নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, শ্রমিকদের বঞ্চিত করে উন্নয়ন সম্ভব নয়। শ্রমিকরা উন্নয়নের প্রাণ। পোশাক শিল্পের পাশাপাশি ঔষধ শিল্প, নির্মাণ শিল্প চা উৎপাদন ইত্যাদি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার মাধ্যমে শ্রমিকরা জাতীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে। শ্রমিক-মালিক সম্প্রীতি স্মার্ট বাংলাদেশের ভীত রচনা করতে পারে।
সোমবার (১ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘শ্রমিক মালিক ঐক্য গড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ‘মহান মে দিবস ২০২৩’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় স্পিকার বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের মাঝে আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল, মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়া, আদিবা আনজুম মিতা, গ্নোরিয়া ঝর্ণা সরকার ও বাসন্তী চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
স্পিকার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন শ্রমজীবী মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু। ১৯৭২ সালে তিনি শ্রমনীতি প্রণয়ন করেন। ১৯৭২ সালে জাতির পিতার নেতৃত্বে আইএলও’র সদস্যপদ লাভ করে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু সংবিধানে কৃষক-শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত ও সব ধরনের শোষণ হতে মুক্তির অঙ্গীকারের পাশাপাশি পরিত্যক্ত কলকার খানা জাতীয়করণ করে অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছিলেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও তাদের অধিকার সংরক্ষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। আইসিটি খাতে প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়িয়ে শ্রমিকদের সুদক্ষ করতে পারলে তারা স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে অধিকতর ভূমিকা রাখতে পারবে। প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় সরকার ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করেছে। শ্রমজীবী মানুষের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার শ্রম সংশোধন আইন ২০১৮ সহ সকল প্রকার আইন প্রয়োজনীয় সংশোধন ও প্রণয়ন করেছে। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে। বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে মালিক-শ্রমিক সম্প্রীতি বজায় রাখার পথ সুগম করেছে সরকার। শ্রমিকদের জরুরি চিকিৎসা ও দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ স্কিম চালু রয়েছে। ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি নারী শ্রমিকদের জন্য বহুতল শ্রমজীবী মহিলা হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছে।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠার কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিশ্বব্যাপী ভূয়সী প্রশংসা পাচ্ছেন। এই অদম্য অগ্রযাত্রায় শ্রমিকদের অবদান অনস্বীকার্য। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও অন্যান্য কর্মসূচি বাস্তবায়নে মেহনতি মানুষের ভূমিকা ব্যাপক। তাদের সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি। তাদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে হবে।’ বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকার জন্য সরকারের পাশাপাশি শ্রমিক-মালিকদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় উৎপাদন বৃদ্ধি নিশ্চিতকরণে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান স্পিকার।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহী স্বাগত বক্তব্য রাখেন। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী এনডিসি, আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর তুমো পৌতিয়াইনেন, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি আরদাশীর কবির, জাতীয় শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান অনুষ্ঠানে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গনমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।