Dhaka রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গরুর মাংসের ব্যবসায় নামছেন জাকারবার্গ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ব্যক্তি এবং ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। প্রযুক্তি ক্ষেত্রের লোক হিসেবেই তাকে দেখা হয়। এবার তিনি গরুর মাংসের ব্যবসায় নামছেন। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা জানিয়েছেন, বিশ্বের সর্বোচ্চ মানের গরুর মাংস উৎপাদনের জন্য গরুর খামার করেছেন তিনি। খামারটি তিনি গড়ে তুলেছেন কাওয়াইয়ের কো’লু খামারে।

নিজের খামারের গরুকে তিনি ম্যাকাডেমিয়া নামের বিশেষ বাদাম ও মদ খাওয়াচ্ছেন। যেগুলো তার খামারেই উৎপাদন করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জুকারবার্গ বলেছেন, ‘কাওয়াইয়ের কো’লুর খামারে আমি গরু লালন-পালন শুরু করেছি। আমার লক্ষ্য হলো বিশ্বের সেরা গরুর মাংস উৎপাদন করা। গরুগুলো ওয়াগু এবং আঙ্গুস জাতের।

আঙ্গুস হলো একটি স্কটিশ ছোট জাতের গরু। স্টিকের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে এ গরু খুবই জনপ্রিয়। আর ওয়াগু হলো জাপানিজ জাতের গরু। যেগুলো শুধুমাত্র মাংসের জন্যই লালন-পালন করা হয়।

তিনি জানান, গবাদি পশুগুলো হল ওয়াগিউ এবং অ্যাঙ্গাস প্রজাতির। খামারে উৎপাদন করা ম্যাকাডামিয়া খাবার (এক বিশেষ প্রজাতির বাদাম) এবং বিয়ার খাওয়ানোর মাধ্যমে পশুগুলোকে বড় করা হবে। আমরা চাই পুরো প্রক্রিয়াটি স্থানীয়ভাবে হোক। এর ফলে খামারের গরু হবে আরও সুস্থ ও তরতাজা, আর মাংস হবে আরও সুস্বাদু।

জুকারবার্গ আরও জানিয়েছে, পুরো প্রক্রিয়াটি তিনি স্থানীয়ভাবে সম্পন্ন করতে চান। তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রত্যেকটি গরু বছরে ৫ থেকে ১০ হাজার পাউন্ড খাবার খায়। যার অর্থ কয়েক একর জায়গায় ম্যাকাডেমিয়া উৎপাদন করতে হচ্ছে তাদের।

জুকারবার্গ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ তথ্য প্রকাশের পর এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একজন প্রশ্ন করেছেন, ‘এই! তারা কি মদ খেয়ে মাতাল হয় না।? আরেকজন লিখেছেন, ‘এটি অর্থ, জমি এবং সম্পদের পুরোপুরি অপচয়।’

গরুর মাংস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকমোর ওয়াগিউর মতে, ওয়াগিউ একটি জাপানি গরুর জাত। তাদের খামারে কখনো কখনো ক্ষুধা উদ্দীপক হিসেবে গরুগুলোকে বিয়ার পান করতে দেওয়া হয়।

ফোর্বস ম্যাগাজিন জানিয়েছে, জাকারবার্গ ২০১৪ সালে হাওয়াইয়ের কাউইতে ৭০০ একরের একটি এস্টেটে ১০ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছেন। ম্যানশন গ্লোবালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে আরও ৫ কোটি ৩০ লাখ ডলারে আরও ৬০০ একর জমি ওই এস্টেটে যোগ করেন জাকারবার্গ। একই বছর তিনি কাউয়াইতে আরও ১১০ একর জমি কিনেছিলেন।

এস্টেটটিতে এখন প্রায় ১ হাজার ৫০০ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে একটি উন্মুক্ত সমুদ্র সৈকতও রয়েছে। এখানে একটি বিশাল কম্পাউন্ডের বাড়ি বানাতে চলেছেন জাকারবার্গ। এখানে ৫ হাজার বর্গফুটের ভূগর্ভস্থ বাংকার থাকবে বলেও অয়ার্ড গত ডিসেম্বরে প্রথম প্রতিবেদন করে।

জাকারবার্গ জানিয়েছেন, এস্টেটটিতে একরের পর একরজুড়ে ম্যাকাডামিয়া গাছ রয়েছে। তাঁর মেয়েরা এই গাছ লাগাতে এবং খামারে বিভিন্ন প্রাণীর যত্ন নিতে সহায়তা করে।

খামারের প্রতিটি গরু প্রতিবছর ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার পাউন্ড খাদ্য গ্রহণ করে। তার মানে এস্টেটে জন্মানো ওই বাদামজাতীয় ফলই হবে গরুগুলোর প্রধান খাদ্য।

জারবার্গের পোস্ট নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে দারুণ আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রাণী অধিকার নিয়ে সচেতনদের বেশি সক্রিয় হতে দেখা গেছে। তেমনি একজন ব্যবহারকারী বলেছেন, একদিকে তিনি তার গবাদি পশুর যত্ন নেওয়ার দাবি করছেন। কিন্তু চূড়ান্ত পরিণতি হল তিনি তাদের খাবারের টেবিলে নিয়ে আসবেন, সুতরাং যত্নটা কোথায়? এর অর্থ হলো জমি এবং সম্পদের অপচয়।

তবে সমালোচনার পাশাপাশি অনেকেই এই উদ্যোগের জন্য শুভ কামনাও জানিয়েছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জোর করে চাপিয়ে দেয়া শিক্ষা সম্ভাবনা নষ্ট করে দেয় : হাসনাত আব্দুল্লাহ

গরুর মাংসের ব্যবসায় নামছেন জাকারবার্গ

প্রকাশের সময় : ১০:২৮:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ব্যক্তি এবং ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। প্রযুক্তি ক্ষেত্রের লোক হিসেবেই তাকে দেখা হয়। এবার তিনি গরুর মাংসের ব্যবসায় নামছেন। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা জানিয়েছেন, বিশ্বের সর্বোচ্চ মানের গরুর মাংস উৎপাদনের জন্য গরুর খামার করেছেন তিনি। খামারটি তিনি গড়ে তুলেছেন কাওয়াইয়ের কো’লু খামারে।

নিজের খামারের গরুকে তিনি ম্যাকাডেমিয়া নামের বিশেষ বাদাম ও মদ খাওয়াচ্ছেন। যেগুলো তার খামারেই উৎপাদন করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জুকারবার্গ বলেছেন, ‘কাওয়াইয়ের কো’লুর খামারে আমি গরু লালন-পালন শুরু করেছি। আমার লক্ষ্য হলো বিশ্বের সেরা গরুর মাংস উৎপাদন করা। গরুগুলো ওয়াগু এবং আঙ্গুস জাতের।

আঙ্গুস হলো একটি স্কটিশ ছোট জাতের গরু। স্টিকের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে এ গরু খুবই জনপ্রিয়। আর ওয়াগু হলো জাপানিজ জাতের গরু। যেগুলো শুধুমাত্র মাংসের জন্যই লালন-পালন করা হয়।

তিনি জানান, গবাদি পশুগুলো হল ওয়াগিউ এবং অ্যাঙ্গাস প্রজাতির। খামারে উৎপাদন করা ম্যাকাডামিয়া খাবার (এক বিশেষ প্রজাতির বাদাম) এবং বিয়ার খাওয়ানোর মাধ্যমে পশুগুলোকে বড় করা হবে। আমরা চাই পুরো প্রক্রিয়াটি স্থানীয়ভাবে হোক। এর ফলে খামারের গরু হবে আরও সুস্থ ও তরতাজা, আর মাংস হবে আরও সুস্বাদু।

জুকারবার্গ আরও জানিয়েছে, পুরো প্রক্রিয়াটি তিনি স্থানীয়ভাবে সম্পন্ন করতে চান। তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রত্যেকটি গরু বছরে ৫ থেকে ১০ হাজার পাউন্ড খাবার খায়। যার অর্থ কয়েক একর জায়গায় ম্যাকাডেমিয়া উৎপাদন করতে হচ্ছে তাদের।

জুকারবার্গ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ তথ্য প্রকাশের পর এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একজন প্রশ্ন করেছেন, ‘এই! তারা কি মদ খেয়ে মাতাল হয় না।? আরেকজন লিখেছেন, ‘এটি অর্থ, জমি এবং সম্পদের পুরোপুরি অপচয়।’

গরুর মাংস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকমোর ওয়াগিউর মতে, ওয়াগিউ একটি জাপানি গরুর জাত। তাদের খামারে কখনো কখনো ক্ষুধা উদ্দীপক হিসেবে গরুগুলোকে বিয়ার পান করতে দেওয়া হয়।

ফোর্বস ম্যাগাজিন জানিয়েছে, জাকারবার্গ ২০১৪ সালে হাওয়াইয়ের কাউইতে ৭০০ একরের একটি এস্টেটে ১০ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছেন। ম্যানশন গ্লোবালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে আরও ৫ কোটি ৩০ লাখ ডলারে আরও ৬০০ একর জমি ওই এস্টেটে যোগ করেন জাকারবার্গ। একই বছর তিনি কাউয়াইতে আরও ১১০ একর জমি কিনেছিলেন।

এস্টেটটিতে এখন প্রায় ১ হাজার ৫০০ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে একটি উন্মুক্ত সমুদ্র সৈকতও রয়েছে। এখানে একটি বিশাল কম্পাউন্ডের বাড়ি বানাতে চলেছেন জাকারবার্গ। এখানে ৫ হাজার বর্গফুটের ভূগর্ভস্থ বাংকার থাকবে বলেও অয়ার্ড গত ডিসেম্বরে প্রথম প্রতিবেদন করে।

জাকারবার্গ জানিয়েছেন, এস্টেটটিতে একরের পর একরজুড়ে ম্যাকাডামিয়া গাছ রয়েছে। তাঁর মেয়েরা এই গাছ লাগাতে এবং খামারে বিভিন্ন প্রাণীর যত্ন নিতে সহায়তা করে।

খামারের প্রতিটি গরু প্রতিবছর ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার পাউন্ড খাদ্য গ্রহণ করে। তার মানে এস্টেটে জন্মানো ওই বাদামজাতীয় ফলই হবে গরুগুলোর প্রধান খাদ্য।

জারবার্গের পোস্ট নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে দারুণ আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রাণী অধিকার নিয়ে সচেতনদের বেশি সক্রিয় হতে দেখা গেছে। তেমনি একজন ব্যবহারকারী বলেছেন, একদিকে তিনি তার গবাদি পশুর যত্ন নেওয়ার দাবি করছেন। কিন্তু চূড়ান্ত পরিণতি হল তিনি তাদের খাবারের টেবিলে নিয়ে আসবেন, সুতরাং যত্নটা কোথায়? এর অর্থ হলো জমি এবং সম্পদের অপচয়।

তবে সমালোচনার পাশাপাশি অনেকেই এই উদ্যোগের জন্য শুভ কামনাও জানিয়েছেন।