Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে টর্নেডোর তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ২৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের শহরগুলোয় শক্তিশালী টর্নেডোর আঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়িয়েছে। একই ঘটনায় আরও অন্তত শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবর দিয়েছে বিদেশি গণমাধ্যমগুলো। ইতোমধ্যেই ওইসব এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।

রোববার (২ এপ্রিল) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।

স্থানীয় সময় শুক্রবার শক্তিশালী এই টর্নেডো আঘাত হানে। শনিবার তা ক্রমেই দেশটির আরকানসাস অঙ্গরাজ্য হয়ে পূর্বদিকে ধেয়ে যেতে থাকে। এতে অসংখ্য বাড়ি-ঘর ছাড়াও গাছপালা গুঁড়িয়ে যায়।
দেশটির গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, প্রচণ্ড ঝড়ে প্রায় ৮৫ মিলিয়ন লোকের বাসস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে বৈদ্যুতিক লাইন ছিঁড়ে যাওয়ায় কয়েক হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন।

শক্তিশালী এই টর্নেডোয় শনিবার আরকানসাসের গভর্নর সারাহ হাকাবি স্যান্ডার্স শুধু তার রাজ্যেই অন্তত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। এছাড়াও লিটল রক থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে উইনে আরকানসাসে চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি নর্থ লিটল রকে একজন নিহত হওয়া ছাড়াও অন্তত ৫০ জনকে আহতাবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কয়েকদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু অংশে টর্নেডো থেমে থেমে আঘাত হানছে। টর্নেডো আঘাত হানবে, এমন পূর্ভাবাস আগেই দিয়েছিল মার্কিন আবহাওয়া বিভাগ। শনিবার রাতেও অনেক জায়গায় টর্নেডোর আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। আরকানসাস অঙ্গরাজ্যে শক্তিশালী ঝড়ে গাড়ি উল্টানো, গাছ উপড়ে পড়া এবং বিদ্যুৎ লাইন ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ভোগান্তি চরম মাত্রায় পৌঁছেছে সেখানকার বাসিন্দাদের। এই রাজ্যে পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া টেনেসি অঙ্গরাজ্যে সাতজন, ইলিনয়ে চারজন এবং ইন্ডিয়ানায় তিনজন, আলাবামা এবং মিসিসিপি থেকেও প্রাণহানির খবর আসছে।

আরকানসাসের রাজধানী লিটল রকের এক বাসিন্দা ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, তার মনে হচিছল এটা ভয়াবহ। তিনি বলেন, আমি ১৯৮৫ সাল থেকে এখানে আছি। আমি সবকিছু ভালো ভাবেই জানি। কিন্তু এর আগে এমন কিছু দেখিনি।

লিটল রকে একজনের প্রাণহানি ঘটেছে। অপরদিকে ওয়াইনে শহরে চারজন মারা গেছে। ওই শহরের বাসিন্দা হেইডি জেনকিন্স বলেন, আমি শহরের এমন অবস্থা দেখে আমি মর্মাহত।

তিনি বলেন, আমাদের স্কুল, গির্জা সবকিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লোকজন নিজেদের ঘর-বাড়ি হারিয়েছে।

আরকানসাসের গভর্নর জানিয়েছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে পুরো পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি জানান, ফেডারেল সহায়তার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন বাইডেন।

শুক্র ও শনিবার ৬০টির বেশি টর্নেডো আঘাত হেনেছে বলে মার্কিন সরকারের স্টর্ম প্রেডিকশন সেন্টার নিশ্চিত করেছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের প্রায় ছয় লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ইলিনয়েসে একজন মারা গেছে এবং ২৮ জন আহত হয়েছে।

আরও কয়েকদিন প্রচণ্ড বজ্রঝড় ও ভারী বাতাসের শঙ্কাসহ বৈরি আবহাওয়ার সতর্কতা জারি করেছে জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা। প্রবল বাতাস ও শিলাবৃষ্টিরও পূর্বাভাস রয়েছে। মার্কিন বিদ্যুৎ সেবা সংক্রান্ত ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ওহাইও ও পেনসিলভানিয়া সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে পাঁচ লাখ ৯০ হাজারের বেশি মানুষ বিদ্যুৎহীন রয়েছে। সূত্র: বিবিসি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে টর্নেডোর তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ২৬

প্রকাশের সময় : ০২:০১:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ এপ্রিল ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের শহরগুলোয় শক্তিশালী টর্নেডোর আঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়িয়েছে। একই ঘটনায় আরও অন্তত শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবর দিয়েছে বিদেশি গণমাধ্যমগুলো। ইতোমধ্যেই ওইসব এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।

রোববার (২ এপ্রিল) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।

স্থানীয় সময় শুক্রবার শক্তিশালী এই টর্নেডো আঘাত হানে। শনিবার তা ক্রমেই দেশটির আরকানসাস অঙ্গরাজ্য হয়ে পূর্বদিকে ধেয়ে যেতে থাকে। এতে অসংখ্য বাড়ি-ঘর ছাড়াও গাছপালা গুঁড়িয়ে যায়।
দেশটির গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, প্রচণ্ড ঝড়ে প্রায় ৮৫ মিলিয়ন লোকের বাসস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে বৈদ্যুতিক লাইন ছিঁড়ে যাওয়ায় কয়েক হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন।

শক্তিশালী এই টর্নেডোয় শনিবার আরকানসাসের গভর্নর সারাহ হাকাবি স্যান্ডার্স শুধু তার রাজ্যেই অন্তত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। এছাড়াও লিটল রক থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে উইনে আরকানসাসে চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি নর্থ লিটল রকে একজন নিহত হওয়া ছাড়াও অন্তত ৫০ জনকে আহতাবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কয়েকদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু অংশে টর্নেডো থেমে থেমে আঘাত হানছে। টর্নেডো আঘাত হানবে, এমন পূর্ভাবাস আগেই দিয়েছিল মার্কিন আবহাওয়া বিভাগ। শনিবার রাতেও অনেক জায়গায় টর্নেডোর আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। আরকানসাস অঙ্গরাজ্যে শক্তিশালী ঝড়ে গাড়ি উল্টানো, গাছ উপড়ে পড়া এবং বিদ্যুৎ লাইন ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ভোগান্তি চরম মাত্রায় পৌঁছেছে সেখানকার বাসিন্দাদের। এই রাজ্যে পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া টেনেসি অঙ্গরাজ্যে সাতজন, ইলিনয়ে চারজন এবং ইন্ডিয়ানায় তিনজন, আলাবামা এবং মিসিসিপি থেকেও প্রাণহানির খবর আসছে।

আরকানসাসের রাজধানী লিটল রকের এক বাসিন্দা ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, তার মনে হচিছল এটা ভয়াবহ। তিনি বলেন, আমি ১৯৮৫ সাল থেকে এখানে আছি। আমি সবকিছু ভালো ভাবেই জানি। কিন্তু এর আগে এমন কিছু দেখিনি।

লিটল রকে একজনের প্রাণহানি ঘটেছে। অপরদিকে ওয়াইনে শহরে চারজন মারা গেছে। ওই শহরের বাসিন্দা হেইডি জেনকিন্স বলেন, আমি শহরের এমন অবস্থা দেখে আমি মর্মাহত।

তিনি বলেন, আমাদের স্কুল, গির্জা সবকিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লোকজন নিজেদের ঘর-বাড়ি হারিয়েছে।

আরকানসাসের গভর্নর জানিয়েছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে পুরো পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি জানান, ফেডারেল সহায়তার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন বাইডেন।

শুক্র ও শনিবার ৬০টির বেশি টর্নেডো আঘাত হেনেছে বলে মার্কিন সরকারের স্টর্ম প্রেডিকশন সেন্টার নিশ্চিত করেছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের প্রায় ছয় লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ইলিনয়েসে একজন মারা গেছে এবং ২৮ জন আহত হয়েছে।

আরও কয়েকদিন প্রচণ্ড বজ্রঝড় ও ভারী বাতাসের শঙ্কাসহ বৈরি আবহাওয়ার সতর্কতা জারি করেছে জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা। প্রবল বাতাস ও শিলাবৃষ্টিরও পূর্বাভাস রয়েছে। মার্কিন বিদ্যুৎ সেবা সংক্রান্ত ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ওহাইও ও পেনসিলভানিয়া সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে পাঁচ লাখ ৯০ হাজারের বেশি মানুষ বিদ্যুৎহীন রয়েছে। সূত্র: বিবিসি।