নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাস্তা ব্লক না করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে আন্দোলন করলে জনগণের ভোগান্তি কমবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকালে ‘পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ইতিহাস, ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প পরিদর্শন শেষে শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ ও যানজটের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যারা সড়ক অবরোধ করছেন, তারাই আবার যানজট সম্পর্কে বলছেন। যারা যানজট সৃষ্টি করছে, তারাই আবার বলছেন ঢাকা শহরে যানজট। এখন আমি কোথায় যাবো আপনারা বলেন। এখন আমাকে একটা সমাধান দেন।
তিনি বলেন, ‘তারা যদি রাস্তা অবরোধ না করেন, রাস্তা ব্লক না করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে আন্দোলন করলে জনগণের ভোগান্তি কমবে। এরজন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা।’
রাজধানীর যানজটের বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘যানজট নিরসনের জন্য আমরা ছাত্রদেরও নিয়োগ করতেছি। যানজট একটি বড় ধরনের সমস্যা। রাস্তা বাড়ছে না, প্রতিদিন গাড়ি ঠিকই বাড়ছে। মানুষ কর্মসংস্থানের জন্য ঢাকায় আসছে, মানুষ বাড়ছে। সবাই রাস্তা চায়, কিন্তু যদি জায়গা চাওয়া হয় জায়গা ছাড়বে না।’
‘পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ইতিহাস, ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়ন’ প্রকল্প নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুরান ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্যই এই প্রকল্প। এই এলাকায় যানজট সবচেয়ে বড় সমস্যা। তাই রাস্তা আর পার্কিং প্লেস প্রশস্ত করতে হবে আরও। সেটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
সরকারের ভেতরে থেকে কারও কোনও ভুল থাকলে বা দুর্নীতি করলে তা প্রকাশ করে দেওয়ার জন্য সাংবাদিকদের আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের ভেতরে যদি কারও কোনও ভুল হয় বা দুর্নীতি থাকে, আপনারা প্রকাশ করে দেন। এতে আমরা সচেতন হবো এবং সংশোধন করতে পারবো। আমাদের ভুলগুলো অবশ্যই আমাদের ধরিয়ে দেবেন। কিন্তু যেখানে ভুল না হয়, সেটা করবেন না। যেহেতু আমরা মানুষ, আমাদের ভুল হতেই পারে। যদি আমাদের ভেতরে কেউ কোনও দুর্নীতি করে, আপনারা বলে দেবেন যে এটা করতেছেন। আপনারা জানিয়ে দেবেন। এতে আমার কোনও আপত্তি নেই।
কারাগারের প্রকল্পের বিষয়ে তিনি বলেন, কারাগারের গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গাটি ছোট, এটা আরও বড় করতে হবে। কারাগারের বাইরে রাস্তার প্রশস্ততা আরও বাড়াতে হবে। রাস্তার প্রশস্ততা না বাড়ালে যানজট হবে। এতে লোকজন যেসময় এখানে আসবে সেসময় তাদের গাড়ি রাখা ও চলাচলের অসুবিধা হবে।
প্রকল্পের অগ্রগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রকল্পের কাজ বেশ ভালোভাবেই আগাচ্ছে এবং তারা বেশ ভালোভাবেই কাজ করে যাচ্ছে। আরেকটি বিষয়, যেই বাজেট রয়েছে সেই বাজেটের মধ্যেই কাজটা সম্পন্ন করতে হবে। নতুন কোনও বাজেট দেওয়া হবে না। আমাদের দেশে একটা ধারা তৈরি হয়েছে, প্রথমে একটা বাজেট করে, কয়দিন পর বলে আবার সেটা বাড়াতে হবে। সেটা আর চলবে না। যেই বাজেট আছে এই বাজেটের মধ্যেই কাজটা শেষ করতে হবে।
রাস্তা প্রশস্তের কাজের সময়সীমা নির্ধারণের বিষয়ে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আগামী ৬ মাসের মধ্যেই নির্মাণাধীন চক কমপ্লেক্স মার্কেটের কাজ শেষ করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রকল্পে বাজেট বাড়ানোর চর্চা আর হবে না। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বরাদ্দ দেওয়া বাজেটেই কাজ শেষ করতে হবে। নতুন করে কোনো বাজেট দেওয়া হবে না। আমাদের কোনো দুর্নীতি বা ভুল থাকলে ধরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করছি।