Dhaka শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন এগিয়ে আনার সম্ভাবনা গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকে সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আনার সম্ভাবনার বার্তাকে ‘দেশের গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (১৩ জুন) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে উপস্থিতি সাংবাদিকদের তিনি এই মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা আজকে জাতির অনেক প্রতীক্ষিত একটি সুসংবাদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমরা অপেক্ষা করছিলাম যে, যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যে বৈঠকটি প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে অনুষ্ঠিত হয়…প্রায় দুই ঘণ্টার এই বৈঠক নিয়ে গোটা জাতি উৎকণ্ঠার সঙ্গে অপেক্ষা করছিল এবং সবাই অপেক্ষা করছিল যে, আমি যে কথাটি আগেই বলেছিলাম, এই বৈঠকটি টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে।

তিনি বলেন, আল্লাহর কাছে অশেষ কতজ্ঞাতা জানাচ্ছি, সত্যিকার অর্থেই এই বৈঠকটি একটা টার্নিং পয়েন্টে পরিণত হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করলাম, বৈঠকের পরেপরই একটা যৌথ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ওই ঘোষণায় বলা হয়েছে যে, আমাদের দুই নেতার বৈঠকটি ছিল অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ ও সুন্দর পরিবেশে অনুষ্ঠিত। যে বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে তার মধ্যে প্রধান ছিল নির্বাচন ইস্যু। সেই নির্বাচন ইস্যুতে জনাব তারেক রহমানের যে প্রস্তাব, এপ্রিলে যে নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে সেটা উপযুক্ত সময় নয় বিধায় তাকে এগিয়ে নিয়ে আসা। সেক্ষেত্রে গোটা জাতি আনন্দের সঙ্গে লক্ষ্য করলো যে, প্রধান উপদেষ্টা এটাতে সম্মত হয়েছেন। তারা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের এই প্রথম বৈঠকেই তিনি সফল হয়েছেন। এখন যেটা প্রয়োজন, সেটি হলো অতীতের ছোটখাটো কথাবার্তা হয়েছে; সেগুলো ভুলে গিয়ে জাতীয় ঐক্যকে আরও শক্তিশালী করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। একটাই প্রত্যাশা ছোটখাটো সমস্যাগুলো সমাধান করে আমরা যেন অতি দ্রুত একটি নির্বাচনে সুষ্ঠুভাবে সুন্দরভাবে যেতে পারি। জাতির যে আকাঙ্ক্ষা সেটি পূরণ করতে পারি এবং গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্টদের যে কাঠামো সেটিকে নতুন করে গণতান্ত্রিক কাঠামোতে যেন আমরা রূপান্তর করতে পারি।’

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর মাধ্যমে তারেক রহমান আবারও প্রমাণ করলেন, রাজনৈতিক যে দলগুলো রয়েছে সেই দলগুলোর নেতৃত্ব যারা দিচ্ছেন তাদের মধ্যে নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রনায়কোচিত গুণগুলো তার মধ্যে রয়েছে। প্রথম একটি বৈঠকে গোটা জাতি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ছিল। সেই বৈঠকে তিনি আল্লাহর রহমতে সফল হয়েছেন। আমি আমার দলের পক্ষ থেকে, সব নেতা-কর্মীদের পক্ষ থেকে তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, সবকিছু যে অনিশ্চিত অবস্থায় চলে গিয়েছিল সেই অবস্থা কাটিয়ে উঠে তিনি এবং তারেক রহমান, এই দুই নেতা আবার সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, চতুর্দিকে একটা অনিশ্চয়তা ছিল। অনেকে অনেক কথা বলছিলেন। আজকে দুই নেতা প্রমাণ করলেন যে, বাংলাদেশের মানুষ এখনো প্রয়োজনের সময়ে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে এবং নেতারা নেতৃত্ব দিতে পারেন।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। অতীতের কথা ভুলে গিয়ে আমরা সামনে এগিয়ে যাই। আজকে দুই নেতা প্রমাণ করলেন দেশের প্রয়োজনে দেশের মানুষ ঐক্য গড়তে পারে। গণতন্ত্র একটা দিনের বিষয় নয়। গণতন্ত্র একটা কালচার। আমরা বিভেদ ভুলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, অতীতে অনেক ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। অনেক কথা হয়েছে। সেগুলো ভুলে গিয়ে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে আমরা একটি সুন্দর নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আমাদের লক্ষ্য ঐক্যের মাধ্যমে জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্র কাঠামোকে ধ্বংস করেছে। ধ্বংস হওয়া রাষ্ট্র কাঠামো গণতান্ত্রিক উপায়ে পুনর্গঠন করতে হবে।

জুলাই-আগস্টের শহীদদের স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের শহীদরা ফ্যাসিস্টকে পরাজিত করে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তারেক রহমান। তিনি দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। নেতাকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বিনয়ের সঙ্গে তার মা বেগম খালেদা জিয়াকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সঠিকভাবে দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নির্বাচন এগিয়ে আনার সম্ভাবনা গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৭:২৪:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকে সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আনার সম্ভাবনার বার্তাকে ‘দেশের গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (১৩ জুন) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে উপস্থিতি সাংবাদিকদের তিনি এই মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা আজকে জাতির অনেক প্রতীক্ষিত একটি সুসংবাদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমরা অপেক্ষা করছিলাম যে, যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যে বৈঠকটি প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে অনুষ্ঠিত হয়…প্রায় দুই ঘণ্টার এই বৈঠক নিয়ে গোটা জাতি উৎকণ্ঠার সঙ্গে অপেক্ষা করছিল এবং সবাই অপেক্ষা করছিল যে, আমি যে কথাটি আগেই বলেছিলাম, এই বৈঠকটি টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে।

তিনি বলেন, আল্লাহর কাছে অশেষ কতজ্ঞাতা জানাচ্ছি, সত্যিকার অর্থেই এই বৈঠকটি একটা টার্নিং পয়েন্টে পরিণত হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করলাম, বৈঠকের পরেপরই একটা যৌথ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ওই ঘোষণায় বলা হয়েছে যে, আমাদের দুই নেতার বৈঠকটি ছিল অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ ও সুন্দর পরিবেশে অনুষ্ঠিত। যে বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে তার মধ্যে প্রধান ছিল নির্বাচন ইস্যু। সেই নির্বাচন ইস্যুতে জনাব তারেক রহমানের যে প্রস্তাব, এপ্রিলে যে নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে সেটা উপযুক্ত সময় নয় বিধায় তাকে এগিয়ে নিয়ে আসা। সেক্ষেত্রে গোটা জাতি আনন্দের সঙ্গে লক্ষ্য করলো যে, প্রধান উপদেষ্টা এটাতে সম্মত হয়েছেন। তারা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের এই প্রথম বৈঠকেই তিনি সফল হয়েছেন। এখন যেটা প্রয়োজন, সেটি হলো অতীতের ছোটখাটো কথাবার্তা হয়েছে; সেগুলো ভুলে গিয়ে জাতীয় ঐক্যকে আরও শক্তিশালী করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। একটাই প্রত্যাশা ছোটখাটো সমস্যাগুলো সমাধান করে আমরা যেন অতি দ্রুত একটি নির্বাচনে সুষ্ঠুভাবে সুন্দরভাবে যেতে পারি। জাতির যে আকাঙ্ক্ষা সেটি পূরণ করতে পারি এবং গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্টদের যে কাঠামো সেটিকে নতুন করে গণতান্ত্রিক কাঠামোতে যেন আমরা রূপান্তর করতে পারি।’

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর মাধ্যমে তারেক রহমান আবারও প্রমাণ করলেন, রাজনৈতিক যে দলগুলো রয়েছে সেই দলগুলোর নেতৃত্ব যারা দিচ্ছেন তাদের মধ্যে নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রনায়কোচিত গুণগুলো তার মধ্যে রয়েছে। প্রথম একটি বৈঠকে গোটা জাতি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ছিল। সেই বৈঠকে তিনি আল্লাহর রহমতে সফল হয়েছেন। আমি আমার দলের পক্ষ থেকে, সব নেতা-কর্মীদের পক্ষ থেকে তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, সবকিছু যে অনিশ্চিত অবস্থায় চলে গিয়েছিল সেই অবস্থা কাটিয়ে উঠে তিনি এবং তারেক রহমান, এই দুই নেতা আবার সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, চতুর্দিকে একটা অনিশ্চয়তা ছিল। অনেকে অনেক কথা বলছিলেন। আজকে দুই নেতা প্রমাণ করলেন যে, বাংলাদেশের মানুষ এখনো প্রয়োজনের সময়ে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে এবং নেতারা নেতৃত্ব দিতে পারেন।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। অতীতের কথা ভুলে গিয়ে আমরা সামনে এগিয়ে যাই। আজকে দুই নেতা প্রমাণ করলেন দেশের প্রয়োজনে দেশের মানুষ ঐক্য গড়তে পারে। গণতন্ত্র একটা দিনের বিষয় নয়। গণতন্ত্র একটা কালচার। আমরা বিভেদ ভুলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, অতীতে অনেক ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। অনেক কথা হয়েছে। সেগুলো ভুলে গিয়ে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে আমরা একটি সুন্দর নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আমাদের লক্ষ্য ঐক্যের মাধ্যমে জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্র কাঠামোকে ধ্বংস করেছে। ধ্বংস হওয়া রাষ্ট্র কাঠামো গণতান্ত্রিক উপায়ে পুনর্গঠন করতে হবে।

জুলাই-আগস্টের শহীদদের স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের শহীদরা ফ্যাসিস্টকে পরাজিত করে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তারেক রহমান। তিনি দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। নেতাকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বিনয়ের সঙ্গে তার মা বেগম খালেদা জিয়াকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সঠিকভাবে দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন উপস্থিত ছিলেন।