আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধের মধ্যেই পাশের দেশ মিসরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। মিশরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এমন একসময়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যখন দেশটিতে মূল্যস্ফীতি প্রকট আকার ধারণ করেছে।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হওয়া ভোট চলবে আগামী মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে তৃতীয়বারের মতো মিসরের ক্ষমতায় আসতে পারেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসি। ১৮ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হতে পারে।
দেশটির জাতীয় নির্বাচন কমিটি (এনইসি) প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য সমস্ত প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে। স্কুল, যুবকেন্দ্র এবং স্বাস্থ্য ইউনিটসহ ৯ হাজার ৩৭৬টি নির্বাচনী কেন্দ্রের জন্য ১১ হাজার ৬৩১টি উপ-নির্বাচন কমিটি গঠন করেছে।
মূল্যস্ফীতি ছাড়িয়েছে ৪০ শতাংশ। এমনকি বিগত কয়েক বছরে ডলারের বিপরীতে মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটেছে প্রায় অর্ধেক। ১০ কোটি ৬০ লাখ মানুষের দেশটির দুই-তৃতীয়াংশই বর্তমানে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে।
মিসরের জাতীয় নির্বাচন কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুসারে, এবারের নির্বাচনে প্রায় ৬ কোটি ৭০ লাখ মানুষ ভোট দিতে পারবেন। এর মধ্যে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৫০ লাখ মানুষ ভোট দিয়েছেন।
এদিকে গাজা সংকটের কারণে মিশরে নির্বাচনের ডামাডোল অনেকটাই পেছনে পড়ে গেছে। এ অবস্থায় নির্বাচনে বিরোধীদের দমনে রাষ্ট্রশক্তি ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে সিসির বিরুদ্ধে। সরকারনিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমেও নির্বাচনের চেয়ে বেশি উঠে আসছে গাজা সংকটের তথ্য।
মিশরের চতুর্থ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনটি রাজনৈতিক দলের নেতারা সিসিকে চ্যালেঞ্জ করছেন।
সাবেক সামরিক কর্মকর্তা সিসি দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে তৃতীয় মেয়াদে জয়ী হয়ে স্বৈরাচারী ক্ষমতার ভিত্তি সুসংহত করতে যাচ্ছেন সিসি।
২০১৩ সালের ৩ জুন অভ্যুত্থানে ব্রাদারহুডের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুতির মাধ্যমে ক্ষমতায় বসেছিলেন আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসি। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে জয় পান ৯৭ শতাংশ ভোটে। আর এবার ক্ষমতায় গেলে ২০৩০ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ টানা ১৬ বছর মিশরের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকবেন এ স্বৈরশাসক।
২০১৯ সালে একটি সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সিসি সরকার প্রেসিডেন্ট পদের মেয়াদ চার থেকে ছয় বছর বাড়ানোসহ তৃতীয় মেয়াদে কোনো প্রেসিডেন্টকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বৈধতা দেওয়া হয়।