Dhaka রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোপালগঞ্জে গণগ্রেফতার হচ্ছে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, গোপালগঞ্জের ঘটনায় গণগ্রেপ্তার হচ্ছে না, যারা দোষী তাদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

রোববার (২০ জুলাই) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন ও তৎসংলগ্ন এলাকার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিশেষ সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আগের এবং বর্তমান পরিস্থিতি জেনেছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন আগের তুলনায় অনেক ভালো। গোপালগঞ্জের ঘটনায় রাজনৈতিক প্রভাব ছিল, তবে এখন সেখানে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরছে। কারফিউ তুলে নেওয়া হয়েছে, ১৪৪ ধারাও শিগগিরই তুলে নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, অন্য সময়ের তুলনায় এবারের হরতালগুলোতে নাশকতার মাত্রা অনেকটাই কম। আমরা সহনশীলতা ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। গণতন্ত্রের সৌন্দর্য বজায় রাখতে আমরা সচেষ্ট। সবাই মত প্রকাশ করবেন, তবে যেন কেউ অশালীন ভাষা বা আক্রমণাত্মক আচরণ না করেন।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, মিথ্যা বলে গণতন্ত্র হয় না, সত্যি কথা বলতে হবে। কেউ অন্যায় করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে, কিন্তু যারা নির্দোষ তাদের যেন হয়রানি করা না হয়। গোপালগঞ্জে শিশু গ্রেপ্তারের কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। আগের মতো গণগ্রেপ্তার নয়, এখন শুধু প্রকৃত অপরাধীদের ধরা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যেমন নিরাপত্তা প্রয়োজন, তা বর্তমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমেই নিশ্চিত করা সম্ভব।

তিনি বলেন, ঢাকায় পুলিশের সব ডিসি, র‌্যাবের কর্মকর্তা এবং সেনাবাহিনীতে যারা কর্মরত রয়েছেন তাদের ডাকা হয়েছিল। তাদের থেকে আমরা শুনলাম এখন আইন-শৃঙ্খলার কি পরিস্থিতি এবং আগে কেমন পরিস্থিতি ছিল। তারা জানিয়েছেন, তারা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক উন্নত হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, গোপালগঞ্জের ঘটনা আমার অস্বীকার করছি না। রাজনীতি করতে গেলে অনেক সময় অনেক কিছুই হয়। এক সময় আমরাও করেছি। ঢাকা ইউনিভার্সিটিতেও অনেক সময় অনেক কিছু হয়। কিন্তু ঘটনার পর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা সেটাই হল আমাদের কথা। কিন্তু আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি হরতাল ডাকা হয়েছে৷ কিন্তু হরতালটা হয়েছে কিনা সেটা আপনারাই বলেন। দুটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যান্য সময় হরতালে এর চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু তার থেকে ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমিয়ে আনতে পেরেছে কিনা সেটা দেখবেন।

গোপালগঞ্জের ঘটনায় মামলার প্রসঙ্গে টেনে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সেখানে পুলিশ মামলা করবে কী করবে না সেটা নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গোপালগঞ্জের ঘটনা আপনারা নিজ চোখে দেখেছেন তারা কী পরিস্থিতি করেছে।

গোপালগঞ্জে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে নির্বাচনী মাঠ সামাল দেওয়া যাবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আপনি আমাকে যে প্রশ্নটি করলেন এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। এই যে আপনি আপনার মত প্রকাশ করতে পারছেন। আমার অনুরোধ থাকবে মত প্রকাশের জন্য যেন কোনো অশালীন ভাষা ব্যবহার করা না হয়। যেন আক্রমণাত্মক কিছু না হয়। আরেকটি বিষয় হলো গণতন্ত্রে সত্য কথাটা সবসময় প্রকাশ পায়।

দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে সামনের নির্বাচন সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে নির্বাচন করা যাবে না কেন? আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত। সামনে আরও সময় রয়ে গেছে। আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। নির্বাচন করতে কোনো অসুবিধা হবে না।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বিমানের ফ্লাইটে ফের ত্রুটি, শারজাহ না গিয়ে ফিরে এলো ঢাকায়

গোপালগঞ্জে গণগ্রেফতার হচ্ছে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৩:৪৮:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, গোপালগঞ্জের ঘটনায় গণগ্রেপ্তার হচ্ছে না, যারা দোষী তাদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

রোববার (২০ জুলাই) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন ও তৎসংলগ্ন এলাকার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিশেষ সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আগের এবং বর্তমান পরিস্থিতি জেনেছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন আগের তুলনায় অনেক ভালো। গোপালগঞ্জের ঘটনায় রাজনৈতিক প্রভাব ছিল, তবে এখন সেখানে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরছে। কারফিউ তুলে নেওয়া হয়েছে, ১৪৪ ধারাও শিগগিরই তুলে নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, অন্য সময়ের তুলনায় এবারের হরতালগুলোতে নাশকতার মাত্রা অনেকটাই কম। আমরা সহনশীলতা ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। গণতন্ত্রের সৌন্দর্য বজায় রাখতে আমরা সচেষ্ট। সবাই মত প্রকাশ করবেন, তবে যেন কেউ অশালীন ভাষা বা আক্রমণাত্মক আচরণ না করেন।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, মিথ্যা বলে গণতন্ত্র হয় না, সত্যি কথা বলতে হবে। কেউ অন্যায় করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে, কিন্তু যারা নির্দোষ তাদের যেন হয়রানি করা না হয়। গোপালগঞ্জে শিশু গ্রেপ্তারের কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। আগের মতো গণগ্রেপ্তার নয়, এখন শুধু প্রকৃত অপরাধীদের ধরা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যেমন নিরাপত্তা প্রয়োজন, তা বর্তমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমেই নিশ্চিত করা সম্ভব।

তিনি বলেন, ঢাকায় পুলিশের সব ডিসি, র‌্যাবের কর্মকর্তা এবং সেনাবাহিনীতে যারা কর্মরত রয়েছেন তাদের ডাকা হয়েছিল। তাদের থেকে আমরা শুনলাম এখন আইন-শৃঙ্খলার কি পরিস্থিতি এবং আগে কেমন পরিস্থিতি ছিল। তারা জানিয়েছেন, তারা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক উন্নত হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, গোপালগঞ্জের ঘটনা আমার অস্বীকার করছি না। রাজনীতি করতে গেলে অনেক সময় অনেক কিছুই হয়। এক সময় আমরাও করেছি। ঢাকা ইউনিভার্সিটিতেও অনেক সময় অনেক কিছু হয়। কিন্তু ঘটনার পর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা সেটাই হল আমাদের কথা। কিন্তু আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি হরতাল ডাকা হয়েছে৷ কিন্তু হরতালটা হয়েছে কিনা সেটা আপনারাই বলেন। দুটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যান্য সময় হরতালে এর চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু তার থেকে ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমিয়ে আনতে পেরেছে কিনা সেটা দেখবেন।

গোপালগঞ্জের ঘটনায় মামলার প্রসঙ্গে টেনে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সেখানে পুলিশ মামলা করবে কী করবে না সেটা নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গোপালগঞ্জের ঘটনা আপনারা নিজ চোখে দেখেছেন তারা কী পরিস্থিতি করেছে।

গোপালগঞ্জে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে নির্বাচনী মাঠ সামাল দেওয়া যাবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আপনি আমাকে যে প্রশ্নটি করলেন এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। এই যে আপনি আপনার মত প্রকাশ করতে পারছেন। আমার অনুরোধ থাকবে মত প্রকাশের জন্য যেন কোনো অশালীন ভাষা ব্যবহার করা না হয়। যেন আক্রমণাত্মক কিছু না হয়। আরেকটি বিষয় হলো গণতন্ত্রে সত্য কথাটা সবসময় প্রকাশ পায়।

দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে সামনের নির্বাচন সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে নির্বাচন করা যাবে না কেন? আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত। সামনে আরও সময় রয়ে গেছে। আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। নির্বাচন করতে কোনো অসুবিধা হবে না।