আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
রাশিয়ার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির সন্দেহে জার্মানির পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। নাশকতা ঘটাতে ওই দুই জার্মান-রুশ নাগরিক প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
জার্মানির ফেডারেল প্রসিকিউটরস অফিস বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এসব তথ্য দিয়েছে।
ইউক্রেইনে জার্মানির সামরিক সহায়তা বানচাল করতে এই দুই নাগরিক মার্কিন বাহিনী পরিচালিত সামরিক স্থাপনাসহ অন্যান্য সামরিক স্থাপনায় এই নাশকতার পরিকল্পনা করেছিলেন।
ডিটার এস. ও আলেক্সান্ডার জে. নামের ওই দুই ব্যক্তি সম্ভাব্য হামলার স্থান নির্দিষ্ট করছিলেন, যার মধ্যে জার্মানিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিও রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এস. নামের ব্যক্তিটি ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে রাশিয়ার এক গোয়েন্দা এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। জার্মানি ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়ায় এমন হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল।
জার্মানির সামরিক ও শিল্প এলাকায় হামলা চালাতে তাঁর নিজের প্রস্তুত থাকার কথা এস. রুশ ওই গোয়েন্দা এজেন্টকে জানিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নিউজ ম্যাগাজিন ডেয়ার স্পিগেল বলেছে, সম্ভাব্য হামলা স্থানের মধ্যে বাভারিয়া রাজ্যে অবস্থিত গ্রাফেনভ্যোর সেনাঘাঁটিও ছিল, যেখানে ইউক্রেনের সেনারা যুক্তরাষ্ট্রের আব্রামস ট্যাংক ব্যবহারের প্রশিক্ষণ নেন।
হামলার নিশানার ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করেছিলেন ডিটার এস.। তিনি ২০১৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলের স্বঘোষিত রুশপন্থি ‘দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’ বা ডিপিআর সংগঠনের সশস্ত্র ইউনিটের সদস্য ছিলেন বলেও অভিযোগ আছে।
দ্বিতীয় সন্দেহভাজন আলেক্সান্ডার জের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গতমাস থেকেই ডিটার এস. কে যেসব জায়গায় হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সেই জায়গাগুলো চিহ্নিত করতে সাহায্য করেছিলেন। বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে আলেক্সান্ডার জে কে।
নিউজ ম্যাগাজিন ডেয়ার স্পিগেল বলেছে, সম্ভাব্য হামলা স্থানের মধ্যে ছিল বাভারিয়া রাজ্যে অবস্থিত গ্রাফেনভ্যোর সেনাঘাঁটি; যেখানে ইউক্রেইনের সেনারা যুক্তরাষ্ট্রের আব্রামস ট্যাঙ্ক ব্যবহারের প্রশিক্ষণ নেন।
জার্মান কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে জার্মানি কিইভের সবচেয়ে বড় সামরিক সাহায্য সরবরাহকারী দেশ হয়ে উঠেছে। ফলে দেশটি রাশিয়ার গুপ্তচরগিরির প্রধান নিশানা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্য বোমা হামলা ঠেকিয়েছে। যে হামলার উদ্দেশ্য ছিল ইউক্রেইনে আমাদের সামরিক সহায়তা দেওয়ার পদক্ষেপ বানচাল করা।
বিবিসি জানায়, দুইজন আটক হওয়ার পর জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বার্লিনে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। রাশিয়ার এই মারাত্মক গুপ্তচরবৃত্তিক তৎপরতার নিন্দা জানিয়েছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।