আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরতলীতে হামলায় হিজবুল্লাহ প্রধান নিহত হয়েছেন বলে ইসরায়েল দাবি করার পর এ খবর নিশ্চিত করল গোষ্ঠীটি।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর তথ্যটি নিশ্চিত করে দলটি।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয় হিজবুল্লাহর সদর দপ্তরকে। হামলার সময় সেখানে ছিলেন হাসান নাসরুল্লাহ।
লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী তাদের প্রধান নেতা সাঈদ হাসান নাসরাল্লাহর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি জানান, বিমানবাহিনী হিজবুল্লার প্রধান সদর দপ্তর লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। হামলায় ২ হাজার কেজির বাঙ্কার বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছোড়া হয় অত্যাধুনিক এফ-৩৫ বিমান থেকে।
নাসরুল্লাহর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে দেওয়া বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলেছে, প্রতিরোধের মাস্টার, ধর্মনিষ্ঠ বান্দা তার সৃষ্টিকর্তার কাছে যেতে একজন শহীদ হিসেবে মৃত্যুবরণ করেছেন। সৈয়দ হাসান নাসরুল্লাহ, হিজবুল্লাহর সেক্রেটারি জেনারেল, যোগ দিয়েছেন তার সেরা, অমর সহযোগীদের সঙ্গে। যাদের তিনি দীর্ঘ ৩০ বছর একের পর এক জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আমরা আমাদের সহমর্মিমতা এবং শুভেচ্ছা জানাচ্ছি তার সাথের শহীদদের, যারা তার সঙ্গে এই পবিত্র পথে যাত্রা করেছে বৈরুতে বিশ্বাসঘাতক ইহুদিবাদীদের হামলার মাধ্যমে।
হিজবুল্লাহ আরও জানিয়েছে, যদিও তাদের প্রধান নেতা নিহত হয়েছেন তা সত্ত্বেও গাজা ও ফিলিস্তিনিদের সহযোগিতায়, লেবাননের প্রতিরক্ষায় শত্রুদের বিরুদ্ধ তাদের জিহাদ অব্যাহত থাকবে।
এদিকে তেল আবিবে দফায় দফায় বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। এর আগে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবনে দফায় দফায় হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। রাজধানীর দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলায় হতাহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।
লেবাননের হামলার পরই পাল্টা হামলা হিসেবে তেল আবিবের বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লেবানন থেকে মধ্য ইসরায়েলের দিকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র খোলা জায়গায় গিয়ে পড়েছে বলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে।
গত সোমবার থেকে এখন পর্যন্ত লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত সাত শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও বহু বেসামরিক নাগরিক।
তবে শনিবারের প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা এএফপি বলেছে, নাসরুল্লাহর কাছের একটি সূত্র তাদের জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে নাসরুল্লাহর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই সূত্রটি আরও জানায়, তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন নাকি বেঁচে আছেন।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান লেফটেনেন্ট জেনারেল হারজি হালেভি একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। এতে তিনি দাবি করেছেন, অসংখ্য প্রস্তুতি শেষে লেবাননে নাসরুল্লাহর উপর হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিনি বলেন, সঠিক সময়ে আমরা এই হামলা চালিয়েছি এবং এটি করা হয়েছে খুবই দক্ষভাবে।