নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা চিড়িয়াখানায় হায়েনার কামড়ে হাতের কবজি ছিন্ন হয়ে যাওয়া শিশু সাঈদকে দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে (জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান) গিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
সোমবার (১২ জুন) বিকেলে আগারগাঁওয়ে অবস্থিত পঙ্গু হাসপাতালে যান তারা।
হাসপাতালের মডেল ‘বি’ ওয়ার্ডে তারা চিকিৎসাধীন শিশু সাঈদকে দেখেন। এসময় শিশুটির মা-বাবাকে সমবেদনা জানিয়ে আর্থিক সহায়তা দেন। পাশাপাশি ডাক্তারদের সঙ্গে আলাপ করেন।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শিশু সাঈদ হাসান ও তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে এসেছি। ঢাকা চিড়িয়াখানায় যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও পীড়াদায়ক। আমি খবরের কাগজে দেখেছি যে শিশুটির বাবা আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি।
একইসঙ্গে সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে যাদের গাফিলতি পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এসেছে। পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য শুধুমাত্র কর্তৃপক্ষ সচেতন থাকলে হয় না, মা-বাবারও অবশ্যই সচেতন থাকা প্রয়োজন। তবে এখানে কর্তৃপক্ষের যদি গাফিলতি থাকে, অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসময় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালের চিকিৎসা সম্পর্কেও কথা বলেন ড. হাছান। তিনি বলেন, পঙ্গু হাসপাতাল বিশেষায়িত চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ৪০০ বেডের পঙ্গু হাসপাতাল চালু হয়। পরবর্তী সময়ে যারা সরকারে এসেছিল তারা মাত্র ১০০ বেড যুক্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালে আরেকটি নতুন প্রকল্প নিয়ে আরও ৫০০ বেড যুক্ত করে এটিকে ১ হাজার বেডে উন্নীত করেছেন। আজকে এই পঙ্গু হাসপাতাল পুরো দেশে দুর্ঘটনাসহ নানা কারণে অঙ্গহানিজনিত চিকিৎসা সেবায় সবার জন্য একটি ভরসাস্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, পঙ্গু হাসপাতালের ডাক্তাররাও ভালো কাজ করছেন। তারা শিশু সাঈদের বিশেষ যত্ন নিচ্ছেন। ডাক্তাররা বলেছেন, তার মাত্র ২ বছর ৩ মাস বয়স। বড় হলে তার কৃত্রিম হাত লাগানো সম্ভব হবে। এখন লাগালে তা ঠিক হবে না।
এসময় হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল গণি মোল্লা, ডা. জাহাঙ্গীর ও ডা. শবনম শায়লাসহ অন্যান্য চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকালে শিশু সাঈদকে নিয়ে তার বাবা সুমন ও মা শিউলি জয়দেবপুর থেকে মিরপুর চিড়িয়াখানায় যান। শিশু সাঈদ হায়েনার খাঁচার জালের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দিলে মুহূর্তের মধ্যে হায়েনার কামড়ে তার ডান হাতটি কনুই থেকে ছিন্ন হয়ে যায়।