Dhaka সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শাহবাগে ‘সার্টিফিকেট’ ছিঁড়লেন চাকরিপ্রত্যাশীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর, আবেদন ফি ২০০ টাকায় নামিয়ে আনাসহ তিন দফা দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা প্রতিবাদ হিসেবে প্রতীকী সনদ (সার্টিফিকেট) ছিঁড়েছেন।

শনিবার (১০ জুন) রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষার্থী সমাবেশে ৩০ ঊর্ধ্ব সার্টিফিকেট ছেঁড়ার আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যোগ দেন।

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে ফেসবুকে একটি গ্রুপে সমাবেশের ডাক দেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীরা এতে যোগ দেন। সমাবেশে দাবিসমূহ বাস্তবায়নের জন্য শাহবাগ মোড়ে শিক্ষার্থী সমাবেশ ও প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে ৩০ ঊর্ধ্ব সার্টিফিকেট ছেঁড়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে।

আয়োজকরা জানান, আগেও নানা সময়ে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করাসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে মাঠে ছিলেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। এসব আন্দোলন, দাবি ও আশ্বাস পুলিশি বাধাসহ নানা কারণে ভেস্তে গেছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে এমন ঘটনা ঘটে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়াও এসব আন্দোলনে হামলার অভিযোগ রয়েছে সরকার দল সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ও দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে।

তারা বলেন, বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮’র পাতা ৩২ এবং শিক্ষা দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও ২০১১ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসরের বয়স দুই বছর বৃদ্ধি করে ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হয়নি এবং চাকরি শেষে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ স্বাভাবিক চাকরি প্রক্রিয়া ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় নবীনদের জন্য। ফলে দেশে বাড়তে থাকে শিক্ষিত-উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, করোনা মহামারির সময়ে প্রায় সব ধরনের চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বন্ধ ছিল। পৃথিবীর অনেক দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর বা তার বেশি থাকা সত্ত্বেও করোনা মহামারির কারণে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আরও ২-৩ বছর পর্যন্ত বাড়িয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে এখন পর্যন্ত ৭১ বার সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি উত্থাপন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির সুপারিশ করলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।

চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩৫ বছর করতে হবে। একইসঙ্গে সরকারি চাকরিতে আবেদনের ফি কমিয়ে সর্বোচ্চ প্রথম শ্রেণিতে ২০০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১৫০ টাকা, তৃতীয় শ্রেণিতে ১০০ টাকা, চতুর্থ শ্রেণিতে ৫০ টাকা করার দাবিও জানান তারা। এছাড়াও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে বঙ্গবন্ধুর নামে বঙ্গবন্ধু ল’ কমপ্লেক্স (বঙ্গবন্ধু চেয়ার এবং একটি ম্যুরাল) স্থাপন করার দাবি জানান তারা।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ‘চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদের’ কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক শরিফুল হাসান শুভ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

শাহবাগে ‘সার্টিফিকেট’ ছিঁড়লেন চাকরিপ্রত্যাশীরা

প্রকাশের সময় : ০৭:৫১:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর, আবেদন ফি ২০০ টাকায় নামিয়ে আনাসহ তিন দফা দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা প্রতিবাদ হিসেবে প্রতীকী সনদ (সার্টিফিকেট) ছিঁড়েছেন।

শনিবার (১০ জুন) রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষার্থী সমাবেশে ৩০ ঊর্ধ্ব সার্টিফিকেট ছেঁড়ার আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যোগ দেন।

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে ফেসবুকে একটি গ্রুপে সমাবেশের ডাক দেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীরা এতে যোগ দেন। সমাবেশে দাবিসমূহ বাস্তবায়নের জন্য শাহবাগ মোড়ে শিক্ষার্থী সমাবেশ ও প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে ৩০ ঊর্ধ্ব সার্টিফিকেট ছেঁড়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে।

আয়োজকরা জানান, আগেও নানা সময়ে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করাসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে মাঠে ছিলেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। এসব আন্দোলন, দাবি ও আশ্বাস পুলিশি বাধাসহ নানা কারণে ভেস্তে গেছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে এমন ঘটনা ঘটে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়াও এসব আন্দোলনে হামলার অভিযোগ রয়েছে সরকার দল সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ও দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে।

তারা বলেন, বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮’র পাতা ৩২ এবং শিক্ষা দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও ২০১১ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসরের বয়স দুই বছর বৃদ্ধি করে ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হয়নি এবং চাকরি শেষে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ স্বাভাবিক চাকরি প্রক্রিয়া ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় নবীনদের জন্য। ফলে দেশে বাড়তে থাকে শিক্ষিত-উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, করোনা মহামারির সময়ে প্রায় সব ধরনের চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বন্ধ ছিল। পৃথিবীর অনেক দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর বা তার বেশি থাকা সত্ত্বেও করোনা মহামারির কারণে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আরও ২-৩ বছর পর্যন্ত বাড়িয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে এখন পর্যন্ত ৭১ বার সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি উত্থাপন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির সুপারিশ করলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।

চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩৫ বছর করতে হবে। একইসঙ্গে সরকারি চাকরিতে আবেদনের ফি কমিয়ে সর্বোচ্চ প্রথম শ্রেণিতে ২০০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১৫০ টাকা, তৃতীয় শ্রেণিতে ১০০ টাকা, চতুর্থ শ্রেণিতে ৫০ টাকা করার দাবিও জানান তারা। এছাড়াও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে বঙ্গবন্ধুর নামে বঙ্গবন্ধু ল’ কমপ্লেক্স (বঙ্গবন্ধু চেয়ার এবং একটি ম্যুরাল) স্থাপন করার দাবি জানান তারা।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ‘চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদের’ কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক শরিফুল হাসান শুভ।