Dhaka বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন অনুড়া দিশানায়েকে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

শ্রীলঙ্কার বামপন্থী প্রেসিডেন্ট অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে রাজধানী কলম্বোয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শপথ গ্রহণ করেছেন।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

অনুড়া (৫৫) ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোটের নেতা হিসেবে আরও ৩৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বীকে শনিবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত করেন।

২০২২ সালে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট ও তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রধান গোতাবায়া রাজাপাক্সের পলায়নের পর এটাই ছিল দেশটিতে প্রথম নির্বাচন। অনুড়া পেয়েছেন গণনাকৃত ভোটের ৪২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাজিথ প্রেমাদাসা পেয়েছেন ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট। দ্বিতীয় ভোট গণনায় দুইজনের ভোট কিছুটা বেড়েছে।

প্রথম বামপন্থী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দিসানায়েকে শপথ নেওয়ার পরপরই বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের প্রতি জনগণের আস্থা পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্য আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি জাদু দেখাই না, আমি জাদুকর নই। এমন কিছু আছে যা আমি জানি এবং এমন কিছু থাকতে পারে যা আমি জানি না। তবে আমি সেরা পরামর্শ চাইব এবং আমার সেরাটাই করব। এজন্য সবার সহযোগিতা চাই।’

এর আগে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ৫৫ বছর বয়সী দিশানায়েকে বলেন, তার এই বিজয় বহু লোকের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত। দীর্ঘ এই সংগ্রামের পেছনে রয়েছে বহু লোকের ঘাম, অশ্রু ও জীবনদানের মতো ঘটনা। তিনি বলেন, ‘আজ আমরা শ্রীলঙ্কার নতুন ইতিহাস রচনার জন্য একত্রিত হয়েছি।’

শ্রীলঙ্কার উৎপাদন, কৃষি ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। শ্রীলঙ্কাকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি দিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিটি চালিয়ে যাওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন। দিসানায়েক শপথ নেওয়ার আগেই পদত্যাগ করেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী দিনেশ গুনাবরদেনা।

দিসানায়েকের উত্থানের গল্প অনেকটা রূপকথার মতো। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিবিদদের চেয়ে নিজেকে ভিন্ন হিসেবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন মার্ক্সবাদী এই নেতা।

১৯৬৮ সালে জন্ম নেওয়া দিসানায়েক ছাত্রজীবনেই রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শ্রীলঙ্কার দুর্নীতি ও দুর্বল শাসনের কঠোর সমালোচক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। ২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ১৭তম জাতীয় কনভেনশনে জেভিপির নেতা হিসেবে নির্বাচিত হন দিসানায়েক। তার এই দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রা তাকে শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে।

এবারের নির্বাচনে এনপিপি জোটের প্রার্থী ছিলেন জেভিপি প্রধান অনুরা কুমারা দিসানায়েক। এই জোট এর আগে কখনো শ্রীলঙ্কার বিরোধী দলও ছিল না। দেশটির ২২৫ সদস্যের পার্লামেন্টে এই জোটের আসন ছিল মাত্র তিনটি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন অনুড়া দিশানায়েকে

প্রকাশের সময় : ০৪:৩৬:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

শ্রীলঙ্কার বামপন্থী প্রেসিডেন্ট অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে রাজধানী কলম্বোয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শপথ গ্রহণ করেছেন।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

অনুড়া (৫৫) ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোটের নেতা হিসেবে আরও ৩৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বীকে শনিবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত করেন।

২০২২ সালে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট ও তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রধান গোতাবায়া রাজাপাক্সের পলায়নের পর এটাই ছিল দেশটিতে প্রথম নির্বাচন। অনুড়া পেয়েছেন গণনাকৃত ভোটের ৪২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাজিথ প্রেমাদাসা পেয়েছেন ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট। দ্বিতীয় ভোট গণনায় দুইজনের ভোট কিছুটা বেড়েছে।

প্রথম বামপন্থী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দিসানায়েকে শপথ নেওয়ার পরপরই বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের প্রতি জনগণের আস্থা পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্য আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি জাদু দেখাই না, আমি জাদুকর নই। এমন কিছু আছে যা আমি জানি এবং এমন কিছু থাকতে পারে যা আমি জানি না। তবে আমি সেরা পরামর্শ চাইব এবং আমার সেরাটাই করব। এজন্য সবার সহযোগিতা চাই।’

এর আগে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ৫৫ বছর বয়সী দিশানায়েকে বলেন, তার এই বিজয় বহু লোকের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত। দীর্ঘ এই সংগ্রামের পেছনে রয়েছে বহু লোকের ঘাম, অশ্রু ও জীবনদানের মতো ঘটনা। তিনি বলেন, ‘আজ আমরা শ্রীলঙ্কার নতুন ইতিহাস রচনার জন্য একত্রিত হয়েছি।’

শ্রীলঙ্কার উৎপাদন, কৃষি ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। শ্রীলঙ্কাকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি দিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিটি চালিয়ে যাওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন। দিসানায়েক শপথ নেওয়ার আগেই পদত্যাগ করেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী দিনেশ গুনাবরদেনা।

দিসানায়েকের উত্থানের গল্প অনেকটা রূপকথার মতো। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিবিদদের চেয়ে নিজেকে ভিন্ন হিসেবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন মার্ক্সবাদী এই নেতা।

১৯৬৮ সালে জন্ম নেওয়া দিসানায়েক ছাত্রজীবনেই রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শ্রীলঙ্কার দুর্নীতি ও দুর্বল শাসনের কঠোর সমালোচক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। ২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ১৭তম জাতীয় কনভেনশনে জেভিপির নেতা হিসেবে নির্বাচিত হন দিসানায়েক। তার এই দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রা তাকে শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে।

এবারের নির্বাচনে এনপিপি জোটের প্রার্থী ছিলেন জেভিপি প্রধান অনুরা কুমারা দিসানায়েক। এই জোট এর আগে কখনো শ্রীলঙ্কার বিরোধী দলও ছিল না। দেশটির ২২৫ সদস্যের পার্লামেন্টে এই জোটের আসন ছিল মাত্র তিনটি।