Dhaka শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তুরস্কে স্থানীয় নির্বাচনে এরদোয়ান বিরোধীদের জয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

তুরস্কের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দেশটির প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) ঐতিহাসিক বিজয় পেয়েছে। রাজধানীর ইস্তাম্বুল ও আঙ্কারার প্রধান শহরগুলোতে জয় পেয়েছে দলটির প্রার্থীরা। বিরোধী দলটির এ জয় ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির জন্য (একে পার্টি) একটি বড় ধরনের ধাক্কা। কারণ গত ২০ বছরে একে পার্টির এমন বড় পরাজয় দেখা যায়নি।

দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আনাদোলুর বলছে, তুরস্কের ৮১টি প্রদেশের মধ্যে ৩৬টিতে এগিয়ে সিএইচপি। এসব প্রদেশের অনেক জায়গায় একে পার্টির অবস্থান অনেক শক্তিশালী ছিল।

ইস্তানবুলে আবারও মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন সিএইচপিপ্রধান একরেম ইমামোগলু। ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছেন তিনি। এই ভোট এরদোগানের একে পার্টির প্রার্থীর তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। রাজধানী আঙ্কারায় ৫৯ শতাংশের বেশি ভোট নিয়ে জয় পেয়েছেন মনসুর ইয়াভাস। এ ছাড়া ইজমির, বুরসা, আদানা, আনাতালিয়াসহ বড় বড় শহরগুলোয়ও আধিপত্য সিএইচপির। বেশ কয়েকটি স্থানে জয় পেয়েছে ডিইএম।

রোববার ইস্তাম্বুলে ৯৫ শতাংশ ব্যালটের গণনা শেষে প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) মেয়র একরেম ইমামোগলু বলেন, তিনি এরদোয়ানের ক্ষমতাসীন দল একে পার্টির প্রার্থীকে ১০ লাখের বেশি ভোটে পরাজিত করেছেন।

পরাজয়ের কথা স্বীকার করেছেন এরদোয়ান। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বারান্দায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেছেন, এ কে পার্টি তার প্রভাবশালী অবস্থান হারিয়েছে। এই হারের পেছনের কারণ খোঁজা হবে। কোনো ভুল-ক্রুটি থাকলে তা শুধরে নেওয়া হবে।

২০১৯ সালের স্থানীয় নির্বাচনে ইস্তাম্বুলের মেয়র পদে প্রথমবারের মতো বিজয়ী হন ইমামোগলু। এবারের নির্বাচনে ইস্তাম্বুলে ইমামোগলুর বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন একে পার্টির প্রার্থী সাবেক পরিবেশমন্ত্রী মুরাত কুরুম। দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হওয়ার ফলে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইমামোগলু বিরোধী দলের প্রার্থী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এরদোয়ানের নিজের শহর ইস্তাম্বুল। এক কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যার এই শহরেই জন্ম ও বেড়ে উঠেছেন ৭০ বছর বয়সী এই তুর্কি নেতা। ১৯৯৪ সালে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ শহরটির মেয়র নির্বাচিত হয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন তিনি।

এদিকে, আঙ্কারায় সিএইচপির মেয়র মানসুর ইয়াভাস তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে হারানোর দাবি করেছেন। ফলাফলকে দেশের শাসকদের জন্য এক স্পষ্ট বার্তা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

তুরস্কের তৃতীয় বড় শহর ইজমিরেও এগিয়ে আছে সিএইচপি। ফলাফলকে স্বাগত জানিয়ে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে আনন্দ উদযাপনে ইস্তাম্বুলে জড়ো হয়েছিলেন বিরোধীদলীয় সমর্থকরা।

তুরস্কে ২০০২ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন তিনি। এবারের নির্বাচনে একে পার্টি জিতলে ২০২৮ সালের পরও এরদোয়ান প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকার সুযোগ তৈরি করতেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

তুরস্কে স্থানীয় নির্বাচনে এরদোয়ান বিরোধীদের জয়

প্রকাশের সময় : ০১:২৩:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

তুরস্কের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দেশটির প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) ঐতিহাসিক বিজয় পেয়েছে। রাজধানীর ইস্তাম্বুল ও আঙ্কারার প্রধান শহরগুলোতে জয় পেয়েছে দলটির প্রার্থীরা। বিরোধী দলটির এ জয় ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির জন্য (একে পার্টি) একটি বড় ধরনের ধাক্কা। কারণ গত ২০ বছরে একে পার্টির এমন বড় পরাজয় দেখা যায়নি।

দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আনাদোলুর বলছে, তুরস্কের ৮১টি প্রদেশের মধ্যে ৩৬টিতে এগিয়ে সিএইচপি। এসব প্রদেশের অনেক জায়গায় একে পার্টির অবস্থান অনেক শক্তিশালী ছিল।

ইস্তানবুলে আবারও মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন সিএইচপিপ্রধান একরেম ইমামোগলু। ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছেন তিনি। এই ভোট এরদোগানের একে পার্টির প্রার্থীর তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। রাজধানী আঙ্কারায় ৫৯ শতাংশের বেশি ভোট নিয়ে জয় পেয়েছেন মনসুর ইয়াভাস। এ ছাড়া ইজমির, বুরসা, আদানা, আনাতালিয়াসহ বড় বড় শহরগুলোয়ও আধিপত্য সিএইচপির। বেশ কয়েকটি স্থানে জয় পেয়েছে ডিইএম।

রোববার ইস্তাম্বুলে ৯৫ শতাংশ ব্যালটের গণনা শেষে প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) মেয়র একরেম ইমামোগলু বলেন, তিনি এরদোয়ানের ক্ষমতাসীন দল একে পার্টির প্রার্থীকে ১০ লাখের বেশি ভোটে পরাজিত করেছেন।

পরাজয়ের কথা স্বীকার করেছেন এরদোয়ান। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বারান্দায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেছেন, এ কে পার্টি তার প্রভাবশালী অবস্থান হারিয়েছে। এই হারের পেছনের কারণ খোঁজা হবে। কোনো ভুল-ক্রুটি থাকলে তা শুধরে নেওয়া হবে।

২০১৯ সালের স্থানীয় নির্বাচনে ইস্তাম্বুলের মেয়র পদে প্রথমবারের মতো বিজয়ী হন ইমামোগলু। এবারের নির্বাচনে ইস্তাম্বুলে ইমামোগলুর বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন একে পার্টির প্রার্থী সাবেক পরিবেশমন্ত্রী মুরাত কুরুম। দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হওয়ার ফলে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইমামোগলু বিরোধী দলের প্রার্থী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এরদোয়ানের নিজের শহর ইস্তাম্বুল। এক কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যার এই শহরেই জন্ম ও বেড়ে উঠেছেন ৭০ বছর বয়সী এই তুর্কি নেতা। ১৯৯৪ সালে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ শহরটির মেয়র নির্বাচিত হয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন তিনি।

এদিকে, আঙ্কারায় সিএইচপির মেয়র মানসুর ইয়াভাস তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে হারানোর দাবি করেছেন। ফলাফলকে দেশের শাসকদের জন্য এক স্পষ্ট বার্তা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

তুরস্কের তৃতীয় বড় শহর ইজমিরেও এগিয়ে আছে সিএইচপি। ফলাফলকে স্বাগত জানিয়ে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে আনন্দ উদযাপনে ইস্তাম্বুলে জড়ো হয়েছিলেন বিরোধীদলীয় সমর্থকরা।

তুরস্কে ২০০২ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন তিনি। এবারের নির্বাচনে একে পার্টি জিতলে ২০২৮ সালের পরও এরদোয়ান প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকার সুযোগ তৈরি করতেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।