আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনের কারণে তীব্র খাদ্য সংকট তৈরি হয়েছে। সেখানে অনাহার এবং পানিশূন্যতায় বহু শিশু প্রাণ হারিয়েছে। প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) জানিয়েছে, গাজায় অনাহার এবং পানিশূন্যতায় এখন পর্যন্ত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের চিকিৎসকরা ওষুধ স্বল্পতার মধ্যেও তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে এমন শিশুদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে তারা সতর্কবার্তা দিচ্ছেন কারণ সেখানকার পরিস্থিতি দিন দিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে।
গাজায় এখন পর্যন্ত ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু। অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে এক হাজার শিশু তাদের এক বা উভয় পা হারিয়েছে। এছাড়া গাজায় প্রতি ঘণ্টায় নিহত হচ্ছে ৪ শিশু।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) লাইভ আপডেটে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজায় অনাহার ও পানিশূন্যতার কারণে মারা যাওয়া শিশুর সংখ্যা বেড়ে এখন ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে বলে প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) জানিয়েছে।
গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের চিকিৎসকরা নানা আশঙ্কার কথা শোনাচ্ছেন। তারা সতর্ক করে বলেছেন, অত্যন্ত সীমিত সরবরাহ দিয়েই হাসপাতালের ওয়ার্ডে তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে এমন শিশু এবং ছোট শিশুদের চিকিৎসা করার চেষ্টা করছেন তারা।
এদিকে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) ফিলিস্তিনি শিশু দিবসের সম্মানে বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে বেশ কয়েকটি পোস্ট প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে একটি পোস্টে লেখা ছিল, ‘গাজায় ১০০০ শিশু তাদের হয় একটি বা না হয় উভয় পা হারিয়েছে।’
আরেকটি পোস্টে বলা হয়েছে, ‘গাজায় প্রতি ঘণ্টায় ৪ শিশু নিহত হচ্ছে।’
এদিকে গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ইসরায়েলের টানা ছয় মাস ধরে চলা এই হামলায় নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৩৩ হাজার ৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৭৫ হাজার ৬৬৮ জন আহত হয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই ২৪ হাজারের বেশি। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বুধবার জানায়, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকায় ২ হাজার ৯২২টি গণহত্যা চালিয়েছে। আর এর জেরে গাজায় মোট ১৪ হাজার ৫০০ শিশু এবং ৯ হাজার ৫৬০ জন নারী নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরও ৭ হাজার মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন বা নিখোঁজ রয়েছেন।
মিডিয়া অফিস আরও বলেছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলার মুখোমুখি হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৭৩ শতাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া গাজায় ১৭ হাজার শিশু তাদের পিতামাতা বা উভয়ের যেকোনও একজন ছাড়াই বসবাস করছে।
গাজার অনাহারের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মিডিয়া অফিস বলেছে, অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে গাজায় এখন পর্যন্ত ৩০ জন শিশু প্রাণ হারিয়েছে। এতে আরও বলা হয়, ৪৮৪ জন স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, ১৪০ জন সাংবাদিক এবং ৬৫ জন সিভিল ডিফেন্স কর্মীও ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন।