মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বালিগাঁও বাজার ব্রিজের ওপরে পার্কিং করা গাংচিল পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এতে গাড়ির ভেতরে ঘুমন্ত অবস্থায় হেলপারের পুড়ে মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে উপজেলার বালিগাঁও বাজারসংলগ্ন সেতুতে গাঙচিল পরিবহনের একটি বাসে এই আগুন লাগে।
নিহত হেলপার সাহাবির মিয়া (১৪) লৌহজং উপজেলার পালগাঁও পাঠানবাড়ির সোহেল মিয়ার ছেলে।
মুন্সিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, রাত আড়াইটার দিকে খবর পেয়ে লৌহজং ও টঙ্গিবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বাসের ভেতর হেলপার ঘুমিয়েছিল। পুরো শরীর দগ্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। বাসটিতে কোনো বৈদ্যুতিক সংযোগ ছিল না।
শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, সাধারণত চালক-হেলপার বাসে কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমায়। তবে কেউ আগুন লাগিয়েছে কি না, কিংবা কীভাবে আগুনের সূত্রপাত সেই কারণ উদ্ঘাটনের জন্য তদন্ত চলছে।
নিহতের মা মুন্নী বেগম বলেন, আমার স্বামী নেশা-পানি করে। আমার ও আমার সন্তানদের কোনো খোঁজখবর নেয় না। আগে আমার ছেলেটাকে বোরকার কাজে দিয়েছিলাম। এখন দুই বছর যাবত গাড়ির কাজ করে। আগে অন্য জায়গায় কাজ করত। এক বছর ধরে এখানে গাড়িতে কাজ করছে। রাতে ও গাড়িতেই ঘুমাত। মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসত। ও-ই আমাদের আয় করে খাওয়াত বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
নিহতের নানা মুজিবুর পাঠান বলেন, আমার নাতিটা আয় করে সংসার চালাত। মেয়ে জামাই কোনো খোঁজখবর নেয় না। ওর ছোট একটা বোন আছে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। সংসারের সব খরচ ও-ই দিত। তিনদিন আগে বাড়ি থেকে বের হয় সাহাবির। সারাদিন গাড়িতে হেলপারি করে রাতে গাড়িতেই ঘুমাত। আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার পরে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। এখন টঙ্গিবাড়ী থানায় আছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টঙ্গিবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিদুল ইসলাম বলেন, বাসে আগুনে দগ্ধ হয়ে ঘুমন্ত হেলপার নিহত হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কয়েলের আগুন থেকে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যুর মামলা করা হচ্ছে। তদন্তে মৃত্যুর অন্য কারণ পাওয়া গেলে সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।