Dhaka শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুদ্রা বিনিময়ে নতুন পদ্ধতি চালু করল বাংলাদেশ ব্যাংক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৯:৩৭:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ২২৬ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রথমবারের মতো মুদ্রা অদলবদল বা সোয়াপ ব্যবস্থা চালু করলো বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে উদ্বৃত্ত ডলার থাকলে তা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়ে তারা সমপরিমাণ টাকা ধার নিতে পারবে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংক উভয়েই লাভবান হবে।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত এ সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি ডিপার্টমেন্ট (এফইপিডি)।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, স্থানীয় মুদ্রাবাজার গতিশীল করতে কারেন্সি সোয়াপ পদ্ধতি চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে ডলার বা যে কোনো স্বীকৃত বৈদেশিক মুদ্রা জমা রেখে টাকা নেওয়া যাবে। আবার টাকা জমা রেখে ডলার বা অন্য স্বীকৃত মুদ্রা নেওয়া যাবে। সোয়াপের ক্ষেত্রে ওই দিনের বৈদেশিক মুদ্রার বাজারভিত্তিক দর হিসাব করা হবে। শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর সোয়াপে কোনো সুদ আরোপ হবে না। তবে প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ক্ষেত্রে টাকার নীতি সুদহার রেপো এবং ডলারের বেঞ্চমার্ক রেট সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেটের (এসওএফআর) মধ্যে যে পার্থক্য থাকবে সে পরিমাণ সুদ পাবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, সোয়াপের সাধারণ মেয়াদ হবে ৭ থেকে ৯০ দিন। তবে ব্যাংক চাইলে রোলওভার করতে পারবে। আর যে মুদ্রায় অর্থ নেওয়া হবে নির্ধারিত মেয়াদ শেষে আবার সেই মুদ্রায়ই অর্থ ফেরত দিতে হবে। সোয়াপের দিন যে বিনিময় হার হবে সেটি ধরেই মেয়াদপূর্তির তারিখে অর্থ ফেরত পাবে ব্যাংক।

এর মাধ্যমে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম অনুযায়ী, ডলার নিয়ে ব্যাংকগুলোকে টাকা ধার দিতে পারবে বাংলাদেশ। বর্তমানে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে এক ডলার বিক্রির দর (স্পট রেট) হলো ১১০ টাকা।

এদিকে ব্যাংকগুলো যখন তাদের ডলার ফেরত নেবে, তাদের টাকায় সুদ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সুদহার হবে সোফর রেট এবং রেপো রেটের মধ্যকার পার্থক্য।

বর্তমানে সোফর সুদহার ৫ দশমিক ৩ শতাংশ, আর রেপো সুদহার হলো ৮ শতাংশ। এখানে পার্থক্য হচ্ছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। মুদ্রা অদলবদলের জন্য বার্ষিক এই হারে সুদ দিতে হবে ব্যাংকগুলোকে।

বর্তমানে ব্যাংকগুলো ৮ শতাংশ বার্ষিক সুদহারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের থেকে অর্থ ধার করে। কিন্তু তারা মুদ্রা অদলবদলের ক্ষেত্রে বার্ষিক ২ দশমিক ৭ শতাংশ হারে সুদ দেবে।

জানা যায়, বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজেদের প্রয়োজনে একে অপরের মধ্যে ডলার ও টাকার অদলবদল করে থাকে। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে এ অদলবদলের সুবিধা চালু হলো। মুদ্রা ব্যবস্থাপনার আওতায় নতুন এ বিধান চালু করা হয়েছে। বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকের হাতে থাকা অতিরিক্ত ডলার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা অন্য ব্যাংকের কাছে বিক্রি করা যায়। তবে প্রয়োজনের সময় ওই ডলার আবার ফেরত পাওয়া যাবে, এ নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু অদলবদল বা সোয়াপ ব্যবস্থায় সেই নিশ্চয়তা রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ব্যবস্থার আওতায় সর্বনিম্ন ৫০ লাখ ডলার বা তার সমপরিমাণ টাকা অদলবদল করা যাবে। এ সুবিধা নিতে হলে আগ্রহী ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চুক্তি হবে। সেই চুক্তি অনুযায়ী, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেদিন বাংলাদেশ ব্যাংকে ডলার জমা দেবে, ওই দিনের ডলারের বিনিময়মূল্য হিসাবে সমপরিমাণ টাকা পেয়ে যাবে। একইভাবে নির্ধারিত সময় পর টাকা জমা দিয়ে ডলার ফেরত নিতে পারবে বলেও জানান তারা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

উপদেষ্টা পরিষদের ভেতরেও মাহফুজকে অদপস্ত ও হত্যার মৌন সম্মতি তৈরি করা হয়েছে : নাহিদ ইসলাম

মুদ্রা বিনিময়ে নতুন পদ্ধতি চালু করল বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রকাশের সময় : ০৯:৩৭:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রথমবারের মতো মুদ্রা অদলবদল বা সোয়াপ ব্যবস্থা চালু করলো বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে উদ্বৃত্ত ডলার থাকলে তা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়ে তারা সমপরিমাণ টাকা ধার নিতে পারবে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংক উভয়েই লাভবান হবে।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত এ সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি ডিপার্টমেন্ট (এফইপিডি)।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, স্থানীয় মুদ্রাবাজার গতিশীল করতে কারেন্সি সোয়াপ পদ্ধতি চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে ডলার বা যে কোনো স্বীকৃত বৈদেশিক মুদ্রা জমা রেখে টাকা নেওয়া যাবে। আবার টাকা জমা রেখে ডলার বা অন্য স্বীকৃত মুদ্রা নেওয়া যাবে। সোয়াপের ক্ষেত্রে ওই দিনের বৈদেশিক মুদ্রার বাজারভিত্তিক দর হিসাব করা হবে। শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর সোয়াপে কোনো সুদ আরোপ হবে না। তবে প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ক্ষেত্রে টাকার নীতি সুদহার রেপো এবং ডলারের বেঞ্চমার্ক রেট সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেটের (এসওএফআর) মধ্যে যে পার্থক্য থাকবে সে পরিমাণ সুদ পাবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, সোয়াপের সাধারণ মেয়াদ হবে ৭ থেকে ৯০ দিন। তবে ব্যাংক চাইলে রোলওভার করতে পারবে। আর যে মুদ্রায় অর্থ নেওয়া হবে নির্ধারিত মেয়াদ শেষে আবার সেই মুদ্রায়ই অর্থ ফেরত দিতে হবে। সোয়াপের দিন যে বিনিময় হার হবে সেটি ধরেই মেয়াদপূর্তির তারিখে অর্থ ফেরত পাবে ব্যাংক।

এর মাধ্যমে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম অনুযায়ী, ডলার নিয়ে ব্যাংকগুলোকে টাকা ধার দিতে পারবে বাংলাদেশ। বর্তমানে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে এক ডলার বিক্রির দর (স্পট রেট) হলো ১১০ টাকা।

এদিকে ব্যাংকগুলো যখন তাদের ডলার ফেরত নেবে, তাদের টাকায় সুদ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সুদহার হবে সোফর রেট এবং রেপো রেটের মধ্যকার পার্থক্য।

বর্তমানে সোফর সুদহার ৫ দশমিক ৩ শতাংশ, আর রেপো সুদহার হলো ৮ শতাংশ। এখানে পার্থক্য হচ্ছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। মুদ্রা অদলবদলের জন্য বার্ষিক এই হারে সুদ দিতে হবে ব্যাংকগুলোকে।

বর্তমানে ব্যাংকগুলো ৮ শতাংশ বার্ষিক সুদহারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের থেকে অর্থ ধার করে। কিন্তু তারা মুদ্রা অদলবদলের ক্ষেত্রে বার্ষিক ২ দশমিক ৭ শতাংশ হারে সুদ দেবে।

জানা যায়, বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজেদের প্রয়োজনে একে অপরের মধ্যে ডলার ও টাকার অদলবদল করে থাকে। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে এ অদলবদলের সুবিধা চালু হলো। মুদ্রা ব্যবস্থাপনার আওতায় নতুন এ বিধান চালু করা হয়েছে। বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকের হাতে থাকা অতিরিক্ত ডলার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা অন্য ব্যাংকের কাছে বিক্রি করা যায়। তবে প্রয়োজনের সময় ওই ডলার আবার ফেরত পাওয়া যাবে, এ নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু অদলবদল বা সোয়াপ ব্যবস্থায় সেই নিশ্চয়তা রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ব্যবস্থার আওতায় সর্বনিম্ন ৫০ লাখ ডলার বা তার সমপরিমাণ টাকা অদলবদল করা যাবে। এ সুবিধা নিতে হলে আগ্রহী ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চুক্তি হবে। সেই চুক্তি অনুযায়ী, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেদিন বাংলাদেশ ব্যাংকে ডলার জমা দেবে, ওই দিনের ডলারের বিনিময়মূল্য হিসাবে সমপরিমাণ টাকা পেয়ে যাবে। একইভাবে নির্ধারিত সময় পর টাকা জমা দিয়ে ডলার ফেরত নিতে পারবে বলেও জানান তারা।