দেশে হঠাৎ বেড়ে গেছে করোনায় মৃত্যু। নতুন করে মৃত্যু ও সংক্রমণ বাড়ায় জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে সামনে সংক্রমণ পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। এ অবস্থায় এখন থেকে আরো কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত এক সপ্তাহে করোনা পরিস্থিতির হঠাৎ করে অবনতি হয়েছে। একদিনের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। শীতে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে বিশেষজ্ঞদের এমন আশঙ্কা ছিল আগে থেকেই। জেঁকে শীত পড়ার আগেই সংক্রমণ বাড়ার চিত্র দেখা যাচ্ছে কয়েকদিন থেকে। যা গত ৫৭ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ।
করোনায় এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬২৫৪ জনে। নতুন করে গত একদিনে শনাক্ত হয়েছেন আরো ২২১২ জন করোনা রোগী। যা গত ৭৬ দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৬৮৪ জনে।
এর আগে গত ২১শে সেপ্টেম্বর দেশে করোনাভাইরাসে একদিনে ৪০ জনের মৃত্যু হয়। এরপর মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক কমতে থাকে। এদিকে গত ২রা সেপ্টেম্বর দেশে একদিনে ২ হাজার ৫৮২ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এরপর প্রতিদিন ২ হাজারের নিচে শনাক্ত হয় করোনা আক্রান্ত রোগী।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা বিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৭টি ল্যাবরেটরিতে ১৬ হাজার ৬০২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ১৫ হাজার ৯৯০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৯৫২টি।
আরও পড়ুন : অন্য রোগ প্রতিরোধেও কাজে আসবে করোনার ভ্যাকসিন
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮০ দশমিক ৮১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৩৯ জনের মধ্যে ৩০ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী রয়েছেন। এ পর্যন্ত পুরুষ মারা গেছেন ৪ হাজার ৮১৩ জন এবং নারী ১ হাজার ৪৪১ জন।
বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, একদিনে মৃত্যুবরণকারীদের ৬০ বছরের বেশি ২৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১০ জন এবং ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১ জন, ২১ থেকে ৩০ এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন করে রয়েছেন।
ঢাকা বিভাগে ২২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ জন, রংপুর বিভাগে ৫ জন, রাজশাহীতে ৩ জন, বরিশালে ২ জন, সিলেটে ২ জন রয়েছেন। তাদের ৩৯ জনই হাসপাতালে মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৭২৯ জনকে, কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১ হাজার ৩৭ জন।
এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৬৭ হাজার ২৭১ জন, ছাড়া পেয়েছেন ৫ লাখ ২৮ হাজার ৩৩৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৮ হজার ৯৩৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ১৮১ জনকে, ছাড়া পেয়েছেন ১৫৭ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৮ হাজার ৭৪৫ জন, ছাড়া পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৫৫১ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ১৯৪ জন।