মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:০০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

বিশ্বকাপ নিয়ে খুব বেশি প্রত্যাশা না রাখতে বললেন শান্ত

স্পোর্টস ডেস্ক
আপডেট : মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪
বিশ্বকাপ নিয়ে খুব বেশি প্রত্যাশা না রাখতে বললেন শান্ত

স্পোর্টস ডেস্ক : 

২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল বাংলাদেশ। তবে সেই আশায় হয়েছে গুঁড়েবালি। সবার আগে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছিল টাইগাররা। এদিকে আগামী ১ জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেই হিসেবে টুর্নামেন্টের বাকি দেড় মাসেরও কম সময়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও প্রত্যাশার কমতি নেই সমর্থকদের। বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আশা হারাচ্ছেন না। তবে দলকে নিয়ে বেশি প্রত্যাশা করতে মানাও করলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীতে একটি কোম্পানির চিফ ব্র্যান্ড অফিসার হিসেবে যুক্ত হয়েছেন শান্ত। চুক্তি শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বিশ্বকাপ নিয়ে নিজেদের আশা এবং প্রত্যাশার কথা বলেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।

শান্ত বলেন, প্রতি বছর দেখি, বিশ্বকাপের আগে এগুলো নিয়ে অনেক কথা হয়। প্রত্যাশা থাকে এটা করব, সেটা করব। এসব নিয়ে অনেক কথাবার্তা হয়। আমার একটা অনুরোধ থাকবে আপনাদের কাছে। এ প্রত্যাশা খুব একটা করার দরকার নেই।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন বাংলাদেশ দল কী চায়, আমরা খেলোয়াড়রাও জানি বাংলাদেশকে কতদূর নিয়ে যেতে চাই। সবাই চায় যে অনেক বড় কিছু করি। কিন্তু এটা নিয়ে যখন খুব বেশি মাতামাতি হয়, তখন আমার ব্যক্তিগতভাবে ভালো লাগে না। দরকার নাই। ফলাফল যখন হবে তখন বোঝা যাবে।’

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে গ্রুপ ‘ডি’-তে দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস এবং নেপালের সঙ্গে খেলবে বাংলাদেশ। পরের রাউন্ডে যেতেই অনেক চড়াই-উতরাই পার হতে হবে টাইগারদের। নাজমুলের দাবি, বাংলাদেশ দলের জার্সিতে যারা খেলেন তারা নিজেদের সামর্থ্যের বেশি দেন।

শান্ত যোগ করেন, আমি একটা জিনিস বলতে পারি, যে দলটা খেলবে তারা ১২০ ভাগ দেবে, প্রতিটি ম্যাচ জেতার জন্য। এই নিশ্চয়তা আমি দিতে পারি। প্রতিটি ম্যাচ আমরা যখন খেলি, তখন অনেক আশা নিয়েই খেলি। আমরা যেটা পারি, ওই জিনিসটা করার চেষ্টা করি। আমরা জেতার জন্য খেলব কিন্তু আগে থেকে জেতার আশা করছি, এবার একটু বেশ প্রত্যাশা করছি, আমার অনুরোধ থাকবে এ বিষয় নিয়ে আমরা যেন মাতামাতি না করি।

টি-টোয়েন্টিতে অনেকটা সময় ধরে ভালো করছে বাংলাদেশ। সবশেষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরে যায় ২-১ ব্যবধানে। এই সিরিজে অবশ্য বেশ ভালো উইকেটে খেলে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ নিয়েও তেমন কিছুর কথাই বলছেন শান্ত।

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি সবশেষ ৬-৭টা সিরিজ দেখি, এই দলটা বেশিরভাগ সিরিজ জিতেছে। যেটা বললাম, দলটা ভালো অবস্থায় আছে। অবশ্যই ভালো উইকেটে খেলার ইচ্ছা আছে। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমরা যে সিরিজটা খেললাম, এই ধরনের উইকেট প্রত্যাশা করছি। তারপরেও চেষ্টা করব, যুক্তরাষ্ট্রে আমরা যখন খেলব, যে ধরনের উইকেটে খেলব, সেই ধরনের উইকেটে খেলা যায় কি না। আমার মনে হয় না, এটা খুব একটা সহজ হবে। তবে ভালো উইকেটই প্রত্যাশা করছি। আর এই সিরিজটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই সিরিজটা যদি আমরা ভালোভাবে শেষ করতে পারি, আত্মবিশ্বাস নিয়ে যেতে পারি তাহলে দলের জন্য অনেক ভালো কিছু হবে। ’

’আমার মনে হয়, প্রথমত আমরা দল হিসেবে খেলছি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এবং আমাদের দলে বিশেষজ্ঞ কোনো ক্রিকেটার নেই। আমরা যখনই দল হিসেবে খেলি, সবার অবদান যখন থাকে, তখনই আমরা বেশি জিতি। আর ওভারল যদি বলি, পেস বিভাগ অনেক উন্নতি করেছে। পাশাপাশি স্পিন ও ব্যাটিংটাও আছে। মূল যে বিষয়টা আমার মনে হয়, দল হিসেবে আমরা যখন খেলি, সবার অবদান যখন থাকে, তখনই আমরা ম্যাচ জিতি। ’

বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কণ্ঠেও শোনা গেলো মোস্তাফিজের প্রশংসা। অনেকেই বলছে, বাংলাদেশ দলের হয়ে মোস্তাফিজ নিজেকে ততটা বিলিয়ে দেন না, যতটা দিচ্ছেন আইপিএলে খেলতে গিয়ে। নাজমুল হোসেন শান্ত এই তত্ত্ব কোনোভাবেই মানতে রাজি নন।

শান্ত মনে করেন, আইপিএলের চেয়ে মোস্তাফিজ যখন বাংলাদেশের হয়ে খেলেন, তখন তার আগ্রহটা আরও বেশি থাকে। শান্ত বলেন, ‘আমি যেটা বলতে চাই, যখন মোস্তাফিজ বাংলাদেশের হয়ে খেলে তখন ওর আগ্রহটা আরও বেশি থাকে। ওইটা তো বাইরের একটা লিগ (আইপিএল) খেলছে। অবশ্যই ওখানে ওর কমিটমেন্ট আছে। তার কমিটমেন্ট ওখানে সে শো করে।’

বাংলাদেশের হয়ে যখন খেলে মোস্তাফিজ, তখন আরও অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে খেলে বলে মনে করেন নাজমুল শান্ত। তিনি বলেন, ‘ও (মোস্তাফিজ) যখন বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলে, প্রত্যেকটা বল যখন ও করে, তখন চিন্তা করে যে দেশের বা দলের কিভাবে উপকার হয়। এই জিনিসটা অনেকেই বলছে বা মনে করে। তবে আমি পরিষ্কারভাবে বলতে পারি, কয়েকটা ম্যাচ আমি কাছ থেকে দেখলাম যখন ক্যাপ্টেনসি করলাম, ও প্রত্যেকটা বল অনেক গুরুত্ব দিয়ে করে এবং কিভাবে ওর দলের উপকার হবে সেটা চিন্তা করেই করে। কমিটমেন্টে কোনও ঘাটতি নেই…, যে বাংলাদেশ দলে আমি একটু রিল্যাক্সভাবে খেলছি।’

সোমবার মিরপুরে প্রাইম ব্যাংক-আবাহনী ম্যাচশেষে তামিমের সঙ্গে আলাপ করতে দেখা যায় জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে।

সেই প্রসঙ্গে শান্ত বলেন, সুন্দরভাবে বসে আড্ডা দেওয়া হয়েছে। ক্রিকেট নিয়ে কথা হয়েছে। কী অবস্থায় উনি আছেন। আমরা বা আমি অধিনায়ক হিসেবে কীভাবে চিন্তা করছি, এসব নিয়ে কথা হয়েছে। এই মুহূর্তে আপনাদের পরিষ্কারভাবে বলা মুশকিল। কারণ সময়ের ব্যাপার। উনিও একটু সময় চেয়েছেন।

‘একটু চিন্তা-ভাবনা করবেন হয়তো। ডিপিএলও চলছে। টুর্নামেন্ট শেষ হোক। আমারও একটু চিন্তা-ভাবনা করা লাগবে। এমনিতে নরমালি একটু ক্রিকেট নিয়ে… কী অবস্থা, কী আছে এসব কথাই হয়েছে। ’

ফিটনেস ইস্যুতে টেস্টে ফিরতে চান না তামিম, ওয়ানডেতেও আগ্রহ নেই খুব একটা- এমন আলোচনা আছে। টি-টোয়েন্টি থেকেও অবসরে গেছেন আগেই। শান্ত অবশ্য বলছেন, ফিট তামিমকে যেকোনো ফরম্যাটে চান তিনি।

জাতীয় দলের তিন ফরম্যাটের এই অধিনায়ক বলেন, ‘আমি তো বেসিক্যালি চাইব, উনি যদি ফিট থাকেন, টি-টোয়েন্টিতে যদিও অবসর নিয়েছেন, যদি উনি ফিট থাকেন, যেকোনো ফরম্যাটে এলেই আমরা খুশি হব। আমার মনে হয়, আমি না শুধু, দেশের প্রত্যেকটা মানুষ, ক্রিকেটারই খুশি হবে। এটা তো ইচ্ছা। এটা চাওয়া। তবে সবার আগে উনার চাইতে হবে। তারপর বাকি প্রক্রিয়া। তবে অধিনায়ক হিসেবে, আমার যেটা ইচ্ছা বা চাহিদা, সে বিষয়গুলো নিয়ে টুকটাক একটু আলাপ-আলোচনা করেছি। ’

শান্তর কাছে আলাদা করে প্রশ্ন হয়, অবসর ভেঙে তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমকে ফেরানো প্রসঙ্গেও। এ ব্যাপারে স্পষ্ট করেই শান্ত বলছেন, এমন চিন্তা নেই তাদের।

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে এই ধরনের (তামিম-মুশফিকের টি-টোয়েন্টি অবসর ভাঙানো) চিন্তা-ভাবনা করছি না। বিশ্বকাপের খুব বেশি দিন সময় নেই। দলটা মোটামুটি খুব ভালো সেটলও আছে। আর বেশ কয়েকদিন ধরে তামিম ভাইয়ের ফিটনেসেরও একটা ইস্যু আছে। সেসব নিয়েও আমাদের কথা হয়েছে। এই মুহূর্তে এসব কিছু ভাবছি না। তবে অবশ্যই দলের প্রয়োজনে যেকোনো মুহূর্তে যে কাউকে ডাকার জন্য প্রস্তুত। ’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া