Dhaka শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকারের সব প্রতিষ্ঠানে ই-ফাইলিং চালুর সিদ্ধান্ত : প্রেস সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারের সব প্রতিষ্ঠানে ই-ফাইলিং চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রেস সচিব বলেন, আজকে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে গভর্নর এবং কয়েকজন উপদেষ্টাসহ অর্থনীতি উত্তরণ নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সভায় সরকারের সব স্তরে ই-ফাইলিং চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানে ই-ফাইলিং আছে কিন্তু অন্য প্রতিষ্ঠানে দেখা গেছে তা নেই। এতে করে সরকারের ফাইলগুলো স্লো হয়ে যায়। কো-অর্ডিনেশন যেন সহজ হয় এবং দ্রুততার সঙ্গে কাজ করা যায় সেজন্য এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে দুর্নীতি কমে আসবে, অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতায় সেটাই বলা যায়। যতদ্রুত সম্ভব এটা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরে কিংবা ২০২৬ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের পক্ষ থেকে বারবার চলতি বছরের ডিসেম্বর ও আগামী বছর জুনের কথা বলা হচ্ছে। আজও পরিষ্কার করতে চাই, রাজনৈতিক দলগুলো যদি সংস্কার কম চায় তবে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হবে আর যদি সংস্কার একটু বেশি চান তাহলে নির্বাচন জুনের মধ্যে হবে।

তবে জুনে নির্বাচন করার কিছু অসুবিধার কথা উল্লেখ করে প্রেস সেক্রেটারি বলেন, এপ্রিল মাস থেকে বর্ষা বাদল শুরু হয়। এপ্রিল, মে ও জুন এই তিন মাস আবহাওয়াজনিত কারণে নির্বাচন করা উপযোগী না বা কঠিন। আমার ধারণা, নির্বাচন হয় ডিসেম্বরের মধ্যে হবে, না হয় ম্যাক্সিমাম আগামী বছরের সর্বোচ্চ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি আরও বলেন, তবে সব সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ওপর। নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশের কথা চিন্তা করে রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নেবেন।

শফিকুল আলম বলেন, একটা পর্যবেক্ষণ ছিল, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে যতগুলো প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, প্রতিটির ব্যয় প্রায় ৭০ শতাংশ বেশি। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পে গড়ে ৭০ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি ছিল। রাজনৈতিক প্রভাব এবং অযৌক্তিক প্রকল্প ব্যয়ের মাধ্যমে ১৪ থেকে ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ অপচয় হয়েছে।

প্রেস সচিব বলেন, বৈঠকে তৃতীয় পক্ষ দিয়ে বড় বড় প্রকল্প মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অতিরিক্ত ব্যয়ের বিষয়গুলো তৃতীয় পক্ষ দিয়ে মূল্যায়ন করা হবে। যেমন-মেট্রোরেলের আরেকটি প্রকল্পে আগের সরকারের যে ব্যয় ধরা হয়েছিল, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক মূল্যায়ন করে দেখেছে, ৫০০ মিলিয়ন ডলার এখানেই সাশ্রয় করা যায়। এ রকম অনেক প্রকল্পের ক্ষেত্রেৃ এটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’

শফিকুল আলম বলেন, বৈঠকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল, সরকারের প্রতিটি স্তরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ই-ফাইলিং চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (বিডা) ই-ফাইলিং আছে। কিন্তু সরকারের অনেক মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় ই-ফাইলিং নাই। সে ক্ষেত্রে ই- ফাইলিংয়ে কোনও সিদ্ধান্ত পাঠানো হলো আরেক জায়গায় পুরো বিষয়টি ম্যানুয়ালি করতে হচ্ছে। এ কারণে সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া কিছুটা ধীরগতির হয়ে যায়। এই জায়গাটিতে কীভাবে গতি বাড়ানো যায় এবং কোনও ফাইল যেন ম্যানুয়ালি না নড়ে সেই জায়গায় কত দ্রুত কাজ করা যায়, সে বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ, সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সরকারের সব প্রতিষ্ঠানে ই-ফাইলিং চালুর সিদ্ধান্ত : প্রেস সচিব

প্রকাশের সময় : ০৯:৫০:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারের সব প্রতিষ্ঠানে ই-ফাইলিং চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রেস সচিব বলেন, আজকে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে গভর্নর এবং কয়েকজন উপদেষ্টাসহ অর্থনীতি উত্তরণ নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সভায় সরকারের সব স্তরে ই-ফাইলিং চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানে ই-ফাইলিং আছে কিন্তু অন্য প্রতিষ্ঠানে দেখা গেছে তা নেই। এতে করে সরকারের ফাইলগুলো স্লো হয়ে যায়। কো-অর্ডিনেশন যেন সহজ হয় এবং দ্রুততার সঙ্গে কাজ করা যায় সেজন্য এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে দুর্নীতি কমে আসবে, অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতায় সেটাই বলা যায়। যতদ্রুত সম্ভব এটা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরে কিংবা ২০২৬ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের পক্ষ থেকে বারবার চলতি বছরের ডিসেম্বর ও আগামী বছর জুনের কথা বলা হচ্ছে। আজও পরিষ্কার করতে চাই, রাজনৈতিক দলগুলো যদি সংস্কার কম চায় তবে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হবে আর যদি সংস্কার একটু বেশি চান তাহলে নির্বাচন জুনের মধ্যে হবে।

তবে জুনে নির্বাচন করার কিছু অসুবিধার কথা উল্লেখ করে প্রেস সেক্রেটারি বলেন, এপ্রিল মাস থেকে বর্ষা বাদল শুরু হয়। এপ্রিল, মে ও জুন এই তিন মাস আবহাওয়াজনিত কারণে নির্বাচন করা উপযোগী না বা কঠিন। আমার ধারণা, নির্বাচন হয় ডিসেম্বরের মধ্যে হবে, না হয় ম্যাক্সিমাম আগামী বছরের সর্বোচ্চ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি আরও বলেন, তবে সব সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ওপর। নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশের কথা চিন্তা করে রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নেবেন।

শফিকুল আলম বলেন, একটা পর্যবেক্ষণ ছিল, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে যতগুলো প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, প্রতিটির ব্যয় প্রায় ৭০ শতাংশ বেশি। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পে গড়ে ৭০ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি ছিল। রাজনৈতিক প্রভাব এবং অযৌক্তিক প্রকল্প ব্যয়ের মাধ্যমে ১৪ থেকে ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ অপচয় হয়েছে।

প্রেস সচিব বলেন, বৈঠকে তৃতীয় পক্ষ দিয়ে বড় বড় প্রকল্প মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অতিরিক্ত ব্যয়ের বিষয়গুলো তৃতীয় পক্ষ দিয়ে মূল্যায়ন করা হবে। যেমন-মেট্রোরেলের আরেকটি প্রকল্পে আগের সরকারের যে ব্যয় ধরা হয়েছিল, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক মূল্যায়ন করে দেখেছে, ৫০০ মিলিয়ন ডলার এখানেই সাশ্রয় করা যায়। এ রকম অনেক প্রকল্পের ক্ষেত্রেৃ এটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’

শফিকুল আলম বলেন, বৈঠকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল, সরকারের প্রতিটি স্তরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ই-ফাইলিং চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (বিডা) ই-ফাইলিং আছে। কিন্তু সরকারের অনেক মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় ই-ফাইলিং নাই। সে ক্ষেত্রে ই- ফাইলিংয়ে কোনও সিদ্ধান্ত পাঠানো হলো আরেক জায়গায় পুরো বিষয়টি ম্যানুয়ালি করতে হচ্ছে। এ কারণে সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া কিছুটা ধীরগতির হয়ে যায়। এই জায়গাটিতে কীভাবে গতি বাড়ানো যায় এবং কোনও ফাইল যেন ম্যানুয়ালি না নড়ে সেই জায়গায় কত দ্রুত কাজ করা যায়, সে বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ, সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।