আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
নাইজেরিয়ার অবৈধ তেল শোধনাগারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত ৩৭ জন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে দুই জন গর্ভবতী ছিলেন। নাইজেরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে এই বিস্ফোরণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
বুধবার (৪ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, নাইজেরিয়ার তেল-সমৃদ্ধ নাইজার ডেল্টা অঞ্চলে বেআইনি পরিশোধন একটি সাধারণ ঘটনা। সেখানকার দরিদ্র জনগোষ্ঠী জ্বালানি তৈরি করতে পাইপলাইনগুলিকে ট্যাপ করে। এটি সাধারণ ও বিপদজনক পন্থায় পরিশোধনের সময় প্রায়ই মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে। দক্ষিণ নাইজেরিয়ার একটি অবৈধ তেল শোধনাগারে বিস্ফোরণে দুই গর্ভবতী নারীসহ অন্তত ৩৭ জন দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে মঙ্গলবার স্থানীয় একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
স্থানীয় ওই সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা প্রধান রুফাস ওয়েলেকেম জানিয়েছেন, গত সোমবার ভোররাতে রিভার স্টেটের ইবা এলাকায় বিস্ফোরণের পর প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী ঘটনাস্থলে পোড়া পাম গাছ এবং মোটরবাইকে ঘেরা খোলা জায়গায় ১৫ জনের মৃতদেহ দেখেছেন।
ওয়েলেকেম বলেন, আগুনে পঁয়ত্রিশ জন লোক নিহত হয়। ভাগ্যবান দু’জন মানুষ সেখান থেকে প্রাণ নিয়ে পালাতে পারলেও তারা আজ সকালে হাসপাতালে মারা গেছেন।
স্বজনরা নিহতদের কয়েকজনকে শনাক্ত করে দাফনের জন্য নিয়ে গেছেন বলেও জানান তিনি।
মূলত চরম বেকারত্ব এবং দারিদ্র্যের কারণে নাইজারিয়ায় অবৈধ তেল পরিশোধন আকর্ষণীয় ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। তবে মাঝে মাঝেই এসব অবৈধ শোধনাগারে বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে থাকে।
দেশটির প্রধান প্রধান বিভিন্ন তেল কোম্পানির পাইপলাইন থেকে তেল চুরির পর সেগুলো অবৈধ শোধনাগারে পরিশোধন করা হয়। বিপজ্জনক এই প্রক্রিয়ার কারণে অনেক সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে।
এছাড়া চোরাকারবারীদের অবৈধ এই তেল শোধন প্রক্রিয়ার কারণে পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটির একটি অঞ্চল ভয়াবহ দূষণের শিকার হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই এলাকার কৃষিজমি, নদীনালা এবং এবং উপহ্রদও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নাইজেরিয়া অবশ্য বছরের পর বছর ধরে তেল পরিশোধনের এই অবৈধ শোধনাগারগুলো বন্ধ করার চেষ্টা করে আসছে। এই কাজে সামান্য সাফল্যও পেয়েছে দেশটি।
তবে অবৈধ এই কর্মকাণ্ডে দেশটির রাজনীতিবিদ এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বেশ দৃঢ়ভাবে জড়িত বলে স্থানীয় পরিবেশবাদী সংস্থাগুলো অভিযোগ করে থাকে।