Dhaka শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাপানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৩০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

পূর্ব এশিয়ার দ্বীপ দেশ জাপানে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১৫৫ বার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে নিহত হয়েছে অন্তত ৩০ জন। আহতও হয়েছেন আরও অনেকে। জাপানের মিটিওরোলিজক্যাল এজেন্সি (জেএমএ) জানিয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬ এবং অপর একটি ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬।

স্থানীয় সময় সোমবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে জাপান সাগরের উপকূলীয় নতো অঞ্চলের ইশিকাওয়া প্রিফেকচারে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৫৫ টি ভূমিকম্পের প্রায় সবগুলোই রিখটার স্কেলে ৩ মাত্রার ওপরে। মূলত তীব্র ভূমিকম্পের কারণে বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়ার ফলে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

ভূমিকম্প উপদ্রুত ইশিকাওয়া প্রিফেকচারে প্রায় ৩৩ হাজার বাড়ি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। এছাড়া ভূমিকম্পের সময় বিদ্যুৎ স্ফুলিঙ্গ থেকে সৃষ্ট আগুনেও বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।

এতে প্রথমে ১৫ ফুট উঁচু সুনামির আশঙ্কার কথা বলে উপকূলবর্তী অঞ্চলের লোকজনকে উঁচু স্থানে সরে যেতে বলা হয়। এখন আর কোনো সুনামির সতর্কতা নেই।

নতুন বছরের প্রথম দিন জাপানের মধ্যাঞ্চলে ৭.৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পে অন্তত ৩০টি বাড়ি ধসে পড়েছে এবং রাস্তাঘাটে বড় ফাটল ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

বেশ কয়েকজন ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে। ভূমিকম্পের কারণে প্রথমে বড় ধরনের সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও পরে এর মাত্রা কমানো হয়েছে। জাপানি সামরিক বাহিনী যাদের বাড়ি ছেড়ে যেতে হয়েছে, তাদের জন্য খাবার, পানি এবং কম্বলসরবরাহ করছে। উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী হাজার হাজার মানুষ উচ্চ ভূমিতে চলে যাওয়ার পরে আশ্রয়কেন্দ্রে রাত কাটিয়েছেন।

আবহাওয়া বিভাগ বলেছে, পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে জাপানে ৩.৪ থেকে ৭.৬ মাত্রার রেকর্ডসংখ্যক অন্তত ৫০টি কম্পন অনুভূত হয়। সামনে আরো ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছিল আবহাওয়া বিভাগ।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে জাপান খুবই ভূমিকম্পপ্রবণ। সেখানে ছোট ভূমিকম্প প্রায় নৈমিত্তিক ব্যাপার। সুনামির প্রাথমিক সতর্কবার্তায় বলা হয়, কোথাও কোথাও ১৬ ফুট উঁচু ঢেউ সৃষ্টি হতে পারে।

এর কিছু সময় পর ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের আশপাশের এলাকা বিশেষ করে ইশিকাওয়া, নিগাতা ও তোইয়ামা প্রিফেকচারে ‘বড় সুনামি সতর্কতা’ সরিয়ে ‘সুনামি সতর্কতা’ জারি করা হয়। তখনো প্রায় ১০ ফুট উঁচু ঢেউয়ের আশঙ্কা ছিল।

২০১১ সালের ফুকুশিমা বিপর্যয়ের বছরের পর থেকে বড় সুনামি সতর্কতা ছিল এটাই প্রথম। আর নতো অঞ্চলে রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে এটাই সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প। সরকারের মুখপাত্র ইয়োসিমাশা হায়াশি বলেছেন, ধসে পড়া ভবনের নিচে অন্তত ছয়জনের আটকে পড়ার খবর মিলেছে। এ ছাড়া ইশিকাওয়া এলাকায় একটি বিশাল অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের আশপাশের তোইয়ামা, ইশিকাওয়া ও নিগাতা প্রিফেকচারে প্রায় ৩৩ হাজার ৫০০ বসতঘর বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। ইশিকাওয়ার ওয়াজিমা সিটি ফায়ার ডিপার্টমেন্ট বলেছে, তারা অন্তত ৩০টি ভবন ধসে পড়ার খবর পেয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, ভূমিকম্পের জেরে সংশ্লিষ্ট এলাকার বুলেট ট্রেনের যাত্রা স্থগিত করা হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো অস্বাভাবিকতার খবর পায়নি দেশটির পরমাণু নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জোর করে চাপিয়ে দেয়া শিক্ষা সম্ভাবনা নষ্ট করে দেয় : হাসনাত আব্দুল্লাহ

জাপানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৩০

প্রকাশের সময় : ০১:০৯:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

পূর্ব এশিয়ার দ্বীপ দেশ জাপানে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১৫৫ বার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে নিহত হয়েছে অন্তত ৩০ জন। আহতও হয়েছেন আরও অনেকে। জাপানের মিটিওরোলিজক্যাল এজেন্সি (জেএমএ) জানিয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬ এবং অপর একটি ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬।

স্থানীয় সময় সোমবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে জাপান সাগরের উপকূলীয় নতো অঞ্চলের ইশিকাওয়া প্রিফেকচারে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৫৫ টি ভূমিকম্পের প্রায় সবগুলোই রিখটার স্কেলে ৩ মাত্রার ওপরে। মূলত তীব্র ভূমিকম্পের কারণে বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়ার ফলে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

ভূমিকম্প উপদ্রুত ইশিকাওয়া প্রিফেকচারে প্রায় ৩৩ হাজার বাড়ি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। এছাড়া ভূমিকম্পের সময় বিদ্যুৎ স্ফুলিঙ্গ থেকে সৃষ্ট আগুনেও বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।

এতে প্রথমে ১৫ ফুট উঁচু সুনামির আশঙ্কার কথা বলে উপকূলবর্তী অঞ্চলের লোকজনকে উঁচু স্থানে সরে যেতে বলা হয়। এখন আর কোনো সুনামির সতর্কতা নেই।

নতুন বছরের প্রথম দিন জাপানের মধ্যাঞ্চলে ৭.৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পে অন্তত ৩০টি বাড়ি ধসে পড়েছে এবং রাস্তাঘাটে বড় ফাটল ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

বেশ কয়েকজন ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে। ভূমিকম্পের কারণে প্রথমে বড় ধরনের সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও পরে এর মাত্রা কমানো হয়েছে। জাপানি সামরিক বাহিনী যাদের বাড়ি ছেড়ে যেতে হয়েছে, তাদের জন্য খাবার, পানি এবং কম্বলসরবরাহ করছে। উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী হাজার হাজার মানুষ উচ্চ ভূমিতে চলে যাওয়ার পরে আশ্রয়কেন্দ্রে রাত কাটিয়েছেন।

আবহাওয়া বিভাগ বলেছে, পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে জাপানে ৩.৪ থেকে ৭.৬ মাত্রার রেকর্ডসংখ্যক অন্তত ৫০টি কম্পন অনুভূত হয়। সামনে আরো ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছিল আবহাওয়া বিভাগ।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে জাপান খুবই ভূমিকম্পপ্রবণ। সেখানে ছোট ভূমিকম্প প্রায় নৈমিত্তিক ব্যাপার। সুনামির প্রাথমিক সতর্কবার্তায় বলা হয়, কোথাও কোথাও ১৬ ফুট উঁচু ঢেউ সৃষ্টি হতে পারে।

এর কিছু সময় পর ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের আশপাশের এলাকা বিশেষ করে ইশিকাওয়া, নিগাতা ও তোইয়ামা প্রিফেকচারে ‘বড় সুনামি সতর্কতা’ সরিয়ে ‘সুনামি সতর্কতা’ জারি করা হয়। তখনো প্রায় ১০ ফুট উঁচু ঢেউয়ের আশঙ্কা ছিল।

২০১১ সালের ফুকুশিমা বিপর্যয়ের বছরের পর থেকে বড় সুনামি সতর্কতা ছিল এটাই প্রথম। আর নতো অঞ্চলে রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে এটাই সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প। সরকারের মুখপাত্র ইয়োসিমাশা হায়াশি বলেছেন, ধসে পড়া ভবনের নিচে অন্তত ছয়জনের আটকে পড়ার খবর মিলেছে। এ ছাড়া ইশিকাওয়া এলাকায় একটি বিশাল অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের আশপাশের তোইয়ামা, ইশিকাওয়া ও নিগাতা প্রিফেকচারে প্রায় ৩৩ হাজার ৫০০ বসতঘর বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। ইশিকাওয়ার ওয়াজিমা সিটি ফায়ার ডিপার্টমেন্ট বলেছে, তারা অন্তত ৩০টি ভবন ধসে পড়ার খবর পেয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, ভূমিকম্পের জেরে সংশ্লিষ্ট এলাকার বুলেট ট্রেনের যাত্রা স্থগিত করা হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো অস্বাভাবিকতার খবর পায়নি দেশটির পরমাণু নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।