শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন

ঢাকা-চট্টগ্রাম বুলেট ট্রেনের নকশা চূড়ান্ত জানুয়ারিতেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২০
ঢাকা-চট্টগ্রাম বুলেট ট্রেনের নকশা চূড়ান্ত জানুয়ারিতেই
ফাইল ছবি

ঢাকা-চট্টগ্রাম বুলেট ট্রেন প্রকল্পের সমীক্ষা শেষ হয়েছে। প্রকল্পটির নকশা চূড়ান্ত করতে চলতি মাসেই ঢাকা আসবেন চায়না রেলওয়ে ডিজাইন করপোরেশনের প্রতিনিধিরা। রেলওয়ে সূত্র জানায়, এ প্রকল্পের যৌথভাবে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও নকশার কাজ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং চায়না রেলওয়ে ডিজাইন করপোরেশন (চীন) এবং মজুমদার এন্টারপ্রাইজ (বাংলাদেশ)।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন অবকাঠামোর বিশদ ডিজাইন প্রণয়ন, দরপত্র দলিলাদি প্রস্তুতকরণ, নতুন রেললাইন পরিচালন প্রক্রিয়া নির্ধারণ, প্রাথমিক পরিবেশ পরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি, প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন, পরিবেশ ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং, ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন পরিকল্পনাও চলমান। জানুয়ারির মধ্যে প্রকল্পটির নকশা তৈরির কাজও শেষ হবে।

জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম বুলেট ট্রেন প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয় ২০১৭ সালের ১৮ মার্চ। একই বছরের ৩১ মে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়। সম্প্রতি সমীক্ষাটি শেষ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেখা দিয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে দ্রুতগতির বুলেট ট্রেন চালু হওয়ার সম্ভাবনা। বুলেট ট্রেন চালু হলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছানো যাবে মাত্র ৫৫ মিনিটে। অর্থাৎ ছয় ঘণ্টার জায়গায় সময় বাঁচবে পাঁচ ঘণ্টা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রস্তাবিত দ্রুতগতির রেলপথটি যাবে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মধ্য দিয়ে। ঢাকা থেকে কুমিল্লা বা লাকসাম হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত হাইস্পিড ট্রেন লাইন নির্মাণ করা হলে এ পথে যাতায়াতে এক ঘণ্টারও কম সময় লাগবে। রেলপথটি কক্সবাজার পর্যন্ত বর্ধিত করা হলে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে যাতায়াতও সহজ হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন : প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেন বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর নির্মাণকাজ

 

সমীক্ষা প্রকল্পটির অনুমোদিত ব্যয় ছিল ১০০ কোটি ৬৯ লাখ ২৯ হাজার টাকা। ২০১৭ সালের ০১ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। কিন্তু ডলারের দাম ও পরামর্শক খাতে ব্যয় বৃ্দ্িধর কারণে পিছিয়ে যায় সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিশদ ডিজাইন প্রকল্প। সমীক্ষা প্রকল্প শেষ হওয়ার পর এখন পরবর্তী মূল প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। এতে বুলেট ট্রেনে ভ্রমণের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরো কয়েক বছর।

২০১৭ সালে সমীক্ষা প্রকল্পে পরামর্শক সেবা বাবদ মোট ব্যয় ছিল ৯৭ কোটি ৪১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। তখন বৈদেশিক মুদ্রায় অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে মার্কিন ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হার ধরা হয়েছিল ১ মার্কিন ডলার সমান ৭৮ টাকা ৪০ পয়সা। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে ১ মার্কিন ডলার ৮৩ টাকা ৮৫ পয়সা খরচ করে কিনতে হয়েছে। ফলে এই খাতে অতিরিক্ত ৯ কোটি ৭৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বৃদ্ধি পায়।

সার্বিকভাবে সমীক্ষা প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, এই টাকা সমন্বয় করতে প্রকল্পের মেয়াদ কয়েক মাস বাড়ে।

এ প্রসঙ্গে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী সুবক্তগীন জানান, ডিসেম্বরের দিকে বাংলাদেশে এসে নকশা চূড়ান্ত অনুমোদন করবেন চায়না রেলওয়ে ডিজাইন করপোরেশনের প্রতিনিধিরা। এরপর ব্যায়ের বিষয়টি নির্ধারণ করে অনুমোদনের জন্য একনেকে যাবে প্রকল্পটি। অনুমোদন পাওয়ার পর কাজ শুরু হবে।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটের ৩২১ কিলোমিটার রেলপথ রয়েছে। তবে উচ্চগতির রেলপথটি আগের রেলপথের চেয়ে প্রায় ৯৪ কিলোমিটার কম হবে। এক্ষেত্রে উচ্চগতির রেলপথ দাঁড়াবে ২২৭ কিলোমিটার।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বুলেট ট্রেনটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩০০ কিলোমিটার গতিতে চলবে। আর দিনে প্রায় ৫০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে। এর জন্য একজন যাত্রীকে ভাড়া গুণতে হবে ২ হাজার টাকার মতো।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া