নিজস্ব প্রতিবেদক :
ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনে শিল্প এলাকাগুলোতে বিদ্যমান অস্থিতিশীল পরিবেশ শান্ত হয়ে এসেছে। তাই বুধবার (১৫ নভেম্বর) থেকে সকল পোশাক কারখানা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি জানান, শ্রম আইনের ১৩/১ ধারায় বন্ধ হওয়া সব পোশাক কারখানা আগামীকাল (বুধবার) থেকে চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। যারা কাজে আসবেন তাদের কাজ করার সুযোগ দেয়া হবে।
এর আগে রোববার (১২ নভেম্বর) পোশাক কারাখানায় কর্মচারী ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং কারখানার সম্পত্তি রক্ষার স্বার্থে ১৩০টি পোশাক কারখানার সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
তিনি বলেন, মজুরি বাড়ানোর পরও আন্দোলনের নামে বিভিন্ন জায়গায় কারখানা ভাঙচুর করা হচ্ছে। মজুরি ঘোষণার পর থেকে বেশকিছু কারখানায় অজ্ঞাতনামা কিছু উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিক অযৌক্তিক দাবিতে বেআইনিভাবে কর্মবিরতি পালন করে কর্মকর্তাদের মারধর করেছে। কারখানার ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আশুলিয়া, কাশিমপুর, মিরপুর ও কোনাবাড়ি এলাকার প্রায় ১৩০টি পোশাক কারখানা কারখানা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিজিএমইএ সূত্র জানায়, মজুরি বৃদ্ধির পরও আন্দোলনের নামে বিভিন্ন জায়গায় কারখানা ভাঙচুর করে পোশাকশ্রমিকরা। মজুরি ঘোষণার পর থেকে বেশ কিছু কারখানায় অজ্ঞাতপরিচয় কিছু উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিক অযৌক্তিক দাবিতে বেআইনিভাবে কর্মবিরতি পালন করে। সেসব কারখানার কর্মকর্তাদের মারধর করে। কারখানার ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এসব কারণে পোশাকশিল্প কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, পোশাক কারখানার মালিকরা মূলত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং কারখানার সম্পত্তি রক্ষার স্বার্থে সব কারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ায় বন্ধ সব কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে শ্রমিক, শ্রমিক নেতা, কারখানা মালিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত হয়।
তিনি বলেন, তবে মিরপুর এলাকার দু-একটি কারখানা এখনো বন্ধ রাখা হয়েছে। সেসব কারখানার সংশ্লিষ্ট শ্রমিক-মালিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করি সেগুলোও আগামীকালের মধ্যে খুলে যাবে।
প্রসঙ্গত, গত কিছুদিন ধরে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ করে যাচ্ছেন পোশাক শ্রমিকরা। তাদের দাবি, ন্যূনতম বেতন বাড়ানোর যে ঘোষণা এসেছে, তাতে তারা সন্তুষ্ট নন। সরকার ৫৬ শতাংশ বেতন বাড়ানোর ঘোষণা দিলেও, শ্রমিকদের মধ্যে সামান্য একটি অংশের এই হারে বেতন বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে যারা অভিজ্ঞ শ্রমিক তাদের বেতন বেড়েছে ২০-৩০ শতাংশ।