Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নারীদের ধর্মঘটে যোগ দিলেন আইসল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীও!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

মজুরি ও লিঙ্গবৈষম্যের প্রতিবাদে কাজে যোগ না দিয়ে আইসল্যান্ডের হাজারো নারী ধর্মঘট করেছেন। মঙ্গলবারের ওই ধর্মঘটে যোগ দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কাতরিন ইয়াকোবস্তোতিরও। দেশটিতে এমন আন্দোলনের ঘটনা প্রথম না হলেও বিরল।

কাজে সমানাধিকার, সমান মজুরিসহ একাধিক দাবি নিয়ে মঙ্গলবার দিনভর ধর্মঘট করেন আইসল্যান্ডের নারীরা। এদিন কাজে যোগ দেওয়ার পরেই তারা রাস্তায় নেমে আসেন। সব ধরনের নারী কর্মীরাই এই ধর্মঘটে যোগ দেন।

মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও ভয়েস অব আমেরিকা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লিঙ্গ বৈষম্যের প্রতিবাদে আইসল্যান্ডের নারীরা মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দিলে তাদের সঙ্গে যোগ দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ক্যাটরিন জ্যাকবসদোত্তিরও। তিনি বলেন, দেশে এবং দেশের বাইরে নারী-পুরুষের সমান অধিকার আদায়ের সংগ্রাম অত্যন্ত ধীরগতিতে এগোচ্ছে।

ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার পর মঙ্গলবার আইসল্যান্ডের বেশিরভাগ নারী কর্মী নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করায় এই ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রের স্কুল ও লাইব্রেরিগুলো হয় বন্ধ ছিল নয়তো অল্প কয়েক ঘণ্টার জন্য খোলা ছিল। হাসপাতালগুলো বলছে, মঙ্গলবার তারা শুধু জরুরি সেবা দিয়েছে।

এর আগে এই প্রতিবাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী ক্যাটরিন জাকোবসদোত্তির জানান, তিনি মঙ্গলবার কাজে যাবেন না। মন্ত্রিসভার অন্য নারী সদস্যরাও একই সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।

নারীদের এই আন্দোলন আইসল্যান্ডে প্রথম নয়। ১৯৭৫ সাল থেকে এই আন্দোলনের সূত্রপাত। এই নিয়ে চতুর্থবার সেখানকার নারীরা এমন অভিনব আন্দোলনে নামলেন। তবে এই প্রথম দিনভর তারা ধর্মঘট করলেন।

সংবাদমাধ্যমকে নারী প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, কর্মক্ষেত্রে এখনো তাদের সমান অধিকার দেওয়া হয় না। নারীদের চেযে পুরুষ কর্মীরা বেশি পারিশ্রমিক পান। শুধু তাই নয়, বাসায় নারীরা যে কাজ করেন, তার কোনো পারিশ্রমিক নেই। উপরন্তু এত কিছুর পরেও নারীদের পারিবারিক হেনস্থার শিকার হতে হয়।

একটি সমীক্ষা বলছে, আইসল্যান্ডে যত নারী কাজ করেন তার ২২ শতাংশ বিদেশি। বস্তুত, তারাও এদিনের ধর্মঘটে যোগ দিয়েছিলেন।

ধর্মঘটে যোগ দিয়েছিলেন দেশের নারী প্রধানমন্ত্রীও। তিনিও রাস্তায় নেমে বাকি সকলের সঙ্গে ধর্মঘটে যোগ দেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, আইসল্যান্ডে নারীদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন হয়েছে কিন্তু নারীর উন্নয়ন যতটা হওয়া উচিত ছিল, ততটা হয়নি।

নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার দিক দিয়ে আইসল্যান্ডকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রগতিশীল দেশগুলোর অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দেশটি টানা ১৪ বছর ধরে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্সের শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে।

তবে স্ট্যাটিসটিকস আইসল্যান্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কিছু কিছু শিল্প ও পেশায় নারীরা পুরুষদের চেয়ে ২০ শতাংশ কম আয় করছেন। আইসল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় জানা গেছে, আইসল্যান্ডের ৪০ শতাংশ নারী তাদের জীবদ্দশায় অন্তত একবার লিঙ্গভিত্তিক ও যৌন সহিংসতার শিকার হন।

উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে নারীদের এক বিক্ষোভের পর মঙ্গলবারের কর্মসূচিই ছিল প্রথম কোনও পূর্ণ-দিবস ধর্মঘটের ঘটনা। সেসময় ইউরোপের এই দেশটির নারী কর্মজীবীদের প্রায় ৯০ শতাংশই ধর্মঘটে যোগ দিয়েছিলেন।

আবহাওয়া

সাবেক মন্ত্রী দস্তগীরের ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

নারীদের ধর্মঘটে যোগ দিলেন আইসল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীও!

প্রকাশের সময় : ০৮:৫১:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

মজুরি ও লিঙ্গবৈষম্যের প্রতিবাদে কাজে যোগ না দিয়ে আইসল্যান্ডের হাজারো নারী ধর্মঘট করেছেন। মঙ্গলবারের ওই ধর্মঘটে যোগ দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কাতরিন ইয়াকোবস্তোতিরও। দেশটিতে এমন আন্দোলনের ঘটনা প্রথম না হলেও বিরল।

কাজে সমানাধিকার, সমান মজুরিসহ একাধিক দাবি নিয়ে মঙ্গলবার দিনভর ধর্মঘট করেন আইসল্যান্ডের নারীরা। এদিন কাজে যোগ দেওয়ার পরেই তারা রাস্তায় নেমে আসেন। সব ধরনের নারী কর্মীরাই এই ধর্মঘটে যোগ দেন।

মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও ভয়েস অব আমেরিকা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লিঙ্গ বৈষম্যের প্রতিবাদে আইসল্যান্ডের নারীরা মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দিলে তাদের সঙ্গে যোগ দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ক্যাটরিন জ্যাকবসদোত্তিরও। তিনি বলেন, দেশে এবং দেশের বাইরে নারী-পুরুষের সমান অধিকার আদায়ের সংগ্রাম অত্যন্ত ধীরগতিতে এগোচ্ছে।

ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার পর মঙ্গলবার আইসল্যান্ডের বেশিরভাগ নারী কর্মী নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করায় এই ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রের স্কুল ও লাইব্রেরিগুলো হয় বন্ধ ছিল নয়তো অল্প কয়েক ঘণ্টার জন্য খোলা ছিল। হাসপাতালগুলো বলছে, মঙ্গলবার তারা শুধু জরুরি সেবা দিয়েছে।

এর আগে এই প্রতিবাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী ক্যাটরিন জাকোবসদোত্তির জানান, তিনি মঙ্গলবার কাজে যাবেন না। মন্ত্রিসভার অন্য নারী সদস্যরাও একই সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।

নারীদের এই আন্দোলন আইসল্যান্ডে প্রথম নয়। ১৯৭৫ সাল থেকে এই আন্দোলনের সূত্রপাত। এই নিয়ে চতুর্থবার সেখানকার নারীরা এমন অভিনব আন্দোলনে নামলেন। তবে এই প্রথম দিনভর তারা ধর্মঘট করলেন।

সংবাদমাধ্যমকে নারী প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, কর্মক্ষেত্রে এখনো তাদের সমান অধিকার দেওয়া হয় না। নারীদের চেযে পুরুষ কর্মীরা বেশি পারিশ্রমিক পান। শুধু তাই নয়, বাসায় নারীরা যে কাজ করেন, তার কোনো পারিশ্রমিক নেই। উপরন্তু এত কিছুর পরেও নারীদের পারিবারিক হেনস্থার শিকার হতে হয়।

একটি সমীক্ষা বলছে, আইসল্যান্ডে যত নারী কাজ করেন তার ২২ শতাংশ বিদেশি। বস্তুত, তারাও এদিনের ধর্মঘটে যোগ দিয়েছিলেন।

ধর্মঘটে যোগ দিয়েছিলেন দেশের নারী প্রধানমন্ত্রীও। তিনিও রাস্তায় নেমে বাকি সকলের সঙ্গে ধর্মঘটে যোগ দেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, আইসল্যান্ডে নারীদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন হয়েছে কিন্তু নারীর উন্নয়ন যতটা হওয়া উচিত ছিল, ততটা হয়নি।

নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার দিক দিয়ে আইসল্যান্ডকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রগতিশীল দেশগুলোর অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দেশটি টানা ১৪ বছর ধরে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্সের শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে।

তবে স্ট্যাটিসটিকস আইসল্যান্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কিছু কিছু শিল্প ও পেশায় নারীরা পুরুষদের চেয়ে ২০ শতাংশ কম আয় করছেন। আইসল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় জানা গেছে, আইসল্যান্ডের ৪০ শতাংশ নারী তাদের জীবদ্দশায় অন্তত একবার লিঙ্গভিত্তিক ও যৌন সহিংসতার শিকার হন।

উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে নারীদের এক বিক্ষোভের পর মঙ্গলবারের কর্মসূচিই ছিল প্রথম কোনও পূর্ণ-দিবস ধর্মঘটের ঘটনা। সেসময় ইউরোপের এই দেশটির নারী কর্মজীবীদের প্রায় ৯০ শতাংশই ধর্মঘটে যোগ দিয়েছিলেন।