স্পোর্টস ডেস্ক :
চ্যাম্পিয়নস লীগে শেষ ষোলোতে বায়ার্ন মিউনিখ থেকে হেরে বিদায় নেওয়া পিএসজি লীগে ওয়ানেও হোঁচট খেতে বসেছিল। কিন্ত শেষ মিনিটে মেসির নিখুঁত পাস থেকে ফরাসি ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপের গোলে ব্রেস্তকে হারিয়েছে ক্রিস্তফ গালতিয়েরের শিষ্যরা।
যদিও প্রায় ড্র করতে বসেছিল তারা। তবে লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপের যুগলবন্দীতে পুরো তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা।
শনিবার (১১ মার্চ) দিবাগত রাতে রেলিগেশন অঞ্চলের দিকে থাকা ব্রেস্তকে ২-১ গোলে হারিয়েছে পিএসজি। প্রথমার্ধে কার্লোস সোলেরের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল প্যারিসিয়ানরাই। কিন্তু ওই অর্ধের শেষদিকে সেই গোল শোধ করে দেয় ব্রেস্ত। এরপর যোগ করা সময়ের শুরুতেই পিএসজির জয়সূচক গোলটি করেন এমবাপ্পে।
ম্যাচজুড়ে দারুণ কিছু সুযোগ তৈরি করে দেন মেসি। কিন্তু তার আক্রমণভাগের সতীর্থরা তা কাজে লাগাতে পারছিলেন না। চতুর্থ মিনিটেই মেসির ফ্লিকে গোলমুখে বল পেয়েছিলেন এমবাপ্পে। কিন্তু প্রতিপক্ষ দলের এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে ফেরে। কিছুক্ষণ পর সোলেরের ভলি ব্রেস্ত গোলরক্ষক মার্কো বিজাতের হাত ছুঁয়ে ক্রসবারে লাগে।
একের পর এক আক্রমণের ফল অবশ্য প্রথমার্ধের শেষদিকে পায় পিএসজি। ৩৭তম মিনিটে এমবাপ্পের শট প্রতিহত হয়ে ফিরলেও পেয়ে যান সোলের। তা থেকে বুলেটগতির শটে লক্ষ্যভেদ করেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। গোল করার পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পিএসজির হাতেই ছিল। কিন্তু ৪৩তম মিনিটে রোমাঁ দেল কাস্তিয়োর কাছ থেকে বল পেয়ে আচমকা লক্ষ্যভেদ করে সমতা ফেরান ব্রেস্তের ফঁক অনুখা।
দ্বিতীয়ার্ধেও আধিপত্য বজায় রাখে পিএসজি। তবে বেশ কয়েকটি সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি মেসি-এমবাপ্পেরা। কিন্তু শেষদিকে ব্রেস্তের অতি আক্রমণাত্মক ভঙ্গী কাজে লাগায় পিএসজি। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে প্রতি আক্রমণে বল পেয়ে এমবাপ্পেকে খুঁজে নেন মেসি। এবার আর কোনো ভুল করেননি এমবাপ্পে। গোলরক্ষককে কাটিয়ে কাছের পোস্ট দিয়ে বল জালের ঠিকানায় পাঠান এই ফরাসি ফরোয়ার্ড।
এর ৫ মিনিট আগেই লাল কার্ড দেখতে পারতেন এমবাপে। ব্রেস্টের ফুটবলার হ্যারিস বেলকেবলাকে কিক দিয়েছিলেন তিনি। এ অপরাধে রেফারি শুধু হলুদ কার্ড দেখিয়েই ক্ষান্ত হন। লাল কার্ড দেখালেও এখানে বলার কিছু ছিল না। এমবাপে এ যাত্রায় বেঁচে গিয়েই শেষ মুহূর্তে গোলটি করে বসলেন।
ম্যাচ শেষে ব্রেস্ট মিডফিল্ডার পিয়েরে লেস মেলু বলেন, আমরা বলবো না যে, এ কারণে (এমবাপেকে লাল কার্ড না দেখানো) হেরে গেছি। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন হলো, কেন মাঠে এমন গুরুতর অপরাধ করা সত্ত্বেও সব খেলোয়াড় একই ধরনের শাস্তির মুখোমুখি হবে না (অন্য কেউ হলে তো লাল কার্ড দেখানো হতো। এমবাপে বলে বেঁচে গেছেন)?
তিনি আরো বলেন, আমি রেফারির কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলাম। তখন রেফারি আমাকে বলেছেন, এটা ছিল একটা মৃদু সংঘর্ষ বা কিক। আমার প্রশ্ন হলো, তাহলে সত্যিকারের কিক বলতে কোনটাকে বোঝায়?
প্রথমে বেলকেবলাকে পেছন থেকে ফাউল করেন এমবাপে। যে কারণে বেলকেবলা পড়ে যান এবং এমবাপের পা আঁকড়ে ধরেন। এর প্রতিক্রিয়ায় বেলকেবলার পেটেই লাথি মেরে বসেন ফরাসি স্ট্রাইকার। রেফারি এই ঘটনায় এমবাপেকে শুধু হলুদ কার্ডই দেখান। শুধু তাই নয়, বেলকেবলাকেও হলুদ কার্ড দেখান তিনি।
পিএসজি কোচ ক্রিস্টোফ গ্যালতিয়ের বলেন, অবশ্যই এটা (চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায়) আমাদের জন্য হতাশাজনক। তবে আমাদেরকে এগিয়েই যেতে হবে এবং এই শিরোপাটা জিততে হবে। আমাদের দলে দারুণ একতা রয়েছে। দলের মধ্যে এই একতা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
এই ম্যাচ জয়ে ২৭ ম্যাচে ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষস্থান আরও মজবুত করল পিএসজি। তাদের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলে ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে মার্সেইয়ের অবস্থান দুইয়ে। ১৫ নম্বরে থাকা ব্রেস্তের পয়েন্ট ২৩।