নিজস্ব প্রতিবেদক :
শিগগিরই শহরের মানুষ যানজটের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে বলে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, রমজান শুরুর পর থেকে দুপুর গড়ালেই রাজধানী ঢাকার সড়কগুলোতে প্রচণ্ড যানজট শুরু হয়। এই যানজট আরও তীব্র হতে শুরু হয় যখন ঈদ ঘনিয়ে আসে। বিশেষ করে মার্কেট সংলগ্ন রাস্তাগুলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগে থাকে। ১০ মিনিটের পথ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও গন্তব্যে পৌঁছানো যাচ্ছে না।
সোমবার (০১ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আসন্ন ঈদুল ফিতরে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, ঈদের পূর্বে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন-ভাতাদি পরিশোধ, সড়ক মহাসড়ক নিরাপদ ও যানজটমুক্ত রাখাসহ প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রমজানে যানজট কিছুটা বাড়ে এটা সত্য। তবে ঈদ ঘনিয়ে আসলে এটা আরও বাড়ে। কারণ ঈদ শপিংয়ের জন্য মানুষ মার্কেটে যান। আবার উন্নয়ন কাজের জন্য কিছু রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ নিরাপত্তা বাহিনী সড়কে রয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে যানজট কীভাবে সহনীয় রাখা যায়, সে বিষয়ে ট্রাফিক বিভাগ কাজ করছে। আশা করি শিগগিরই যানজট কমে যাবে।
রাজধানীতে যানজট অনেক কারণেই হয়, এর মধ্যে একটা হলো ট্রাফিক পুলিশ রাস্তার মাঝখানে দাঁড় করিয়ে গাড়ি চেক করে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখানে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা রয়েছেন, তারা এ বিষয়ে নিশ্চয়ই নজর রাখবেন।
তিনি বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই জানেন এখন ঈদের মার্কেটের জন্যই বিকেলের পর থেকে সারা ঢাকা শহর অচল হয়ে যায়। শুধু এক জায়গায় নয়। আমাদের অভিজ্ঞতায় মনে হয় আর দুই চার দিনের মধ্যেই ঢাকা শহরে যানজট কমে যাবে। তবে যানজট চলে যাবে আমাদের ঘরমুখী মানুষের ঢল যেখানে নামবে সেখানে। শহরের যানজট আর চার পাঁচ দিনের মধ্যেই কমে যাবে।
৯ এপ্রিল ছুটি হয়নি তাহলে ঘরমুখো মানুষের চাপ কীভাবে সামাল দেবেন কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছেন কি না, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঈদের ছুটি চাঁদ দেখার ওপর নির্ধারণ হয়। ২৯ রোজা হলে ঈদ ১০ তারিখে হয়। তাহলে ৯ এপ্রিল ঘরমুখো মানুষের প্রচণ্ড ভিড় হবে। আজকে ক্যাবিনেটে আলোচনা করে ছুটি অপশনাল করা হয়েছে। যারা প্রয়োজন মনে করবেন তারা ৯ তারিখ ছুটি নিতে পারবেন। সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে অপশনাল ছুটি হিসেবে নিতে পারবে। আর ব্যাংক ও অর্থনৈতিক প্রকিষ্ঠানগুলো চালু থাকবে।
ধাপে ধাপে ছুটি দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ শ্রমিক সংগঠনগুলো বসে ছুটির দিকে খেয়াল রেখে তারা এই সিদ্ধান্ত নেবে। যাতে ছুটিটা একসঙ্গে না হয়, ধাপে ধাপে ছুটির ব্যবস্থা করবে।
পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানকে ঘিরে প্রতি বছর আমরা একটা সময় ধরে দেই। হঠাৎ একটা সমস্যা হলে আমাদের পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনী সজাগ রয়েছে। পহেলা বৈশাখর দিন মঙ্গল শোভাযাত্রা হোক বা যাই হোক সেখানে কোনো বাধা নেই। তবে সন্ধ্যার পর সীমিত করে দিতে চেয়েছি, যাতে করে উদ্যানে, রাস্তাঘাটে, উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান না করে একটা কমিউনিটি হল বা আবদ্ধ স্থানে নিয়ে যাবে। যাতে করে সবাই ভালো থাকে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঈদুল ফিতরে দেশজুড়ে আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য মোতায়েন থাকবেন।
মন্ত্রী বলেন, রাজধানীর কূটনৈতিক পাড়াসহ সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে, বড় শহর ও বন্দরগুলোতে পুলিশের টহল থাকবে। রাস্তায় ও মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপন নৌপথে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার বিশেষ ব্যবস্থা এবং লঞ্চ, বাস টার্মিনালে অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় থাকবে।
তিনি আরো বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটির আগে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বোনাস দেওয়ার বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সম্মত হয়েছে। ঈদের আগে শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হবে। সাধারণ জনগণ যেন ঈদ উপলক্ষ্যে কেনাকাটা করতে পারে সেজন্য মার্কেট ও শপিং মলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। র্যাবের নিরাপত্তা টহল বাড়ানো হবে। মার্কেটগুলোতে রাত্রিকালীন নিরাপত্তা থাকবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক 





















