Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মণিপুরে দুই সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে নিহত ১৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারতের মণিপুর রাজ্যে অজ্ঞাত দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে ১৩ জন নিহত হয়েছেন বলে রাজ্যের জ্যেষ্ঠ এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

সোমবার (ডিসেম্বর ৪) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে মণিপুর নতুন করে সংঘাতে প্রাণহানির এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, জাতিগত সহিংসতায় মণিপুরে ১৮০ জনের প্রাণহানির ঘটনার সাত মাস পর বন্দুকযুদ্ধের এই ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যের কর্মকর্তারা বলেছেন, মণিপুরের তেংনোপাল জেলার একটি গ্রামে ভয়াবহ বন্দুকযুদ্ধের খবর পাওয়া গেছে। পরে ওই এলাকা থেকে ১৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। যাদের প্রত্যেকের শরীরে বুলেটের একাধিক আঘাতের ক্ষত রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজ্য পুলিশের জ্যেষ্ঠ ওই কর্মকর্তা টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেছেন, মরদেহের পাশে কোনও অস্ত্র পাওয়া যায়নি। সম্ভবত নিহতের পর অস্ত্রগুলো লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নিহতদের বা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেছেন, তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের কিংবা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া গোষ্ঠী দু’টির পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, সংঘর্ষের ফলে ব্যাপক হতাহত হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে ১৩ লাশ পেয়েছে। মৃতদের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিক তদন্ত অনুসারে – মৃতরা স্থানীয় বাসিন্দা নয়।

মিয়ানমারের সঙ্গে অনিরাপদ সীমান্ত থাকায় সম্প্রতি তেংনোপাল জেলার মানুষ জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সামরিক উত্তেজনা এবং বিক্ষিপ্ত ঘটনার সাক্ষী হয়েছে।

রোববার মণিপুর সরকার ১৮ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্দিষ্ট এলাকা বাদ দিয়ে রাজ্যজুড়ে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরায় চালু করার ঘোষণা দিয়েছে। একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বর্ণিত সিদ্ধান্তটি আইনশৃঙ্খলার উন্নতি বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া মোবাইল ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞার কারণে জনগণের অসুবিধার কথাও স্বীকার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ‘আইন শৃঙ্খলার উন্নতি এবং মোবাইল ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞার কারণে জনগণের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে রাজ্য সরকার স্থগিতাদেশ শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

জাতিগত সহিংসতার পরে ৩ মে থেকে মণিপুর রাজ্যে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত ৮ মাস ধরে মেতেই-কুকি গোষ্ঠী সংঘর্ষে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মণিপুর রাজ্য। ৩ মে ভারতের উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে মেতেই-কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিগত সংঘর্ষ শুরু হয়। এখনও সেখানে সংঘাত চলছে। পরিসংখ্যান বলছে, মণিপুরে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ২০০ জন। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনা মোতায়েন করা হলেও জাতিগত সংঘর্ষ চলছে সেখানে।

কয়েক দিন আগেই ইম্ফলে মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিংয়ের বাংলোর কাছেই এক থানায় হামলা চালিয়ে অস্ত্র লুটের চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। তাদের রুখতে গুলি চালাতে বাধ্য হয় পুলিশ। এছাড়া মণিপুর রাজ্যে মেতেই-কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যেকার জাতিগত সংঘর্ষের সুযোগ নিয়ে হিংসার আগুনে ঘি ঢালছে জঙ্গি সংগঠনগুলো।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

মণিপুরে দুই সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে নিহত ১৩

প্রকাশের সময় : ১১:৩৪:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারতের মণিপুর রাজ্যে অজ্ঞাত দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে ১৩ জন নিহত হয়েছেন বলে রাজ্যের জ্যেষ্ঠ এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

সোমবার (ডিসেম্বর ৪) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে মণিপুর নতুন করে সংঘাতে প্রাণহানির এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, জাতিগত সহিংসতায় মণিপুরে ১৮০ জনের প্রাণহানির ঘটনার সাত মাস পর বন্দুকযুদ্ধের এই ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যের কর্মকর্তারা বলেছেন, মণিপুরের তেংনোপাল জেলার একটি গ্রামে ভয়াবহ বন্দুকযুদ্ধের খবর পাওয়া গেছে। পরে ওই এলাকা থেকে ১৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। যাদের প্রত্যেকের শরীরে বুলেটের একাধিক আঘাতের ক্ষত রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজ্য পুলিশের জ্যেষ্ঠ ওই কর্মকর্তা টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেছেন, মরদেহের পাশে কোনও অস্ত্র পাওয়া যায়নি। সম্ভবত নিহতের পর অস্ত্রগুলো লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নিহতদের বা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেছেন, তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের কিংবা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া গোষ্ঠী দু’টির পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, সংঘর্ষের ফলে ব্যাপক হতাহত হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে ১৩ লাশ পেয়েছে। মৃতদের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিক তদন্ত অনুসারে – মৃতরা স্থানীয় বাসিন্দা নয়।

মিয়ানমারের সঙ্গে অনিরাপদ সীমান্ত থাকায় সম্প্রতি তেংনোপাল জেলার মানুষ জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সামরিক উত্তেজনা এবং বিক্ষিপ্ত ঘটনার সাক্ষী হয়েছে।

রোববার মণিপুর সরকার ১৮ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্দিষ্ট এলাকা বাদ দিয়ে রাজ্যজুড়ে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরায় চালু করার ঘোষণা দিয়েছে। একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বর্ণিত সিদ্ধান্তটি আইনশৃঙ্খলার উন্নতি বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া মোবাইল ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞার কারণে জনগণের অসুবিধার কথাও স্বীকার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ‘আইন শৃঙ্খলার উন্নতি এবং মোবাইল ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞার কারণে জনগণের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে রাজ্য সরকার স্থগিতাদেশ শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

জাতিগত সহিংসতার পরে ৩ মে থেকে মণিপুর রাজ্যে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত ৮ মাস ধরে মেতেই-কুকি গোষ্ঠী সংঘর্ষে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মণিপুর রাজ্য। ৩ মে ভারতের উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে মেতেই-কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিগত সংঘর্ষ শুরু হয়। এখনও সেখানে সংঘাত চলছে। পরিসংখ্যান বলছে, মণিপুরে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ২০০ জন। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনা মোতায়েন করা হলেও জাতিগত সংঘর্ষ চলছে সেখানে।

কয়েক দিন আগেই ইম্ফলে মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিংয়ের বাংলোর কাছেই এক থানায় হামলা চালিয়ে অস্ত্র লুটের চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। তাদের রুখতে গুলি চালাতে বাধ্য হয় পুলিশ। এছাড়া মণিপুর রাজ্যে মেতেই-কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যেকার জাতিগত সংঘর্ষের সুযোগ নিয়ে হিংসার আগুনে ঘি ঢালছে জঙ্গি সংগঠনগুলো।