আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক ও বিরোধীদলীয় নেতা আলেক্সি নাভালনি কারাগারের ভেতরে বন্দি অবস্থায় মারা গেছেন।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রুশ কারা কর্তৃপক্ষের বরাতে এমন তথ্য জানিয়েছে দেশটির বার্তা সংস্থাগুলো।
খবরে জানানো হয়, মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল ৪৭ বছর। তাকে সংশোধনমূলক কেন্দ্রে রাখা হয়েছিল। মৃত্যুর আগে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন এবং পরে মারা যান। তাকে বাঁচানোর সব ধরনের চেষ্টা করা হলেও তাতে সফল হননি চিকিৎসকরা।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ বলেছেন, নাভালনির মৃত্যু কীভাবে হয়েছে তা খুঁজে বের করবেন চিকিৎসকেরা।
মৃত্যু নিয়ে নাভালনির আইনজীবী জানান, গত বুধবার তিনি নাভালনির সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তখন তিনি সুস্থ ছিলেন। তবে মৃত্যু নিয়ে কোনো অস্বাভাবিকতার সম্ভাবনা আছে কিনা তা নিয়ে মন্তব্য করেননি তিনি।
গত বছরের শেষের দিকে রাশিয়ার আর্কটিক অঞ্চলের একটি কারাগারে পাঠানো হয় নাভালনিকে। এই কারাগারটিকে রাশিয়ার সবচেয়ে কঠিন কারাগার বলে মনে করা হয়।
ইয়ামালো-নেনেটস জেলার কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার হাঁটার পরে হঠাৎ নাভালনি অসুস্থ বোধ করেন। অসুস্থ বোধ করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এমন অবস্থা দেখে তাৎক্ষণিক জরুরি মেডিকেল টিমকে ডাকা হয়। তারা এসে চেষ্টা করলেও নাভালনিকে বাঁচাতে পারেননি।
রুশ সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, ইতোমধ্যে নাভালনির মৃত্যুর বিষয়টি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অবহিত করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ খুঁজে করতে তদন্ত হচ্ছে।
পুতিন ও রুশ সামরিক অভিজাত নেতাদের বিরুদ্ধে বেশ সরব ৪৭ বছর বয়সী নাভালনি। ২০২০ সালের আগস্টে সাইবেরিয়ার টমসক শহর থেকে উড়োজাহাজে করে মস্কোয় ফেরার পথে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর তাকে প্রথমে সাইবেরিয়ার একটি হাসপাতালে এবং সেখান থেকে চিকিৎসার জন্য জার্মানির বার্লিনে নেওয়া হয়। জার্মানির চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি।
একই বছরের সেপ্টেম্বরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞরা জানান, নাভালনিকে রুশ নার্ভ এজেন্ট ‘নোভিচক’ বিষ প্রয়োগ করেছে। এ জন্য সরাসরি পুতিনকে দায়ী করে আসছিলেন নাভালনি। যদিও পুতিন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে ক্রেমলিনের হুমকি উপেক্ষা করে ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি দেশে ফিরলে মস্কো বিমানবন্দরেই তাকে গ্রেপ্তার করে রুশ কর্তৃপক্ষ। এরপর বিভিন্ন মামলায় ১৯ বছরের সাজা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।