Dhaka রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিএনপি নেতারা আগুন ধরানোয় উসকানি দিচ্ছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি আবারও আগুন-সন্ত্রাসের পথে হাঁটছে বলে অভিযোগ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিএনপি আজ ঢাকাকে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছে। তাদের থামাতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা আহত হয়েছেন। রাজারবাগ হাসপাতালেই ৩১ জন পুলিশ সদস্য চিকিৎসা নিচ্ছেন।

শনিবার (২৯ জুলাই) রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় আহত পুলিশ সদস্যদের পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা ২০১৪-১৫ সালে দেখেছি অগ্নিসন্ত্রাসের জন্য প্রধানমন্ত্রী দগ্ধদের সেবা দিতে একটি হাসপাতাল করেন। তখন এত মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়েছিল যে, ফলে এই হাসপাতাল করতে হয়েছিল। আজকের ঘটনা আমাদের সেই স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দেয়। আবার কি তারা সেই প্রোগ্রাম নিচ্ছে কি না? আবারও কি ঢাকা অবরোধ করবে কি না, আবারও কি সেই অগ্নিসন্ত্রাসে ফিরে যাবে কি না। আবারো সেই মানুষকে জ্বালিয়ে পুড়ে মারবে কি না, আবারও সেই প্রোগ্রাম তারা দিচ্ছে কি না।

বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত কয়েক দিন ধরে অরাজকতা ও জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টির জন্য বিএনপি বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে। গতকালকে তারা একটি বড় কর্মসূচি দিয়েছিলেন এবং তার আগেও সারা বাংলাদেশ থেকে নেতাকর্মীদের এনে জড়ো করেছিলেন। রাজনৈতিক দলগুলো কর্মসূচি পালন করবে এখানে সরকারের কোনো বাধা নেই।

তিনি বলেন, তবে যখন কেউ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে, জানমালের ক্ষতি করবে, কাউকে মারার চেষ্টা কিংবা হত্যা করবে অথবা গাড়ি ভাঙচুর করবে তখন নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে। গতকাল দেখা গেছে, মহাসমাবেশ থেকে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা সবসময় দেখেছি পুলিশ কখনো তাদের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পেছনে ফিরে না। নিহত হবেন না কি আহত হবেন এসব বিষয়ে ভাবে না পুলিশ। জঙ্গি দমন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা তা দেখেছি। আজকেও পুলিশ বীরত্বের সঙ্গে সন্ত্রাস মোকাবিলা করেছে।

বিএনপি ঢাকাকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার একটা পরিকল্পনা নিয়েছিল উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমরা বিএনপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে দেখেছি, তারা রাস্তায় অবস্থান করে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে সব যানবাহন বন্ধ করে দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৩১ জন পুলিশ সদস্য রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আরও কয়েকটি হাসপাতালে আহত কয়েকজন পুলিশ সদস্য চিকিৎসা নিয়েছেন।

অতিরিক্ত ডিআইজি মেহেদীর ওপর বৃষ্টির মতো ঢিল মারা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কিন্তু তার বদলে যে একটা রিভেন্স নেওয়া সেটি কিন্তু তিনি বা পুলিশ করেনি। নীরবে তারা সহ্য করেছেন এবং তাদের পিছু হটতে বাধ্য করেছেন।

আসাদুজ্জামান খান কামাল আরও বলেন, আমরা কিছুক্ষণ আগে বিএনপির এক নেত্রী নিপুণ রায়ের ফেসবুকের একটি অডিও শুনেছি। তিনি বলছেন, তোমরা আগুন ধরাও। এগুলো আমাদের দেখাতে হবে। জায়গা মতো দেখাতে হবে। জায়গা কোনটা সেটা তিনি নিজেই জানেন। আগুন জ্বালানোর হুকুম তিনি দিচ্ছেন। সব জায়গা থেকে বিএনপি নেতারা এ ধরনের কাজের জন্য উৎসাহ দিচ্ছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছি।

বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে অসুস্থ হয়ে পড়া ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতা আমান যখন আটক হন, তখন তিনি রাস্তায় পড়ে যান। পুলিশ বাহিনী মানবিকতা দেখিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

দাউ দাউ করে আগুন জ্বালানোর হুকুম তিনি দিচ্ছেন। সব জায়গা থেকে বিএনপির নেতারা এ ধরনের কাজের জন্য উৎসাহ দিচ্ছেন। আমরা এটার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছি।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমাদের পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে, এটা যেমন সত্য, তেমনি আমি আহ্বান করবো, ২০১৪-১৫-তে যেভাবে জ্বলাও-পোড়াওয়ের নৃশংসতা ঘটিয়েছিল, তার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়। এগুলো ঘটালে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীসহ এই দেশের মানুষ আর এসব সহ্য করবে না।

এ সময় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হোক এমন কিছু করতে দেওয়া হবে না উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আমাদের বাধা নেই। কিন্তু জনদুর্ভোগ তৈরি করলে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পাকুন্দিয়ায় শরীফ হত্যা মামলার আরো এক আসামী গ্রেফতার

বিএনপি নেতারা আগুন ধরানোয় উসকানি দিচ্ছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৯:৪৫:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি আবারও আগুন-সন্ত্রাসের পথে হাঁটছে বলে অভিযোগ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিএনপি আজ ঢাকাকে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছে। তাদের থামাতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা আহত হয়েছেন। রাজারবাগ হাসপাতালেই ৩১ জন পুলিশ সদস্য চিকিৎসা নিচ্ছেন।

শনিবার (২৯ জুলাই) রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় আহত পুলিশ সদস্যদের পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা ২০১৪-১৫ সালে দেখেছি অগ্নিসন্ত্রাসের জন্য প্রধানমন্ত্রী দগ্ধদের সেবা দিতে একটি হাসপাতাল করেন। তখন এত মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়েছিল যে, ফলে এই হাসপাতাল করতে হয়েছিল। আজকের ঘটনা আমাদের সেই স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দেয়। আবার কি তারা সেই প্রোগ্রাম নিচ্ছে কি না? আবারও কি ঢাকা অবরোধ করবে কি না, আবারও কি সেই অগ্নিসন্ত্রাসে ফিরে যাবে কি না। আবারো সেই মানুষকে জ্বালিয়ে পুড়ে মারবে কি না, আবারও সেই প্রোগ্রাম তারা দিচ্ছে কি না।

বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত কয়েক দিন ধরে অরাজকতা ও জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টির জন্য বিএনপি বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে। গতকালকে তারা একটি বড় কর্মসূচি দিয়েছিলেন এবং তার আগেও সারা বাংলাদেশ থেকে নেতাকর্মীদের এনে জড়ো করেছিলেন। রাজনৈতিক দলগুলো কর্মসূচি পালন করবে এখানে সরকারের কোনো বাধা নেই।

তিনি বলেন, তবে যখন কেউ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে, জানমালের ক্ষতি করবে, কাউকে মারার চেষ্টা কিংবা হত্যা করবে অথবা গাড়ি ভাঙচুর করবে তখন নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে। গতকাল দেখা গেছে, মহাসমাবেশ থেকে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা সবসময় দেখেছি পুলিশ কখনো তাদের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পেছনে ফিরে না। নিহত হবেন না কি আহত হবেন এসব বিষয়ে ভাবে না পুলিশ। জঙ্গি দমন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা তা দেখেছি। আজকেও পুলিশ বীরত্বের সঙ্গে সন্ত্রাস মোকাবিলা করেছে।

বিএনপি ঢাকাকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার একটা পরিকল্পনা নিয়েছিল উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমরা বিএনপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে দেখেছি, তারা রাস্তায় অবস্থান করে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে সব যানবাহন বন্ধ করে দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৩১ জন পুলিশ সদস্য রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আরও কয়েকটি হাসপাতালে আহত কয়েকজন পুলিশ সদস্য চিকিৎসা নিয়েছেন।

অতিরিক্ত ডিআইজি মেহেদীর ওপর বৃষ্টির মতো ঢিল মারা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কিন্তু তার বদলে যে একটা রিভেন্স নেওয়া সেটি কিন্তু তিনি বা পুলিশ করেনি। নীরবে তারা সহ্য করেছেন এবং তাদের পিছু হটতে বাধ্য করেছেন।

আসাদুজ্জামান খান কামাল আরও বলেন, আমরা কিছুক্ষণ আগে বিএনপির এক নেত্রী নিপুণ রায়ের ফেসবুকের একটি অডিও শুনেছি। তিনি বলছেন, তোমরা আগুন ধরাও। এগুলো আমাদের দেখাতে হবে। জায়গা মতো দেখাতে হবে। জায়গা কোনটা সেটা তিনি নিজেই জানেন। আগুন জ্বালানোর হুকুম তিনি দিচ্ছেন। সব জায়গা থেকে বিএনপি নেতারা এ ধরনের কাজের জন্য উৎসাহ দিচ্ছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছি।

বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে অসুস্থ হয়ে পড়া ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতা আমান যখন আটক হন, তখন তিনি রাস্তায় পড়ে যান। পুলিশ বাহিনী মানবিকতা দেখিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

দাউ দাউ করে আগুন জ্বালানোর হুকুম তিনি দিচ্ছেন। সব জায়গা থেকে বিএনপির নেতারা এ ধরনের কাজের জন্য উৎসাহ দিচ্ছেন। আমরা এটার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছি।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমাদের পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে, এটা যেমন সত্য, তেমনি আমি আহ্বান করবো, ২০১৪-১৫-তে যেভাবে জ্বলাও-পোড়াওয়ের নৃশংসতা ঘটিয়েছিল, তার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়। এগুলো ঘটালে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীসহ এই দেশের মানুষ আর এসব সহ্য করবে না।

এ সময় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হোক এমন কিছু করতে দেওয়া হবে না উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আমাদের বাধা নেই। কিন্তু জনদুর্ভোগ তৈরি করলে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করবে।