নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
শামীম ওসমানকে নারায়ণগঞ্জের ‘গডফাদার’ বলে উল্লেখ করেছেন জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
জনসভায় নারায়ণগঞ্জবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের গডফাদার কোথায়? যিনি আমাদের একজন আমিরকে বলেছিলেন তার প্রবেশ নিষেধ। সাইনবোর্ডও টানিয়ে রেখেছিলেন।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জের ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে জেলা ও মহানগর জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত আমির বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ এতোদিন অনেক কষ্টে ছিল। এই নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাসের রাজধানী বানিয়ে রাখা হয়েছিল। আমাদের তৎকালীন জামায়াতের আমীর ছিলেন গোলাম আযম। তার বিরুদ্ধে এই শহরের এক গডফাদার নারায়ণগঞ্জের সড়কে ৭২ ফিট লম্বা ব্যনাার টানিয়েছিল। তাতে লিখা ছিল, নারায়ণগঞ্জে গোলাম আযমের প্রবেশ নিষিদ্ধ। ডিসি, এসপির উপস্থিতিতে গডফাদার শামীম ওসমান বলেছিলেন, আমার বিরুদ্ধে খুনের অগ্রিম মামলা করে রাখেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকারের জুলুমের শিকার হয়ে গোলাম আযম সাহেব মারা যান। গডফাদারের সুযোগ হয় নাই? আজ তিনি কোথায়? নারায়ণগঞ্জে নেই? এতো অহংকার ভালো না, দাম্বিকতা ভালো না। সন্ত্রাসকে কখনো পশ্রয় দিতে হয় না। তাহলে দুনিয়াতেই তার করুণ পরিণতি ভোগ করতে হয়। এছাড়া আখিরাতে তাকে শূলে চড়াবেন। যেটা হবে আগুনের মহাকুন্ড। তাই বলি, তওবা করুন। মানুষ মতোন মানুষ হোন।
তিনি বলেন, অহংকার ভালো জিনিস নয়। দুনিয়াতেই করুণ পরিণতি ভোগ করতে হয়। আজ সেই গডফাদার কোথায় আছেন। নারায়ণগঞ্জবাসী যুগ যুগ ধরে কষ্টে আছেন। নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাসের রাজধানী বানিয়ে রেখেছিল।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়েও দেশের মধ্যে উসকানি দিয়ে উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। মুক্তিপাগল মানুষ এসব সহ্য করবে না। উস্কানির ফলে বর্তমানে দেশে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে তার দায়ভার সম্পূর্ণ উস্কানিদাতার।
এ সময় জামায়াত আমির বলেন, শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশের যত টাকা চুরি-ডাকাতি ও লুট করে বিদেশে পাচার করেছে তা অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে ফিরিয়ে আনতে হবে। সে টাকা জনগণের উন্নয়ন কাজে ব্যায় করতে হবে।
তিনি বলেন, গত ৫৪ বছর এই জাতিকে বিভক্ত করে রাখা হয়েছিল। আর সুকৌশলে এই বিভক্তি সৃষ্টি আওয়ামী লীগ করেছিল। তারা বিভক্তির শুরু করেন পাহাড়িদের নিয়ে। তারা ঘোষণা দিয়ে বলেন, আমরা সবাই বাঙ্গালী। কিন্তু এটা নিয়ে পাহাড়িরা প্রতিবাদ করেন। তখন থেকে এই যে বিভক্তি শুরু হয়েছে তা এখনো চলমান রয়েছে। এখনো ওইখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয় নাই। তারা এখন বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে নিজেরা সংঘর্ষে জড়াচ্ছেন। এই বিভক্তি যতোদিন থাকবে ততোদিন এই জাতির মধ্যে একতা সৃষ্টি হবে না। যা দেশের মানুষ গত ৫৩ বছর প্রত্যক্ষ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, দেশের একজন নাগরিকের সব অধিকার পাওয়ার অধিকার আছে। এটাই মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা। আমাদের এই সমাজ হবে বৈষম্যহীন। আওয়ামী লীগ দেশের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। প্রশাসনকে, বিচার ব্যবস্থাকে আওয়ামী লীগ পুরোদমে ধ্বংস করে দিয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আমির মুহাম্মদ আব্দুল জব্বারের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা অঞ্চল দক্ষিণের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন প্রমুখ।