বড় বাজারগুলোর মধ্যে একটি মিঠাছরা বাজার। এ ব্রিজ হয়ে কৃষকরা ঝুঁকি নিয়ে বাজারে তাদের পণ্য আনা নেওয়া করে থাকেন। বর্তমানে ব্রিজটি দিয়ে হাঁটাও কষ্টসাধ্য।

ব্যবসায়ী নুর সোবহান বাদশা বলেন, প্রতিনিয়তই এ ব্রিজে মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। তাই দ্রুত ব্রিজটি পুনরায় নির্মাণ জরুরি।

ওই সড়কে চলাচল করা সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মীর হোসেন বলেন, এ সড়কে নিয়মিত যাত্রী আনা নেওয়া করতাম। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার কারণে যাত্রী নিয়ে আসা যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে, যাত্রীদেরও কষ্ট বেড়ে গেছে।

কৃষক আব্দুল হাই বলেন, প্রায় ৫০ বছর আগে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। এরপর আর কোনো সংস্কার করা হয়নি। ২০১৫ সালের দিকে ব্রিজটির ওপরের অংশ আস্তে খসে পড়া শুরু হয়।

মিঠাছরা আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাজিম উদ্দিন বলেন, ব্রিজ ব্যবহার করে আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি মাদরাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। দীর্ঘকাল ধরে এ অবস্থার ফলে আমরাও শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভয়ে থাকি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে অভিভাবকরাও ভয়ের মধ্যে থাকেন। এ অবস্থা থেকে দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এ বিষয়ে এলজিইডির মিরসরাই উপজেলা প্রকৌশলী রনি সাহা বলেন, ব্রিজটি সম্পর্কে ইতিপূর্বে আমাকে কেউ অবহিত করেনি। সম্প্রতি আমি ব্রিজটি সম্পর্কে জেনেছি। এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ব্রিজটি পুনরায় নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিরসরাইয়ে ১০ বছরেও সংস্কার হয়নি ভেঙে পড়া ব্রিজ, দুর্ভোগে পাঁচ হাজার মানুষ

প্রকাশের সময় : ০২:৫৩:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫

মিরসরাই উপজেলা প্রতিনিধি : 

ব্রিজের মাঝের অংশ ধসে পড়েছে। রেলিং ভেঙে গেছে। বের হয়ে এসেছে রড়। ভেঙে পড়ার ১০ বছরেও সংস্কার হয়নি ব্রিজটি।

মিরসরাই উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রিজনি নির্মাণ হয় অন্তত ৫০ বছর আগে। ১০ বছর আগে সেটি ভেঙে যায়। এ ভাঙা ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করছেন ওই গ্রামের অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৫ সালে ব্রিজটিতে প্রথম ভাঙন দেখা দেয়। এরপর যতই দিন যাচ্ছে ততই নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। ব্রিজের উপরের দুটি অংশে ভেঙে পড়েছে। ফাটল ধরেছে পিলারে। দুই পাশের রেলিং ভেঙে গেছে। অথচ ব্রিজ দিয়ে আশপাশের বেশ কয়েকটি স্কুল, মাদরাসার শত শত শিক্ষার্থী চলাচল করে।

বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ব্রিজটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। যে কোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে প্রাণহানিও। জনপ্রতিনিধিরা নতুন ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে কোনো উদ্যোগ নেননি।

সাজেদিয়া নুরানি ও ইবতেদায়ি মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা আতা উল্ল্যাহ বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে ৩ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। আড়াই শতাধিক কোমলমতি শিশু প্রতিদিন এ ব্রিজ ব্যবহার করে। আমরা সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকি।

শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা নাইমুল হুদা বলেন, মিরসরাই উপজেলার বড় বাজারগুলোর মধ্যে একটি মিঠাছরা বাজার। এ ব্রিজ হয়ে কৃষকরা ঝুঁকি নিয়ে বাজারে তাদের পণ্য আনা নেওয়া করে থাকেন। বর্তমানে ব্রিজটি দিয়ে হাঁটাও কষ্টসাধ্য।

ব্যবসায়ী নুর সোবহান বাদশা বলেন, প্রতিনিয়তই এ ব্রিজে মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। তাই দ্রুত ব্রিজটি পুনরায় নির্মাণ জরুরি।

ওই সড়কে চলাচল করা সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মীর হোসেন বলেন, এ সড়কে নিয়মিত যাত্রী আনা নেওয়া করতাম। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার কারণে যাত্রী নিয়ে আসা যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে, যাত্রীদেরও কষ্ট বেড়ে গেছে।

কৃষক আব্দুল হাই বলেন, প্রায় ৫০ বছর আগে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। এরপর আর কোনো সংস্কার করা হয়নি। ২০১৫ সালের দিকে ব্রিজটির ওপরের অংশ আস্তে খসে পড়া শুরু হয়।

মিঠাছরা আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাজিম উদ্দিন বলেন, ব্রিজ ব্যবহার করে আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি মাদরাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। দীর্ঘকাল ধরে এ অবস্থার ফলে আমরাও শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভয়ে থাকি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে অভিভাবকরাও ভয়ের মধ্যে থাকেন। এ অবস্থা থেকে দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এ বিষয়ে এলজিইডির মিরসরাই উপজেলা প্রকৌশলী রনি সাহা বলেন, ব্রিজটি সম্পর্কে ইতিপূর্বে আমাকে কেউ অবহিত করেনি। সম্প্রতি আমি ব্রিজটি সম্পর্কে জেনেছি। এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ব্রিজটি পুনরায় নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।