Dhaka মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গুজরাটে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাট উপকূলে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’। বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় রাজ্যের সৌরাষ্ট্র ও কুচ জেলার মাঝে জাখাও বন্দরনগরীতে ‘ল্যান্ডফল’ তথা আছড়ে পড়তে শুরু করে ঘূর্ণিঝড়টি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী কয়েক ঘণ্টা গুজরাটে ব্যাপক তাণ্ডব চালাবে ‘বিপর্যয়’।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, ল্যান্ডফল বা আছড়ে পড়ার সময় বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের বেশি। যা মধ্যরাত পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পুরো অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, আরব সাগরে উৎপন্ন হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) নাগাদ ভারত ও পাকিস্তানে আঘাত হানতে পারে। পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে দুটি দেশের উপকূলীয় অঞ্চল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩৬ হাজার জনকে। এর মধ্যে ভারতেই ৯৪ হাজার।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, গুজরাট উপকূল থেকে প্রায় ৯৪ হাজার অধিবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ভারতের ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) ১৮টি দল, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এসডিআরএফ) ১২টি দল, রাজ্য সড়ক ও নির্মাণ বিভাগের ১১৫টি দল এবং রাজ্য বিদ্যুৎ বিভাগের ৩৯৭টি উপকূলীয় জেলাগুলোতে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে।

ভারতীয় আবহাওয়া কার্যালয়ের প্রধান ড. এম. মহাপাত্রা বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়ের স্থলভাগে আছড়ে পড়া শুরু হয়েছে। এটি এখনও ৭০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে এবং উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। মধ্যরাতে তা সাগর অতিক্রম করে স্থলভাগে আঘাত হানবে।
এর আগে ঘূর্ণিঝড়টিকে ‘ক্যাটাগরি ৩’ বলে ঘোষণা করা হয়। যা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে স্বীকৃত। ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুসারে, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগ ৫০ কিলোমিটার বিস্তৃত। স্থানীয় সময় দশটায় এটি আঘাত হানতে পারে। এটির বর্তমান গতি ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার।

বিপর্যয়ের প্রভাব পড়তে পারে কেরালা উপকূলেও। রাতে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ভিঝিনজাম থেকে কাসারাগোড় পর্যন্ত উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে প্রবল ঢেউ। ঢেউয়ের উচ্চতা হতে পারে ৩ থেকে ৩ দশমিক ৩ মিটার।

গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভুপেন্দ্র প্যাটেল ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার এক বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছেন। ইতোমধ্যে প্রায় এক লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) ১৮টি টিম এবং রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর ১২টি টিম এবং রাজ্যের সড়ক ও ভবন বিভাগের ১১৫টি টিম এবং রাজ্যের বিদ্যুৎ বিভাগের ৩৯৭টি টিম উপকূলীয় জেলাগুলোতে অবস্থান করছে।

এনডিআরএফ মহাপরিচালক অতুল কারওয়াল বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার পর উদ্ধার অভিযান পরিচালনায় প্রস্তুত রয়েছে বাহিনী। প্রতিবেশী রাজস্তান, মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকও আক্রান্ত হলে সহযোগিতা চেয়েছে। রাজস্তানের দক্ষিণাংশে প্রভাব পড়তে পারে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্থানীয়দের সহযোগিতার জন্য সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও কোস্ট গার্ড প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে।

শুক্রবার (১৬ জুন) পর্যন্ত উপকূলে মাছ ধরা বাতিল করা হয়েছে। বন্দরগুলো বন্ধ করা হয়েছে। সবগুলো জাহাজ নোঙর ফেলেছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংসদ নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি হলে ব্যবস্থা নেবে দুদক : দুদক চেয়ারম্যান

গুজরাটে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’

প্রকাশের সময় : ১০:৫০:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাট উপকূলে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’। বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় রাজ্যের সৌরাষ্ট্র ও কুচ জেলার মাঝে জাখাও বন্দরনগরীতে ‘ল্যান্ডফল’ তথা আছড়ে পড়তে শুরু করে ঘূর্ণিঝড়টি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী কয়েক ঘণ্টা গুজরাটে ব্যাপক তাণ্ডব চালাবে ‘বিপর্যয়’।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, ল্যান্ডফল বা আছড়ে পড়ার সময় বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের বেশি। যা মধ্যরাত পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পুরো অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, আরব সাগরে উৎপন্ন হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) নাগাদ ভারত ও পাকিস্তানে আঘাত হানতে পারে। পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে দুটি দেশের উপকূলীয় অঞ্চল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩৬ হাজার জনকে। এর মধ্যে ভারতেই ৯৪ হাজার।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, গুজরাট উপকূল থেকে প্রায় ৯৪ হাজার অধিবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ভারতের ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) ১৮টি দল, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এসডিআরএফ) ১২টি দল, রাজ্য সড়ক ও নির্মাণ বিভাগের ১১৫টি দল এবং রাজ্য বিদ্যুৎ বিভাগের ৩৯৭টি উপকূলীয় জেলাগুলোতে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে।

ভারতীয় আবহাওয়া কার্যালয়ের প্রধান ড. এম. মহাপাত্রা বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়ের স্থলভাগে আছড়ে পড়া শুরু হয়েছে। এটি এখনও ৭০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে এবং উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। মধ্যরাতে তা সাগর অতিক্রম করে স্থলভাগে আঘাত হানবে।
এর আগে ঘূর্ণিঝড়টিকে ‘ক্যাটাগরি ৩’ বলে ঘোষণা করা হয়। যা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে স্বীকৃত। ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুসারে, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগ ৫০ কিলোমিটার বিস্তৃত। স্থানীয় সময় দশটায় এটি আঘাত হানতে পারে। এটির বর্তমান গতি ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার।

বিপর্যয়ের প্রভাব পড়তে পারে কেরালা উপকূলেও। রাতে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ভিঝিনজাম থেকে কাসারাগোড় পর্যন্ত উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে প্রবল ঢেউ। ঢেউয়ের উচ্চতা হতে পারে ৩ থেকে ৩ দশমিক ৩ মিটার।

গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভুপেন্দ্র প্যাটেল ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার এক বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছেন। ইতোমধ্যে প্রায় এক লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) ১৮টি টিম এবং রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর ১২টি টিম এবং রাজ্যের সড়ক ও ভবন বিভাগের ১১৫টি টিম এবং রাজ্যের বিদ্যুৎ বিভাগের ৩৯৭টি টিম উপকূলীয় জেলাগুলোতে অবস্থান করছে।

এনডিআরএফ মহাপরিচালক অতুল কারওয়াল বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার পর উদ্ধার অভিযান পরিচালনায় প্রস্তুত রয়েছে বাহিনী। প্রতিবেশী রাজস্তান, মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকও আক্রান্ত হলে সহযোগিতা চেয়েছে। রাজস্তানের দক্ষিণাংশে প্রভাব পড়তে পারে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্থানীয়দের সহযোগিতার জন্য সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও কোস্ট গার্ড প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে।

শুক্রবার (১৬ জুন) পর্যন্ত উপকূলে মাছ ধরা বাতিল করা হয়েছে। বন্দরগুলো বন্ধ করা হয়েছে। সবগুলো জাহাজ নোঙর ফেলেছে।