Dhaka শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মোহামেডানকে গুড়িয়ে শিরোপা জিতল বসুন্ধরা

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৮:২০:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৭৭ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

মূল মাঠের সীমানাজুড়ে থাকা বিলবোর্ডের বাইরেই বড় বড় ঘাস। থ্রো ইন করতে আসতে হয় সেই ঘাস পেরিয়ে। মাঠ অপ্রস্তুত থাকায় খেলা শুরু হতেও দেরি হলো মিনিট দশেক। তবে বল মাঠে গড়াতেই জমে উঠল লড়াই। ১৩ মিনিটের মধ্যে মিলল দুটি পেনাল্টির দেখা। বসুন্ধরা কিংসের সোহেল রানা দেখলেন দ্বিতীয় হলুদ কার্ড। তারপরও মোহামেডানকে হারিয়ে চ্যালেঞ্জ কাপের শিরোপা ধরে রাখল বসুন্ধরা কিংস।

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লার ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ৪-১ গোলে জিতেছে কিংস। দোরিয়েলতন গোমেস নাসিমেন্তো দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর মোহামেডানকে সমতায় ফেরান মোজাফ্ফর মোজাফ্ফরভ। এরপর রাফায়েল আগুস্তো ও ইমানুয়েল সানডের লক্ষ্যভেদের পর দোরিয়েলতনের দ্বিতীয় গোলে বড় জয় নিশ্চিত হয় কিংসের।

গত বছর অনুষ্ঠিত প্রথম আসরেও মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। সেবারও শিরোপা জিতেছিল কিংস। এবারও সেই সুখস্মৃতির পুনরাবৃত্তি করল তারা। কিংসের কোচ হিসেবে ট্রফি দিয়ে যাত্রা শুরু হলো আর্জেন্টাইন মারিও গোমেসের।

এমন সব আবহে শুরু ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে বল দখলের লড়াইয়ে বক্সের ঠিক ওপরে আর্নেস্ট বোয়াটেংকে ফাউল করে বসেন কাজী তারিক রায়হান। মোজাফ্ফরভের ফ্রি কিক রক্ষণ দেয়ালে প্রতিহত হয়।

চার মিনিট পর সোহেল রানার থ্রু পাস ধরতে বক্সে ঢুকে পড়া দোরিয়েলতনকে বক্সের ভেতরে পেছন ফাউল করেন মেহেদী হাসান মিঠু। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সুজন হোসেনকে বিপরীত দিকে ছিটকে দিয়ে কিংসকে এগিয়ে নেন দোরিয়েলতন।

একটু পর মিঠুর লম্বা থ্রোয়ে বক্সের জটলার ভেতর থেকে পা চালালেও বলের নাগাল পাননি স্যামুয়েল বোয়াটেং। বলের সাথে সংযোগ ঘটাতে পারলে সমতায় ফিরতে পারত মোহামেডান।

সাদাকালো জার্সিধারীদের অপেক্ষা ফুরোয় ত্রয়োদশ মিনিটে। সফল স্পট কিকে সমতার স্বস্তি এনে দেন মোজাফ্ফরভ। মিঠুর থ্রো ইনে বক্সে তারিক প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়কে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় মোহামেডান।

৩৫তম মিনিটে বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে মাথায় কিছুটা আঘাত পান সোহেল রানা। সাইডলাইনে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে এই মিডফিল্ডার দ্রুতই মাঠে ফিরলে স্বস্তি ফেরে কিংস সমর্থকদের মনেও।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ভালো সুযোগ নষ্ট করেন দোরিয়েলতন। ডান দিক দিয়ে দ্রুত আক্রমণে ওঠা রাফায়েলের কাটব্যাক খুঁজে পায় তাকে। কিন্তু এই ব্রাজিলিয়ানের শট সোজাসুজি যায় সুজনের কাছে।

৬২তম মিনিটে বড় ধাক্কাটা খায় কিংস। মোহামেডানের মিনহাজুর আবেদিন রাকিবকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন মিডফিল্ডার সোহেল। তিন মিনিট পর ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের ক্রসে দোরিয়েলতনের হেড দারুণ ক্ষিপ্রতায় আটকান সুজন।

৭২তম মিনিটে পরাস্ত হন সুজন। সোহেল রানা জুনিয়রের কর্নার ডিফেন্ডাররা ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হওয়ার পর রাফায়েলের অভাবনীয় ভলি খুঁজে পায় ঠিকানা।

এই গোলের রেশ থাকতেই ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় কিংস। দোরিয়েলতনের বুদ্ধিদ্বীপ্ত পাস ধরে ইমানুয়েল সানডে নিখুঁত শটে সুজনের পায়ের ফাঁক দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন বল। গত মৌসুমে সানডে খেলেছিলেন মোহামেডানে। সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে গোলটি তিনি উদযাপন করেছেন সাদামাটাভাবে।

সব অনিশ্চয়তার ইতি দোরিয়েলতন টেনে দেন ৮৬তম মিনিটে। সতীর্থের পাস ধরে মিঠুকে বডি ডজে ছিটকে দিয়ে, সুজনকে ডামি শটে বোকা বানিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

এরপরই মোহামেডান সমর্থকরা গ্যালারি থেকে মাঠে ফ্লেয়ারসহ নানা কিছু ছুঁড়তে থাকেন। তাতে খেলা বন্ধ থাকে কিছুক্ষণ। গত বছর একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল কিংস অ্যারেনায়।

পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হলে ফের শুরু হয় খেলা, কিন্তু মোহামেডান পারেনি ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো ইঙ্গিত দিতে। হারের হতাশা নিয়ে নতুন মৌসুম শুরু হলো আলফাজ আহমেদের দলের।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মোহাম্মদপুরের সহকারী পুলিশ কমিশনারসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

মোহামেডানকে গুড়িয়ে শিরোপা জিতল বসুন্ধরা

প্রকাশের সময় : ০৮:২০:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

স্পোর্টস ডেস্ক : 

মূল মাঠের সীমানাজুড়ে থাকা বিলবোর্ডের বাইরেই বড় বড় ঘাস। থ্রো ইন করতে আসতে হয় সেই ঘাস পেরিয়ে। মাঠ অপ্রস্তুত থাকায় খেলা শুরু হতেও দেরি হলো মিনিট দশেক। তবে বল মাঠে গড়াতেই জমে উঠল লড়াই। ১৩ মিনিটের মধ্যে মিলল দুটি পেনাল্টির দেখা। বসুন্ধরা কিংসের সোহেল রানা দেখলেন দ্বিতীয় হলুদ কার্ড। তারপরও মোহামেডানকে হারিয়ে চ্যালেঞ্জ কাপের শিরোপা ধরে রাখল বসুন্ধরা কিংস।

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লার ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ৪-১ গোলে জিতেছে কিংস। দোরিয়েলতন গোমেস নাসিমেন্তো দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর মোহামেডানকে সমতায় ফেরান মোজাফ্ফর মোজাফ্ফরভ। এরপর রাফায়েল আগুস্তো ও ইমানুয়েল সানডের লক্ষ্যভেদের পর দোরিয়েলতনের দ্বিতীয় গোলে বড় জয় নিশ্চিত হয় কিংসের।

গত বছর অনুষ্ঠিত প্রথম আসরেও মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। সেবারও শিরোপা জিতেছিল কিংস। এবারও সেই সুখস্মৃতির পুনরাবৃত্তি করল তারা। কিংসের কোচ হিসেবে ট্রফি দিয়ে যাত্রা শুরু হলো আর্জেন্টাইন মারিও গোমেসের।

এমন সব আবহে শুরু ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে বল দখলের লড়াইয়ে বক্সের ঠিক ওপরে আর্নেস্ট বোয়াটেংকে ফাউল করে বসেন কাজী তারিক রায়হান। মোজাফ্ফরভের ফ্রি কিক রক্ষণ দেয়ালে প্রতিহত হয়।

চার মিনিট পর সোহেল রানার থ্রু পাস ধরতে বক্সে ঢুকে পড়া দোরিয়েলতনকে বক্সের ভেতরে পেছন ফাউল করেন মেহেদী হাসান মিঠু। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সুজন হোসেনকে বিপরীত দিকে ছিটকে দিয়ে কিংসকে এগিয়ে নেন দোরিয়েলতন।

একটু পর মিঠুর লম্বা থ্রোয়ে বক্সের জটলার ভেতর থেকে পা চালালেও বলের নাগাল পাননি স্যামুয়েল বোয়াটেং। বলের সাথে সংযোগ ঘটাতে পারলে সমতায় ফিরতে পারত মোহামেডান।

সাদাকালো জার্সিধারীদের অপেক্ষা ফুরোয় ত্রয়োদশ মিনিটে। সফল স্পট কিকে সমতার স্বস্তি এনে দেন মোজাফ্ফরভ। মিঠুর থ্রো ইনে বক্সে তারিক প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়কে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় মোহামেডান।

৩৫তম মিনিটে বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে মাথায় কিছুটা আঘাত পান সোহেল রানা। সাইডলাইনে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে এই মিডফিল্ডার দ্রুতই মাঠে ফিরলে স্বস্তি ফেরে কিংস সমর্থকদের মনেও।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ভালো সুযোগ নষ্ট করেন দোরিয়েলতন। ডান দিক দিয়ে দ্রুত আক্রমণে ওঠা রাফায়েলের কাটব্যাক খুঁজে পায় তাকে। কিন্তু এই ব্রাজিলিয়ানের শট সোজাসুজি যায় সুজনের কাছে।

৬২তম মিনিটে বড় ধাক্কাটা খায় কিংস। মোহামেডানের মিনহাজুর আবেদিন রাকিবকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন মিডফিল্ডার সোহেল। তিন মিনিট পর ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের ক্রসে দোরিয়েলতনের হেড দারুণ ক্ষিপ্রতায় আটকান সুজন।

৭২তম মিনিটে পরাস্ত হন সুজন। সোহেল রানা জুনিয়রের কর্নার ডিফেন্ডাররা ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হওয়ার পর রাফায়েলের অভাবনীয় ভলি খুঁজে পায় ঠিকানা।

এই গোলের রেশ থাকতেই ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় কিংস। দোরিয়েলতনের বুদ্ধিদ্বীপ্ত পাস ধরে ইমানুয়েল সানডে নিখুঁত শটে সুজনের পায়ের ফাঁক দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন বল। গত মৌসুমে সানডে খেলেছিলেন মোহামেডানে। সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে গোলটি তিনি উদযাপন করেছেন সাদামাটাভাবে।

সব অনিশ্চয়তার ইতি দোরিয়েলতন টেনে দেন ৮৬তম মিনিটে। সতীর্থের পাস ধরে মিঠুকে বডি ডজে ছিটকে দিয়ে, সুজনকে ডামি শটে বোকা বানিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

এরপরই মোহামেডান সমর্থকরা গ্যালারি থেকে মাঠে ফ্লেয়ারসহ নানা কিছু ছুঁড়তে থাকেন। তাতে খেলা বন্ধ থাকে কিছুক্ষণ। গত বছর একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল কিংস অ্যারেনায়।

পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হলে ফের শুরু হয় খেলা, কিন্তু মোহামেডান পারেনি ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো ইঙ্গিত দিতে। হারের হতাশা নিয়ে নতুন মৌসুম শুরু হলো আলফাজ আহমেদের দলের।