স্পোর্টস ডেস্ক :
অল্প রানেই অলআউট হয়ে গেল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। দলটির কোনো ব্যাটারই হাল ধরতে পারলেন না দলের। একশর নিচের ওই লক্ষ্য তাড়া করতে পাওয়ার প্লেটাই যথেষ্ট হলো আবাহনীর জন্য। উইকেটও হারাতে হয়নি তাদের।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ডিপিএলের ম্যাচে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে আবাহনী। শুরুতে ব্যাট করে স্রেফ ৮৮ রানে অলআউট হয়ে যায় শেখ জামাল। ওই রান ১০ ওভার ২ বল খেলেই তাড়া করে আবাহনী। ১১ ম্যাচের সবগুলোতে জিতে পয়েন্ট টেবিলে সবার ওপরে তারা। ৮ জয় নিয়ে তাদের পরের অবস্থানে শেখ জামাল।
৮৯ রান করলে জয় ধরা দিবে এই সহজ সমীকরণকে সামনে রেখে আবাহনীর দুই ওপেনার নাইম শেখ ও এনামুল হক বিজয় শেখ জামাল বোলারদের নিয়ে ইচ্ছেমতো খেললেন। তাদেরকে সাধারণ মানে নামিয়ে মাত্র ১০.২ ওভারে শেখ জামালের করা ৮৮ রানকে টপকে ১০ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন।
বিজয় তাও রয়েসয়ে ২২ বলে ৩৭ রান করলেন। আর নাইম শেখ করলেন ৪০ বলে হার না মানা ৫৩ রান।
যে ম্যাচটিতে হতে পারতো পয়েন্ট টেবিলের গুরুত্বপূর্ণ লড়াই সে ম্যাচটিই একপেশে হয়ে গেল। আবাহনী শেষ পর্যন্ত একমাত্র দল হিসেবে প্রথম লেগে ১১টি ম্যাচের সবকটিতে জিতে অনেক দূর এগিয়ে গেল।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা এতটাও মন্দ হয়নি শেখ জামালের। ৫০ রান তুলতে তারা হারিয়েছিল তিন উইকেট। পরের ৩৮ রানে হারায় সাত উইকেট। আবাহনীর তিন পেসার শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিব মিলে নেন সাত উইকেট।
শেখ জামালের দুই ওপেনারই দুই অঙ্ক ছুঁয়েছিলেন ব্যক্তিগত সংগ্রহে। ১০ বলে ১৬ রান করা সাইফ হাসান ক্যাচ দেন শরিফুল ইসলামের বলে। পরে ৩২ বলে ২৩ রান করে তানজিম হাসানের বলে ক্যাচ দেন সৈকত আলী।
এর বাইরে আর দুজন ব্যাটার দুই অঙ্কে যেতে পারেন। ২১ বলে ১৪ রান করে তাইবুর রহমান শিকার হন মোসাদ্দেক হোসেনের বলে। ২৭ বলে ১৭ রান আসে ইয়াসির আলী রাব্বির ব্যাটে; শরিফুলের বলে এনামুল হক বিজয়ের দুর্দান্ত ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
আবাহনীর হয়ে তোপ দাগেন শরিফুল ইসলাম। ৭ ওভার বল করে ১ মেডেনসহ ৩৫ রান দিয়ে চার উইকেট নেন তিনি। ৫ ওভারে ১৬ রান দিয়ে দুই উইকেট পান তাসকিন আহমেদ। ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন তানজিম। এছাড়া স্পিনার তানভীর ইসলাম দুটি ও মোসাদ্দেক হোসেন পান এক উইকেট।
প্রথম লেগ শেষে আবাহনীর পয়েন্ট এগারো ম্যাচে শতভাগ জয় ২২। অন্যদিকে যে দলটি থাকতে পারতো দ্বিতীয়স্থানে সে দলটি ৩ পরাজয়ে প্রথম লেগ শেষ করল ১৬ পয়েন্ট নিয়ে। আবাহনীর থেকে ছয় পয়েন্ট পেছনে বর্তমান অবস্থানে শেখ জামালকে ছুঁয়ে ফেলতে পারে পয়েন্ট টেবিলের অন্য দুটি দল- মোহামেডান ও শাইনপুকুর।
এ দুটি দলেরই ১০ ম্যাচে ৭টি করে সমান ১৪ পয়েন্ট। আগামীকাল যদি মোহামেডান ব্রাদার্সকে হারায় এবং শাইনপুকুরও শেষ ম্যাচে জয়ী হয় তাহলে শেখ জামাল, শাইনপুকুর ও মোহামেডানের পয়েন্ট হবে সমান ১৬। তারপর নেট রানরেটে নির্ধারিত হবে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান।
এখানে একটি কথা না বললেই নয়, আবাহনী কিন্তু প্রায় সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে। প্রথম লীগের পয়েন্ট যেহেতু সুপার লিগে যোগ হয় তাই আবাহনী ছয় পয়েন্ট এগিয়ে থাকবে। দ্বিতীয়স্থানে যেই থাকুক না কেন, শেখ জামাল, শাইনপুকুর বা মোহামেডান, সেই দলের থেকে ৬ পয়েন্ট এগিয়ে থেকে সুপারলিগ শুরু করবে আবাহনী।
অর্থাৎ আবাহনী যদি টানা ৩ ম্যাচ হারে তাহলে কোনো দলের পক্ষে আবাহনীকে ছুঁয়ে ফেলা সম্ভব; কিন্তু টপকে যাওয়া সম্ভব না।
এত সমীকরণ নিয়ে বসে আসলে কোনো লাভ নেই। সহজ কথা হচ্ছে, সুপার লিগে দুই ম্যাচ জিতলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে আবাহনী। অর্থাৎ প্রথম লেগ শেষেই আবাহনী পাচ্ছে শিরোপার গন্ধ।
হয়তো গতবারের চ্যাম্পিয়ন ধানমণ্ডির ক্লাব ভবনেই যাচ্ছে এবারের শিরোপা।