Dhaka মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকার কাজ করে ভোট চায়, জোর করে ক্ষমতায় আসতে চায় না : ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায় না বলে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, গায়ের জোরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় নেই বা আসতে চায় না। উন্নয়ন দেখে জনগণ ভোট দেবে। যদি জোর করে ক্ষমতায় আসতে হয়, তাহলে কেন পদ্মা সেতু করলাম? দেশের কেন এত উন্নয়ন করলো সরকার? সরকার কাজ করে ভোট চায়, জোর করে ক্ষমতায় আসতে চায় না।

শনিবার (১৯ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারত কি একটা বার্তা দিয়েছে, এটা তাদের ব্যাপার। সেখানে বিএনপি নেতারা মন্তব্য করেন। অবস্থাটা এমন যে, এরা ভয়ে হাত-পা গুটিয়ে ফেলেছেন। ভারতভীতিতে ঘুম ভেঙে যায় তাদের।

তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব, এ দেশের জনগণ আমাদের ভোট দেবে। আমাদের কাজ দিয়ে, উন্নয়ন দিয়ে আমরা ভোট চাইব। আমরা গায়ের জোরে ক্ষমতায় নেই, গায়ের জোরে ক্ষমতায় আসব না। এই আশ্বাস আমি দিতে চাই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। প্রধানমন্ত্রী রুটিং ওয়ার্ক করবেন। দুনিয়ার অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, আমরা ঠিক সেইভাবে নির্বাচন করব।

তিনি বলেন, মিডিয়ায় দেখলাম, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারত একটা বার্তা পাঠিয়েছে। যে অভিন্ন যাত্রায় বাংলাদেশকে স্ট্যাটাজিক কারণে আমরা হারাতে পারি না। এটা ভারত-আমেরিকার মিত্রতা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ভারত এসে আমাদেরকে গদিতে বসিয়েছিল? ২০০১ সালে জোর করে আমাদের হারানো হয়েছে। তখন কি ভারত এসে এখানে ইন্টারফেয়ার করেছে? ভারত কোনো নির্বাচনে এই পর্যন্ত আমাদেরকে একটা কথাও বলে নাই। বাংলাদেশের নির্বাচন গণতন্ত্রের আদর্শে হবে।

তিনি আরও বলেন, আপনারাতো (বিএনপি) ভারতের হাই কমিশনারের বাসায় গিয়ে ডিনার খেয়েছেন। আমরা টেলিভিশন নিয়ে যাই না। বাইরে থেকেই বাংলাদেশের প্রায় সব টেলিভিশন খোঁজখবর দিয়ে দিয়েছে। ভারতের সঙ্গে মিত্রতা করতেছি। মিত্রতা হলো না? আমরাতো কোনো আওয়াজও দেইনি। তিনজনকে দাওয়াত দিয়েছে, তিনজনই গেছি, কথা-বার্তা বলেছি। নির্বাচন নিয়ে কথা হয়নি। কীভাবে নির্বাচন করব এটা আমাদের ব্যাপার। হয়তো কথার প্রসঙ্গে কথা এসেছে।

আওয়ামী লীগ কোনো পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করে না দাবি করে তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ ও উন্নয়ন সমাবেশ করেছে। বিএনপির পাল্টাপাল্টি কিছু করতে যায়নি। জনগণের নিরাপত্তার জন্য, শান্তির জন্য রাজপথে দাঁড়িয়েছি আমরা।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেন, নিজেদের দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মাথাব্যথা নেই। কিন্তু বাংলাদেশে পান থেকে চুন খসলেই নানাভাবে সমালোচনা করে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতিরও সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে- বিএনপি সেজন্য অপেক্ষায় আছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আটলান্টিকের ওপারের দিকে তাকিয়ে থাকায় বিএনপি নেতাদের দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসছে। তাদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে দুশ্চিন্তা করতে করতে। তাদের চিন্তা, কেন ভিসানীতি বা নিষেধাজ্ঞা আসে না, সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয় না কেন, এসব বিষয় নিয়ে চিন্তায় বিএনপির ঘুম হারাম।

সেতুমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপির যতটা উদ্বেগ তার চেয়ে বেশি নোংরা রাজনীতি করছে। খালেদা জিয়ার মামলা নিয়েও বিএনপির আইনজীবীরা দীর্ঘসূত্রিতা করেছে। খালেদা জিয়াকে মরার আগেই কয়েকবার মেরে ফেলছেন মির্জা ফখরুলরা।

আইনি কাঠামোর বাইরে সরকারের কিছু করার সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময় ও নির্বাচনের সময় পরিবেশ রাখতে চায় আওয়ামী লীগ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বিএমএ এর সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএমআরসির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সাবেক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডব্লিউ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, মহাসচিব ডা. কামরুল হাসান মিলন প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মাইলস্টোনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ৩

সরকার কাজ করে ভোট চায়, জোর করে ক্ষমতায় আসতে চায় না : ওবায়দুল কাদের

প্রকাশের সময় : ০৭:৫৮:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায় না বলে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, গায়ের জোরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় নেই বা আসতে চায় না। উন্নয়ন দেখে জনগণ ভোট দেবে। যদি জোর করে ক্ষমতায় আসতে হয়, তাহলে কেন পদ্মা সেতু করলাম? দেশের কেন এত উন্নয়ন করলো সরকার? সরকার কাজ করে ভোট চায়, জোর করে ক্ষমতায় আসতে চায় না।

শনিবার (১৯ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারত কি একটা বার্তা দিয়েছে, এটা তাদের ব্যাপার। সেখানে বিএনপি নেতারা মন্তব্য করেন। অবস্থাটা এমন যে, এরা ভয়ে হাত-পা গুটিয়ে ফেলেছেন। ভারতভীতিতে ঘুম ভেঙে যায় তাদের।

তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব, এ দেশের জনগণ আমাদের ভোট দেবে। আমাদের কাজ দিয়ে, উন্নয়ন দিয়ে আমরা ভোট চাইব। আমরা গায়ের জোরে ক্ষমতায় নেই, গায়ের জোরে ক্ষমতায় আসব না। এই আশ্বাস আমি দিতে চাই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। প্রধানমন্ত্রী রুটিং ওয়ার্ক করবেন। দুনিয়ার অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, আমরা ঠিক সেইভাবে নির্বাচন করব।

তিনি বলেন, মিডিয়ায় দেখলাম, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারত একটা বার্তা পাঠিয়েছে। যে অভিন্ন যাত্রায় বাংলাদেশকে স্ট্যাটাজিক কারণে আমরা হারাতে পারি না। এটা ভারত-আমেরিকার মিত্রতা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ভারত এসে আমাদেরকে গদিতে বসিয়েছিল? ২০০১ সালে জোর করে আমাদের হারানো হয়েছে। তখন কি ভারত এসে এখানে ইন্টারফেয়ার করেছে? ভারত কোনো নির্বাচনে এই পর্যন্ত আমাদেরকে একটা কথাও বলে নাই। বাংলাদেশের নির্বাচন গণতন্ত্রের আদর্শে হবে।

তিনি আরও বলেন, আপনারাতো (বিএনপি) ভারতের হাই কমিশনারের বাসায় গিয়ে ডিনার খেয়েছেন। আমরা টেলিভিশন নিয়ে যাই না। বাইরে থেকেই বাংলাদেশের প্রায় সব টেলিভিশন খোঁজখবর দিয়ে দিয়েছে। ভারতের সঙ্গে মিত্রতা করতেছি। মিত্রতা হলো না? আমরাতো কোনো আওয়াজও দেইনি। তিনজনকে দাওয়াত দিয়েছে, তিনজনই গেছি, কথা-বার্তা বলেছি। নির্বাচন নিয়ে কথা হয়নি। কীভাবে নির্বাচন করব এটা আমাদের ব্যাপার। হয়তো কথার প্রসঙ্গে কথা এসেছে।

আওয়ামী লীগ কোনো পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করে না দাবি করে তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ ও উন্নয়ন সমাবেশ করেছে। বিএনপির পাল্টাপাল্টি কিছু করতে যায়নি। জনগণের নিরাপত্তার জন্য, শান্তির জন্য রাজপথে দাঁড়িয়েছি আমরা।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেন, নিজেদের দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মাথাব্যথা নেই। কিন্তু বাংলাদেশে পান থেকে চুন খসলেই নানাভাবে সমালোচনা করে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতিরও সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে- বিএনপি সেজন্য অপেক্ষায় আছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আটলান্টিকের ওপারের দিকে তাকিয়ে থাকায় বিএনপি নেতাদের দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসছে। তাদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে দুশ্চিন্তা করতে করতে। তাদের চিন্তা, কেন ভিসানীতি বা নিষেধাজ্ঞা আসে না, সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয় না কেন, এসব বিষয় নিয়ে চিন্তায় বিএনপির ঘুম হারাম।

সেতুমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপির যতটা উদ্বেগ তার চেয়ে বেশি নোংরা রাজনীতি করছে। খালেদা জিয়ার মামলা নিয়েও বিএনপির আইনজীবীরা দীর্ঘসূত্রিতা করেছে। খালেদা জিয়াকে মরার আগেই কয়েকবার মেরে ফেলছেন মির্জা ফখরুলরা।

আইনি কাঠামোর বাইরে সরকারের কিছু করার সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময় ও নির্বাচনের সময় পরিবেশ রাখতে চায় আওয়ামী লীগ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বিএমএ এর সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএমআরসির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সাবেক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডব্লিউ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, মহাসচিব ডা. কামরুল হাসান মিলন প্রমুখ।