আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
সবচেয়ে মারাত্মক ধরনের ত্বকের ক্যানসার ‘মেলানোমা’র বিরুদ্ধে বিশ্বের প্রথম ‘ব্যক্তিকেন্দ্রিক’ এমআরএনএ টিকার গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করা হয়েছে যুক্তরাজ্যে। ত্বকের ক্যানসারকে স্থায়ীভাবে নিরাময়ে এমআরএনএ-৪১৫৭ (ভি৯৪০) নামের এই টিকার ‘গেম চেঞ্জিং’ সম্ভাবনার প্রশংসা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
সারা বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় এক লাখ ৩২ হাজার মানুষ মেলানোমায় আক্রান্ত হন। ত্বকের ক্যানসারের মধ্যে এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী। বর্তমানে এই ক্যানসারের মূল চিকিৎসা অস্ত্রোপচার। এছাড়াও কখনও কখনও রেডিওথেরাপি, ওষুধ এবং কেমোথেরাপির মাধ্যমে মেলানোমার চিকিৎসা করা হয়।
এখন চিকিৎসকরা নতুন যে টিকাটি পরীক্ষা করছেন সেটা প্রত্যেক রোগীর জন্য তার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ক্যানসারের অবস্থা অনুযায়ী তৈরি করা হবে বলে বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে দ্য গার্ডিয়ান। এই টিকা আক্রান্তের শরীরের ক্যান্সার কোষ খুঁজে বের করে সেগুলো ধ্বংস করবে এবং ক্যান্সার পুনরায় ফিরে আসা রোধ করবে।
দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় দেখা গেছে এই টিকা মেলানোমায় আক্রান্ত রোগীদের শরীরে পুনরায় ক্যান্সার ফিরে আসার ঝুঁকি নাটকীয়ভাবে হ্রাস করে। এখন তৃতীয় এবং চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষা চলছে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন হসপিটালস এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট (ইউসিএলএইচ) এর নেতৃত্বে এই পরীক্ষা চলছে।
টিকার চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষায় জাতীয় সমন্বয়কারী কর্মকর্তা ডা. হেদার শ বলেন, এই টিকার মেলানোমা আক্রান্তদের সুস্থ করে তোলার সম্ভাব্যতা রয়েছে। এবং ফুসফুস, মূত্রথলি এবং কিডনির ক্যান্সারের চিকিৎসায় এই টিকা কার্যকর কিনা সেটাও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, লম্বা সময় পর সত্যিই খুবই আশান্বিত হওয়ার মত কিছু একটা আমরা দেখতে পেয়েছি।
এই টিকাটি একটি স্বতন্ত্র নিওঅ্যান্টিজেন থেরাপি। টিকাটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে এটা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সক্রিয় করে তোলে যাতে সেটি রোগীর শরীরের বিশেষ ধরণের ক্যান্সার ও টিউমারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।
বিশ্বজুড়ে প্রায় ১১শ মানুষের উপর চূড়ান্ত ধাপের এই পরীক্ষা চালানোর লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছেন বিজ্ঞানীরা। প্রথম যাদের উপর পরীক্ষা চালানো হচ্ছে তাদের একজন ৫২ বছরের স্টিভ ইয়াং।
তিনি বলেন, আমি সত্যি, সত্যিই খুবই আনন্দিত। এই ক্যান্সারকে রুখে দিতে এটাই আমার সেরা সুযোগ।