Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশের ৪ কোটি মানুষের জীবনযাপনের মান ইউরোপের মানুষের মতো: বাণিজ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দেশের ৪ কোটি মানুষের জীবনযাপনের মান ইউরোপের মানুষের মতো বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, আমাদের দেশের ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ইউরোপের মানুষের সমান। এই ৪ কোটি মানুষ দাম দিয়ে ভালো পণ্য কিনতে পারেন।

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) ১৮তম জাতীয় ফার্নিচার মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানীর বসুন্ধরার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে মেলার আয়োজন করে বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি (বিএফআইওএ)। দেশীয় ফার্নিচার শিল্পের সর্ববৃহৎ এই আয়োজন চলবে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ফার্নিচার শিল্পসহ যেকোনও টেকসই শিল্পের উন্নয়নের জন্য দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করার বিকল্প নেই। প্রশিক্ষিত জনবলের তৈরি দেশীয় ফার্নিচার বিদেশে রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলেও জানান তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ফার্নিচার খাত খুব অল্প সময়ের মধ্যেই একটি শক্তিশালী খাতে রূপান্তরিত হয়েছে। দেশের গন্ডি পেরিয়ে এখন বিদেশে রফতানি হচ্ছে। বাংলাদেশের ফার্নিচারের যে কোয়ালিটি, ডিজাইন, আধুনিকতা, তা বিশ্বের যেকোনও দেশেরই নজর কাড়বে এবং নিতে আগ্রহী হবে।

তিনি বলেন, তৈরি পোশাক শিল্প খাত আজ যে অবস্থানে এসেছে, এটি এক দিনে হয়নি। বর্তমানে ফার্নিচার থেকে ১১০ থেকে ১২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি হচ্ছে বলে যে তথ্য দিচ্ছে, তা এই অবস্থায় থাকবে না। এই খাতে বিগত ১০ থেকে ১২ বছরে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে, তাতে শিগগিরই রফতানিতে উল্লেখযোগ্য অবস্থান তৈরি করতে পারবে।

টেকসই ফার্নিচার শিল্প গড়ে তুলতে পারলে রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব দৃঢ়তার সঙ্গে মন্ত্রী বলেন, যে পরিমাণ শ্রমিক এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত, তা দ্বিগুণ করা সম্ভব। ফার্নিচার তৈরিতে যেসব মেটারিয়ালস আমদানি করতে হয়, সেগুলো দেশেই উৎপাদনে উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

রফতানির ক্ষেত্রে যেসব বাধা রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করতে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দেবে জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, ফার্নিচার শিল্পের সঙ্গে জড়িত বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান শতভাগ রফতানিমুখী করার উদ্যোগ নিচ্ছে, যা সত্যিই প্রসংশনীয়। এই খাত অনেক বেশি সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে আরও বেশি বিনিয়োগ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, অনেক লড়াই-আন্দোলন-সংগ্রাম করে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে দেশ আজ বিশ্ববাসীর কাছে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে পাকিস্তানসহ পার্শ্ববর্তী অনেক দেশকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছে। বিশ্বের যেকোনও প্রান্তে গেলেই বাংলাদেশের উন্নয়নের গল্প শোনা যায়, যা বাঙালি হিসেবে আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের।

১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশে চার কোটি মানুষ রয়েছে, যাদের ক্রয়ক্ষমতা ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের মানুষের সমান উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার যে লক্ষ্যমাত্রা শেখ হাসিনা ঠিক করেছেন, তা এর আগেই অর্জিত হবে।

টিপু মুনশি বলেন, ফার্নিচার তৈরিতে ব্যবহৃত বেশ কিছু কাঁচামাল দেশে তৈরি হয় না। আমদানি করতে হয়। এর বিপরীতে বিভিন্ন ধরনের শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। শিল্প সংশ্লিষ্টদের শুল্ক ছাড়ের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের বেশ কিছু জিনিস আমদানি করতে হয়। সেগুলো আমদানি করে রপ্তানি করতে গেলে কম্পিটিটিভনেস পাবে না। এ বিষয়টাও দেখতে হবে। এসব বিষয় আলোচনা হয়েছে। যে পরিমাণ রপ্তানি করা হবে, তার বিপরীতে যতটুকু কাঁচামাল আমদানি করা হবে, তাতে যেন বন্ডের সুবিধা চান তাঁরা। এটা সম্ভব। এখানে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান আছেন, আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি, কীভাবে এটার একটা ওয়ে আউট বা পথ বের করা যাবে, যাতে করে আমদানি বাড়ে।

বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতির চেয়ারম্যান সেলিম এইচ রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও এ এইচ এম আহসান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম, এবং বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক কে এম আকতারুজ্জামান।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

দেশের ৪ কোটি মানুষের জীবনযাপনের মান ইউরোপের মানুষের মতো: বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৪:৩০:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দেশের ৪ কোটি মানুষের জীবনযাপনের মান ইউরোপের মানুষের মতো বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, আমাদের দেশের ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ইউরোপের মানুষের সমান। এই ৪ কোটি মানুষ দাম দিয়ে ভালো পণ্য কিনতে পারেন।

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) ১৮তম জাতীয় ফার্নিচার মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানীর বসুন্ধরার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে মেলার আয়োজন করে বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি (বিএফআইওএ)। দেশীয় ফার্নিচার শিল্পের সর্ববৃহৎ এই আয়োজন চলবে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ফার্নিচার শিল্পসহ যেকোনও টেকসই শিল্পের উন্নয়নের জন্য দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করার বিকল্প নেই। প্রশিক্ষিত জনবলের তৈরি দেশীয় ফার্নিচার বিদেশে রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলেও জানান তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ফার্নিচার খাত খুব অল্প সময়ের মধ্যেই একটি শক্তিশালী খাতে রূপান্তরিত হয়েছে। দেশের গন্ডি পেরিয়ে এখন বিদেশে রফতানি হচ্ছে। বাংলাদেশের ফার্নিচারের যে কোয়ালিটি, ডিজাইন, আধুনিকতা, তা বিশ্বের যেকোনও দেশেরই নজর কাড়বে এবং নিতে আগ্রহী হবে।

তিনি বলেন, তৈরি পোশাক শিল্প খাত আজ যে অবস্থানে এসেছে, এটি এক দিনে হয়নি। বর্তমানে ফার্নিচার থেকে ১১০ থেকে ১২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি হচ্ছে বলে যে তথ্য দিচ্ছে, তা এই অবস্থায় থাকবে না। এই খাতে বিগত ১০ থেকে ১২ বছরে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে, তাতে শিগগিরই রফতানিতে উল্লেখযোগ্য অবস্থান তৈরি করতে পারবে।

টেকসই ফার্নিচার শিল্প গড়ে তুলতে পারলে রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব দৃঢ়তার সঙ্গে মন্ত্রী বলেন, যে পরিমাণ শ্রমিক এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত, তা দ্বিগুণ করা সম্ভব। ফার্নিচার তৈরিতে যেসব মেটারিয়ালস আমদানি করতে হয়, সেগুলো দেশেই উৎপাদনে উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

রফতানির ক্ষেত্রে যেসব বাধা রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করতে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দেবে জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, ফার্নিচার শিল্পের সঙ্গে জড়িত বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান শতভাগ রফতানিমুখী করার উদ্যোগ নিচ্ছে, যা সত্যিই প্রসংশনীয়। এই খাত অনেক বেশি সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে আরও বেশি বিনিয়োগ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, অনেক লড়াই-আন্দোলন-সংগ্রাম করে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে দেশ আজ বিশ্ববাসীর কাছে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে পাকিস্তানসহ পার্শ্ববর্তী অনেক দেশকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছে। বিশ্বের যেকোনও প্রান্তে গেলেই বাংলাদেশের উন্নয়নের গল্প শোনা যায়, যা বাঙালি হিসেবে আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের।

১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশে চার কোটি মানুষ রয়েছে, যাদের ক্রয়ক্ষমতা ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের মানুষের সমান উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার যে লক্ষ্যমাত্রা শেখ হাসিনা ঠিক করেছেন, তা এর আগেই অর্জিত হবে।

টিপু মুনশি বলেন, ফার্নিচার তৈরিতে ব্যবহৃত বেশ কিছু কাঁচামাল দেশে তৈরি হয় না। আমদানি করতে হয়। এর বিপরীতে বিভিন্ন ধরনের শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। শিল্প সংশ্লিষ্টদের শুল্ক ছাড়ের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের বেশ কিছু জিনিস আমদানি করতে হয়। সেগুলো আমদানি করে রপ্তানি করতে গেলে কম্পিটিটিভনেস পাবে না। এ বিষয়টাও দেখতে হবে। এসব বিষয় আলোচনা হয়েছে। যে পরিমাণ রপ্তানি করা হবে, তার বিপরীতে যতটুকু কাঁচামাল আমদানি করা হবে, তাতে যেন বন্ডের সুবিধা চান তাঁরা। এটা সম্ভব। এখানে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান আছেন, আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি, কীভাবে এটার একটা ওয়ে আউট বা পথ বের করা যাবে, যাতে করে আমদানি বাড়ে।

বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতির চেয়ারম্যান সেলিম এইচ রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও এ এইচ এম আহসান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম, এবং বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক কে এম আকতারুজ্জামান।