সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

জিয়াউর রহমানকে ছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাস কখনও লেখা সম্ভব নয় : গয়েশ্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
জিয়াউর রহমানকে ছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাস কখনও লেখা সম্ভব নয় : গয়েশ্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জিয়াউর রহমানকে ছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাস কখনও লেখা সম্ভব নয়। আর সেই ইতিহাস পরিপূর্ণ হবে না।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জিয়াউর রহমানের ভূমিকা ও আজকের বাংলাদেশ’শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘অন্তরে মম শহীদ জিয়া’ নামের একটি সংগঠন।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহহমান যদি স্বাধীনতার পাঠক হন, তাহলে লেখক কোথায়? সেই কাগজটি কোথায়? জিয়াউর রহমানকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমাদের (বিএনপি) কোনো প্রচেষ্টার প্রয়োজন নেই। জিয়াউর রহমান নিজেই নিজের কর্মগুণে প্রতিষ্ঠিত জাতির অন্তরে, ইতিহাসে। জিয়াউর রহমানকে ছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাস লেখা কখনোই সম্ভব নয়। আজকের ইতিহাস কখনোই পরিপূর্ণ ইতিহাস নয়।

গয়েশ্বর বলেন, জিয়াউর রহমানের ছবি পাহারা দেওয়ার জন্য পুলিশ-র‌্যাবের প্রয়োজন হয় না। কারণ তার ছবি মানুষের অন্তরে আঁকা। অন্তরের ছবি কখনো ফ্যাকাশে হয় না। সুতরাং সেই ছবি কারো পক্ষে ছেড়া সম্ভব না। জিয়াউর রহমান যখন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রিভোল্ড ঘোষণা করলেন তখন তিনি মাঝারি ধরনের কর্মকর্তা, মেজর। কতটুকু সাহস থাকলে একজন মেজর একটি রেগুলার আর্মির বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রিভোল্ড ঘোষণা করলেন! সেটা বোঝার মতো ক্ষমতা আওয়ামী লীগের কোনো প্রাণীর নেই। এই ধরনের সাহস আওয়ামী লীগের কোনো নেতার নেই। আওয়ামী লীগের সাহস আসে, ক্ষমতায় থাকলে। আর যখন ক্ষমতায় থাকে না, তখন কি অবস্থা তা বলার মতো না।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গণতান্ত্রিক দেশের লোক আমাদের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল, ভারত যদি পাশে না থাকতো, তাহলে আমরা এই ৭ তারিখের আমি, ডামি, স্বামী, নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারতাম না। এজন্যই এই ঝামেলার শুরু হয়েছে।

জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে আপত্তি নেই জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, তিনি (শেখ মুজিবুর রহমান) তখন বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। আমি কথাটার সঙ্গে এখনো একমত। কারণ, আমাদের মুক্তি-স্বাধীনতার সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। আমরা সেই মুক্তির সংগ্রাম এখনো করছি। আমরা মুক্ত নই৷ খালেদা জিয়া বন্দি আছেন, শুধু তাকে নয়, পুরো দেশ-জাতিকে আমরা মুক্ত করতে চাই একটি রাহুর গ্রাসের কবল থেকে। আমরা যে স্বপ্ন দেখে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি, সেই সংগ্রামটি শেষ হয়নি কেন? অর্থাৎ, আকাঙিক্ষত স্বাধীনতা এখনো আমাদের আয়ত্তে আসেনি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতা যুদ্ধের সরাসরি আহ্বান করেছেন জানিয়ে দলটির এই নেতা বলেন, বড় বড় টুর্নামেন্টে যেমন সময়, স্থান, খেলোয়াড় দর্শক সব থাকে, কিন্তু রেফারি বা অ্যাম্পায়ার বাঁশি না দেওয়া পর্যন্ত খেলা শুরু হয় না। তেমনি শেখ মুজিবুর রহমান সংগ্রামের টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছেন, সবাই বাঁশের লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যার যা ছিল তাই নিয়েই দাঁড়িয়ে ছিল। মানুষের এই চেতনাবোধকে জিয়াউর রহমান অনুভব করতে পেরেছেন, বুকে সাহস নিয়ে ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন। আজকে জিয়াউর রহমানকে ছোট করে শেখ মুজিবকে বড় করতে পারবেন না।

ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে তিনি বলেন, আজকে ভারতের সবচেয়ে বড় পণ্য হলো আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা। এটা বর্জন করলেই শেষ। বর্জন করার তো করছেই, এখন এটাকে তাড়ানো যায় কি না। তাহলেই তো শেষ। এই একটা পণ্য বর্জন করলেই তো জাতির মুক্ত হওয়া সম্পন্ন। অন্য পণ্য বর্জন করার প্রয়োজন হয় না আমাদের।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন ১০ হাজার মানুষ ভারতের ভিসার জন্য আবেদন করে। ভিসার জমা ফি বাবদ ৮০০ টাকা করে জমা দিতে হয়। অর্থাৎ প্রতিদিন ৮০ কোটি টাকা। এটা ভিসা পেলেও ৮০০ টাকা দিতে হবে, না পেলেও দিতে হবে। মাসে ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা বাংলাদেশ থেকে ভিসা ফি বাবদ ভারত আমাদের দেশ থেকে আয় করে। তাহলে বছরে কত কোটি টাকা?

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরো বলেন, শুধু কী এটা। এরপর বর্ডার ক্রস করলে ( ভারতে গেলে) দৈনিক কমপক্ষে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়। ৭ দিন থাকলে ৩৫ হাজার টাকা খরচ। আসার সময় ৫০ হাজার টাকার বাজার খরচ। এরপর ওষুধ…. হোটেল খরচ। আর পণ্য বর্জন কী? বাংলাদেশের মানুষ যদি বলে কাল থেকে ভারতে যাব না, তাদের অর্থনীতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে একবার ভেবে দেখুন।

বাংলাদেশের নির্বাচনে ভারতের হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের কাহিনি মনে আছে না? তখন সুজাতা সিং এরশাদের সঙ্গে কি করেছে মনে নেই? প্রতিবারই তো ভারত এসে নির্বাচন করে দিয়ে যায়।

আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাছের মো. রহমতুল্লাহ, অ্যাডভোকেট রফিক সিকদার, জাতীয়তাবাদী তাঁতি দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া