নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভারত সরকারের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদ এবং সাংবিধানিক কাঠামো সংস্কারে গঠিত কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় বিচারের জন্য তাকে ফিরিয়ে আনা হবে কি না জানতে চাইলে আইন উপদেষ্টা বলেন, ভারত সরকারের কাছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে।
বিচারের জন্য শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত আনা প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের সঙ্গে ভারতের এক্সট্রাডিশন ট্রিটি (প্রত্যর্পণ চুক্তি) আছে। এটি অনুযায়ী ভারতে যদি আমাদের কোনো কনভিক্টেড (দোষী) মানুষ থাকেন, উনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী হোন আর যাই হোন না কেন ওনার এক্সট্রেডিশন বা প্রত্যর্পণ আমরা চাইতে পারি।
তিনি বলেন, আমাদের ছাত্র-জনতার বিপ্লবকালে যে গণহত্যা ঘটেছে, যে মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটেছে সেটা বিচারের লক্ষ্যে আমরা কিছু পদক্ষেপ ইতোমধ্যে নিয়েছি। দৃশ্যমান কিছু অগ্রগতি হয়েছে। আমাদের ইনভেস্টিগেশন টিম, প্রসিকিউশন টিম গঠন হয়ে গেছে। আদালত পূর্ণগঠনের চিন্তা চলছে। অচিরেই আপনারা দেখবেন বিচার শুরু হয়েছে। বিচার শুরু হওয়ার পর ডেফিনেটলি আমরা এক্সট্রাডিশন চাইবো।
আসিফ নজরুল বলেন, আগামী ১ অক্টোবর থেকে শুরু করে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কারের ছয়টি কমিটি সংস্কার সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান ছাড়াও প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কারে প্রাধান্য দেবে কমিটি।
আসিফ নজরুল আরো বলেন, কোনোরকম মব জাস্টিস, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া, গণপিটুনি দেওয়ার মতো ঘটনা কোনোভাবে গ্রহণ করা হবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই জন নিহতের ঘটনায় খুবই মর্মাহত জানিয়ে তিনি বলেন, এটা আমাদের মর্মাহত করেছে, এটা আমাদের খুবই কষ্ট দিয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছি। তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা এড়ানোর জন্য আমরা যত রকমের পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন, তত রকম পদক্ষেপ নেব।
তিনি বলেন, এখানে কোনোরকম মব জাস্টিস, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া, গণপিটুনি দেওয়া, এগুলো কোনোভাবে গ্রহণ করা হবে না। বিচারবহির্ভূত কোনো হত্যাকাণ্ড একসেপ্ট করা হবে না। আমরা একটা জিনিস নিশ্চিত করছি, আমাদের সরকার আইনিভাবে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেবে। তদন্ত ও বিচার সাপেক্ষে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার।