Dhaka শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ঢুকছে ত্রাণবাহী ট্রাক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

গাজায় চলছে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চারদিনের যুদ্ধবিরতি। এরই মধ্যে এই যুদ্ধবিরতি দ্বিতীয় দিনে গড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রথমদিন শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) গাজায় প্রায় ২০০ ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে।

প্যালিস্টিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, একদিনে রাফাক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করা ১৯৬টি ত্রাণবাহী ট্রাক সেখানে পৌঁছেছে।

এক্স বার্তায় সংস্থাটি জানায়, চারটি ট্রাকে চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধ রয়েছে, চার ট্রাকে হাসপাতালের বিছানা বাকি ট্রাকগুলোতে খাবার, পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা রয়েছে।

দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ৩৯ ফিলিস্তিনি নাগরিককে ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

এর আগে চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে ১৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে ছেড়ে দেয় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে এসব জিম্মিকে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রেডক্রসের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ৩৯ ফিলিস্তিনি নাগরিকের মধ্যে ২৪ জন নারী ও ১৫ জন তরুণ রয়েছেন। অধিকৃত পশ্চিম তীরের বেইতুনিয়া চেকপয়েন্ট দিয়ে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় গত দেড় মাসে এই প্রথম একদিনে এত বেশি সংখ্যক সহায়তা পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করল।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাস যোদ্ধাদের অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। পরে ১৬ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলার চালানোর দিন এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে শত শত সামরিক-বেসামরিক মানুষকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে গিয়েছিলেন হামাসের যোদ্ধারা। এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৮ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন।

অন্যদিকে, ইসরায়েলি বিমান ও স্থল বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরীদের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি।

টানা প্রায় দেড় মাসে যুদ্ধ চলার পর নভেম্বরের মাঝামাঝি কাতারের মাধ্যমে ইসরায়েলের সরকারকে একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয় হামাস। সে প্রস্তাবে বলা হয়, ইসরায়েল যদি গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে, রাফাহ ক্রসিংয়ে অপেক্ষারত ত্রাণ, জ্বালানি ও মানবিক সহায়তা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে প্রবেশ করতে দেয় এবং ইসরায়েলি কারাগারগুলো থেকে অন্তত ১৫০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তাহলে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে থেকে ৫০ জনকে ছেড়ে দেবে হামাস।

প্রথমদিকে এই শর্ত আমলে না নিলেও পরে ইসরায়েলের নাগরিক, জিম্মিদের পরিবারের সদস্য ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ২১ নভেম্বর সেই প্রস্তাবে সায় দেয় প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা।

সেই অনুযায়ী শুক্রবার স্থানীয় সময় ৭টা (বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টা) থেকে শুরু হয়েছে যুদ্ধবিরতি। বিরতির প্রথম দিন ২৪ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস; আর ইসরায়েরের ডেমন ও মেডিগো কারাগার থেকে ৩৯ জন ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে ছেড়ে দিয়েছে ইসরায়েল।

আশা করা হচ্ছে, যুদ্ধবিরতির এই চার দিন নিরাপদে এবং নিরবিচ্ছিন্নভাবে গাজা উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহ অব্যাহত থাকবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ঢুকছে ত্রাণবাহী ট্রাক

প্রকাশের সময় : ০৪:১০:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

গাজায় চলছে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চারদিনের যুদ্ধবিরতি। এরই মধ্যে এই যুদ্ধবিরতি দ্বিতীয় দিনে গড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রথমদিন শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) গাজায় প্রায় ২০০ ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে।

প্যালিস্টিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, একদিনে রাফাক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করা ১৯৬টি ত্রাণবাহী ট্রাক সেখানে পৌঁছেছে।

এক্স বার্তায় সংস্থাটি জানায়, চারটি ট্রাকে চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধ রয়েছে, চার ট্রাকে হাসপাতালের বিছানা বাকি ট্রাকগুলোতে খাবার, পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা রয়েছে।

দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ৩৯ ফিলিস্তিনি নাগরিককে ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

এর আগে চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে ১৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে ছেড়ে দেয় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে এসব জিম্মিকে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রেডক্রসের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ৩৯ ফিলিস্তিনি নাগরিকের মধ্যে ২৪ জন নারী ও ১৫ জন তরুণ রয়েছেন। অধিকৃত পশ্চিম তীরের বেইতুনিয়া চেকপয়েন্ট দিয়ে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় গত দেড় মাসে এই প্রথম একদিনে এত বেশি সংখ্যক সহায়তা পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করল।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাস যোদ্ধাদের অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। পরে ১৬ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলার চালানোর দিন এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে শত শত সামরিক-বেসামরিক মানুষকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে গিয়েছিলেন হামাসের যোদ্ধারা। এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৮ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন।

অন্যদিকে, ইসরায়েলি বিমান ও স্থল বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরীদের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি।

টানা প্রায় দেড় মাসে যুদ্ধ চলার পর নভেম্বরের মাঝামাঝি কাতারের মাধ্যমে ইসরায়েলের সরকারকে একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয় হামাস। সে প্রস্তাবে বলা হয়, ইসরায়েল যদি গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে, রাফাহ ক্রসিংয়ে অপেক্ষারত ত্রাণ, জ্বালানি ও মানবিক সহায়তা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে প্রবেশ করতে দেয় এবং ইসরায়েলি কারাগারগুলো থেকে অন্তত ১৫০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তাহলে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে থেকে ৫০ জনকে ছেড়ে দেবে হামাস।

প্রথমদিকে এই শর্ত আমলে না নিলেও পরে ইসরায়েলের নাগরিক, জিম্মিদের পরিবারের সদস্য ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ২১ নভেম্বর সেই প্রস্তাবে সায় দেয় প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা।

সেই অনুযায়ী শুক্রবার স্থানীয় সময় ৭টা (বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টা) থেকে শুরু হয়েছে যুদ্ধবিরতি। বিরতির প্রথম দিন ২৪ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস; আর ইসরায়েরের ডেমন ও মেডিগো কারাগার থেকে ৩৯ জন ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে ছেড়ে দিয়েছে ইসরায়েল।

আশা করা হচ্ছে, যুদ্ধবিরতির এই চার দিন নিরাপদে এবং নিরবিচ্ছিন্নভাবে গাজা উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহ অব্যাহত থাকবে।