নিজস্ব প্রতিবেদক :
পবিত্র রমজান মাসের ১৫তম রোজা। একইসঙ্গে রমজান মাসের তৃতীয় জুমা। তৃতীয় এই জুমার নামাজ পড়তে রাজধানীর মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। প্রতিটি মসজিদের সামনের সড়কে একপাশ ভরে যায় মুসল্লিদের নামাজের সারিতে।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) জুমার নামাজের রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদগুলোতে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যেই রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লিতে পূর্ণ হয়ে যায়। দুপুর একটা বাজতেই মসজিদের প্রতিটি তলা পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
এদিকে, নামাজের পূর্ব মুহূর্তে জায়গা না পেয়ে মুসল্লিরা মসজিদের ওপরে-নিচে, উত্তর ও দক্ষিণ গেটের সিঁড়িতে, এমনকি মসজিদের বাইরে যে যেখানে পেরেছেন রোদ উপেক্ষা করে নামাজ আদায়ের জন্য অপেক্ষা করেছেন।
দুপুর একটা বাজতেই বায়তুল মোকাররম মসজিদ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। নামাজে জায়গা না পেয়ে মুসল্লিরা মসজিদের ওপরে-নিচে, উত্তর ও দক্ষিণ গেটের সিঁড়িতে, এমনকি মসজিদের বাইরে যে যেখানে পেরেছেন রোদ উপেক্ষা করে নামাজ আদায় করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় বায়তুল মোকাররমে আজ নারী ও শিশু মুসল্লিদের উপস্থিতিও উল্লেখযোগ্য।
নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের সাথে কথা হলে তারা জানান, পবিত্র রমজান মাসের শুক্রবার অনেক ফজিলতময় দিন। বায়তুল মোকাররমে বড় জামাত হয়। একসঙ্গে অনেক মানুষ দোয়া করেন। যে কারণে আশপাশে অনেক বড় মসজিদ থাকলেও তারা এখানে এসেছেন।
জুমার নামাজ শেষে বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। দোয়ায় আগুনে সহায়-সম্বল হারানো পরিবারগুলোর জন্য সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে দোয়া পরিচালনা করেন খতিব মুফতি রুহুল আমীন।
দোয়ায় আল্লাহর সাহায্য চেয়ে বলা হয়, বঙ্গবাজারে দেশের স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এই আগুনে হাজারো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অনেকে কোটি টাকা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। আল্লাহ তায়ালার কাছে সবাইকে ধৈর্য ধরার তৌফিক কামনা করা হয়।
দোয়ায় বায়তুল মোকাররম খতিব বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুসলমানরা নির্যাতিত হচ্ছে। বিশেষ করে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনী আগ্রাসন চালাচ্ছে। এই অবস্থায় ফিলিস্তিনি ‘মজলুম’ মুসলমানরা যেন ধৈর্য ধারণ করতে পারেন, সেজন্য দোয়া করা হয়, একইসঙ্গে ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় আল্লাহর সাহায্য কামনা করা হয়।
মুফতি রুহুল আমীন দোয়ায় উল্লেখ করেন, বর্তমানে রজমানের মাগফিরাতের দশক চলছে। এই দশক উপলক্ষ্যে আল্লাহ কোটি কোটি বান্দাকে ক্ষমা করে দেবেন। সেই ক্ষমাপ্রাপ্তদের তালিকায় যেন মসজিদে উপস্থিত সকল মুসল্লিকে রাখা হয়, সেই আকুতি জানানো হয়। এসময় উপস্থিত মুসল্লিরা ‘আমিন’, ‘আল্লাহুম্মা আমিন’ বলেন।
নারায়ণগঞ্জে শহরের চাষাঢ়া নূর মসজিদ, মাসদাইর কবরস্থান মসজিদ, ডিআইটি জামে মসজিদসহ শহরের বিভিন্ন মসজিদগুলোতে দেখা যায়, ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের চোখের পানি ছেড়ে দোয়া করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে।
ডিআইটি ও নূর মসজিদের সামনে বঙ্গবন্ধু সড়কের একপাশে মুসল্লিদের নামাজের কাতারে সারিবদ্ধ হতে দেখা যায়। তীব্র রোদের মধ্যে ও উত্তপ্ত সড়কে দাঁড়িয়ে এসময় জুমার নামাজ আদায় করেছেন তারা।
প্রতিটি মসজিদে জুমার নামাজের পর দেশবাসী ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।
এদিন নামাজের পর শহরের মাসদাইর, পাইকপাড়াসহ বিভিন্ন কবরস্থানে পরিবারের প্রয়াত সদস্যদের রূহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও কবর জিয়ারতে মুসল্লিদের ঢল নামে। অনেকে কবরের পাশে দাঁড়িয়ে কোরআন তেলাওয়াত করেন এবং চোখের পানিতে প্রিয়জন ও স্বজনদের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।