বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৮:১৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

বর্তমানে শুধু পাহাড়ে নয়, সারাদেশেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করতে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে : জিএম কাদের

রংপুর জেলা প্রতিনিধি
আপডেট : রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৪
বর্তমানে শুধু পাহাড়ে নয়, সারাদেশেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করতে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে : জিএম কাদের

রংপুর জেলা প্রতিনিধি : 

বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি বলেছেন, বর্তমানে শুধু পাহাড়ে নয়, সারাদেশেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করতে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় নির্বিচারে মানুষ হত্যা হচ্ছে, শিশুদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হচ্ছে, অগ্নিকাণ্ড হচ্ছে। দেশে জবাবদিহিতা না থাকায় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছে না।

রোববার (৭ এপ্রিল) বিকেলে রংপুরে এক সপ্তাহের সফরে এসে সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পাহাড়ে এত নিরাপত্তা বেষ্টনী, সেনাবাহিনী ও পুলিশের চৌকি থাকার পরও দীর্ঘসময় ধরে ব্যাংক ডাকাতির মত ঘটনা ঘটিয়েছে কেএনএফ। যা স্পষ্টই প্রশাসনের উদাসিনতা। বাহিনীর সদস্যদের শুধু যাকজমক ও সুযোগ সুবিধা থাকলেও জবাবদিহিতা না থাকায় এরকম ঘটনা ঘটেছে। এই ছোট ঘটনায় সরকারকে যেভাবে হিমসিম খেতে হয়েছে। তাই এখনই বিষয়গুলো নিয়ে ভাববার রয়েছে। না হলে আরো বড় কোন ঘটনায় হিমসীম খেতে হবে সরকারকে বলে মনে করেন তিনি।

জিএম কাদের বলেন, আমরা জানি দুর্ঘটনা হঠাৎ করে হয়। কিন্তু দেশে প্রতিনিয়ত বাস দুর্ঘটনা হচ্ছে, ট্রেন দুর্ঘটনা হচ্ছে। তাই দুর্ঘটনা এখন স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এখন পাহাড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়টি যেন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে না দাঁড়ায় আমরা সেই দাবি জানাই। আমরা পাহাড়ে যেতে চাই, বসবাস করতে চাই। তবে বলতে পারি প্রাথমিকভাবে তারা তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। তারা এই অঙ্গীকার করেই ক্ষমতায় থাকে। আমাদের যথেষ্ট পরিমাণ সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে, আমাদের নিরাপত্তা চৌকি রয়েছে। এতো কিছুর মাঝেও দীর্ঘ সময় ধরে পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা কিভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে? ব্যাংক লুট হলো, অপহরণ হচ্ছে, থানা আক্রমণ হলো, অস্ত্র লুট করা হলো। এমন ঘটনা বারবারই ঘটছে। সন্ত্রাসীদের এমন কর্মকাণ্ড সরকারের রুখে দেওয়ার কথা ছিল, ব্যাপক প্রস্তুতি থাকার কথা ছিল। সরকারের চাক-চমক বাহিনী রয়েছে, সুযোগ-সুবিধা রয়েছে কিন্তু কাজের ব্যাপারে কোনো জবাবদিহিতা নেই। সরকার এ ঘটনা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে, বড় ধরনের কোনো বিপদ হলে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াব?

দেশে সুশাসনের অভাব উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, দেশে জবাবদিহিতা থাকে না তখনই যখন গণতন্ত্র থাকে না। নির্বাচন সঠিকভাবে হয় না। মানুষ সার্বিকভাবে মূল্যায়নের সুযোগ পায় না। আমরা ট্যাক্সের টাকা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রতিপালন করি। কিন্তু তারা নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা তাদের কার্যক্রম দেখে স্বস্তিবোধ করতে পারছি না। ফলে যারা পাহাড়ি এলাকায় বিনিয়োগ করতে চায়, ব্যবসা করতে চায়, বেড়াতে যেতে চায়, তারা এখন পিছপা হচ্ছে। এটি দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। বর্তমানে সন্ত্রাসীরা সহিংস কার্যকলাপে চলে গেছে। এটি সরকারকে দেখতে হবে। তাদের কোনো দাবি মেনে নিলে সেই ফলাফল আমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে না।

জাতীয় পার্টিতে বিভেদ তৈরিতে সরকারের ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি নিবন্ধিত দল। প্রতিটি নিবন্ধিত দল পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন একটি দিক-নিদের্শনা দিয়ে থাকে। আমরা সেভাবেই দল পরিচালনা করছি। তবে অনেক দিন ধরে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিভেদ সৃষ্টির জন্য সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সরকারপন্থী কিছু মিডিয়া ফলাও করে এটি প্রচার করে আমাদের বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে। দল অনেকেই করতে পারে, তবে আমাদের নিবন্ধিত লোগো ব্যবহার করে কেউ সভা-সমাবেশ করতে পারে না। সরকার জানে এটি অবৈধ কিন্তু পদক্ষেপ গ্রহণ করে না।

এসময় জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক ও চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ভিপি আলাউদ্দিন মিয়া, সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর জাতীয় পার্টির এস এস ইয়াসিরসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া