Dhaka বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একীভূত হতে সোনালী-বিডিবিএল চুক্তি সই

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের সঙ্গে স্বেচ্ছায় একীভূত হতে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) সমঝোতা চুক্তি করেছে।

রোববার (১২ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই চুক্তি সই হয়। এ সময় সোনালী ব্যাংক ও বিডিবিএলের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এই চুক্তির ফলে এখন ব্যাংক দুটির সম্পদ ও দায় পর্যালোচনা করা হবে। এরপরই নানা প্রক্রিয়া শেষে একীভূত হবে ব্যাংক দুটি।

বিডিবিএল সূত্র জানায়, মার্জারের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা ছিল, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের পর্ষদ অনুমোদন দিয়েছে। গত বুধবার বিষয়টি অনুমোদন হয়েছে সোনালী ব্যাংকের পর্ষদ সভায়। দুটো সরকারি ব্যাংক একমত হওয়ায় মার্জ (একীভূত) হবে। ব্যাংক দুটির বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করার পরে আজ চুক্তি হলো। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী মার্জার প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ শুরু হবে।

বিডিবিএল চেয়ারম্যান শামীমা নার্গিস বলেন, বিডিবিএল-এর চারটি ইনডিকেটরের মধ্যে তিনটিই বেশ ভালো আছে। শুধু খেলাপিতে একটু দুর্বল অবস্থায় আছে। এর আগে খেলাপি ঋণ যেটা ৪১ শতাংশ ছিল, আমরা সেটি কমিয়ে ৩৪ শতাংশে নিয়ে এসেছি। যদিও মার্জারের যে নীতিমালা, সেখানে চারটি ইন্ডিকেটরের মধ্যে খেলাপি ঋণের বিষয়টা আলাদাভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, এক বছরে আমরা খেলাপিতে ৪১ থেকে ৩৪ শতাংশে এসেছি। ছয় মাসে ৩৪ থেকে ১০ বা ১৫ শতাংশে আসা সম্ভব নয়। খেলাপি ঋণ শুধুই আমার অ্যাকটিভনেস নয়, যে খেলাপি তাকেও এগিয়ে আসতে হবে। সে এগিয়ে না এলে তার জামানত বিক্রি করতে গেলেও অনেক ধাপ, যেমন- অর্থঋণ আদালত, অর্থ আদালত, মামলা এসব ধাপ অতিক্রম করে আসতে হবে। যেটা ছয় মাসে সম্ভব নয়।

সময় নিয়ে খেলাপি আদায় সম্ভব কি না? এ বিষয়ে তিনি বলেন, বেসরকারি ব্যাংকগুলো যেমন গ্যারান্টি দিচ্ছে, আগামী এক বছরে এত হাজার কোটি টাকা আনবো, আমি সেই গ্যারান্টি দিতে পারছি না। আমাদের ব্রাঞ্চের সংখ্যা কম। মাত্র ৫০টি শাখা। বাংলাদেশ ব্যাংক তো আর আমাকে ৫-১০ বছর সময় দেবে না।

বিডিবিএলের কর্মীরা মার্জারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে খোলা চিঠি দিয়েছেন, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিডিবিএল চেয়ারম্যান বলেন, এখানে কেউ একা নয়, দুই ব্যাংকের পর্ষদ মিলে একীভূতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কাজেই পর্ষদ অনেক কিছু প্লাস-মাইনাস করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেটা বেটার, সেটাই করা হয়েছে।

সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী বলেন, অনেক চিন্তা ভাবনা করেই দুই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ মার্জারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কোনো চাপের মুখে নয়, বরং নিজেরাই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখানে দুই ব্যাংকের দুই ধরনের অভিজ্ঞতা আছে। যেগুলা কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। বিডিবিএলের চেয়ারম্যানের কিছু প্রশ্ন ছিল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সেগুলোর সন্তোষজনক জবাব দিয়েছেন।

সোনালী ব্যাংকের এমডি আফজাল করিম বলেন, সোনালী ব্যাংকের ডিপোজিট এক লাখ পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে বিডিবিএলে এর প্রায় ৫০ ভাগের এক ভাগ। এতে সোনালী ব্যাংকে খুব বেশি ইফেক্ট পড়বে না। আবার বিডিবিএলের এমপ্লয়ীদের শঙ্কিত বা আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নাই।

এদিকে ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা ফেরানোর কথা বলে তাড়াহুড়ো করে একীভূত করণের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ঝুঁকিতে থাকা দুর্বল ব্যাংকগুলোকে অপেক্ষাকৃত সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার উদ্যোগ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে পরামর্শ দিয়ে আসছে আইএমএফ। তারই অংশ হিসেবে রোডম্যাপ ঠিক করা হয়। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকে এক বছর সময় দিয়ে ‘প্রম্পট কারেক্টিভ অ্যাকশন, পিসিএ’ নীতি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নেপালে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা নিরাপদে আছেন : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

একীভূত হতে সোনালী-বিডিবিএল চুক্তি সই

প্রকাশের সময় : ০৮:২৪:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের সঙ্গে স্বেচ্ছায় একীভূত হতে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) সমঝোতা চুক্তি করেছে।

রোববার (১২ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই চুক্তি সই হয়। এ সময় সোনালী ব্যাংক ও বিডিবিএলের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এই চুক্তির ফলে এখন ব্যাংক দুটির সম্পদ ও দায় পর্যালোচনা করা হবে। এরপরই নানা প্রক্রিয়া শেষে একীভূত হবে ব্যাংক দুটি।

বিডিবিএল সূত্র জানায়, মার্জারের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা ছিল, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের পর্ষদ অনুমোদন দিয়েছে। গত বুধবার বিষয়টি অনুমোদন হয়েছে সোনালী ব্যাংকের পর্ষদ সভায়। দুটো সরকারি ব্যাংক একমত হওয়ায় মার্জ (একীভূত) হবে। ব্যাংক দুটির বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করার পরে আজ চুক্তি হলো। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী মার্জার প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ শুরু হবে।

বিডিবিএল চেয়ারম্যান শামীমা নার্গিস বলেন, বিডিবিএল-এর চারটি ইনডিকেটরের মধ্যে তিনটিই বেশ ভালো আছে। শুধু খেলাপিতে একটু দুর্বল অবস্থায় আছে। এর আগে খেলাপি ঋণ যেটা ৪১ শতাংশ ছিল, আমরা সেটি কমিয়ে ৩৪ শতাংশে নিয়ে এসেছি। যদিও মার্জারের যে নীতিমালা, সেখানে চারটি ইন্ডিকেটরের মধ্যে খেলাপি ঋণের বিষয়টা আলাদাভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, এক বছরে আমরা খেলাপিতে ৪১ থেকে ৩৪ শতাংশে এসেছি। ছয় মাসে ৩৪ থেকে ১০ বা ১৫ শতাংশে আসা সম্ভব নয়। খেলাপি ঋণ শুধুই আমার অ্যাকটিভনেস নয়, যে খেলাপি তাকেও এগিয়ে আসতে হবে। সে এগিয়ে না এলে তার জামানত বিক্রি করতে গেলেও অনেক ধাপ, যেমন- অর্থঋণ আদালত, অর্থ আদালত, মামলা এসব ধাপ অতিক্রম করে আসতে হবে। যেটা ছয় মাসে সম্ভব নয়।

সময় নিয়ে খেলাপি আদায় সম্ভব কি না? এ বিষয়ে তিনি বলেন, বেসরকারি ব্যাংকগুলো যেমন গ্যারান্টি দিচ্ছে, আগামী এক বছরে এত হাজার কোটি টাকা আনবো, আমি সেই গ্যারান্টি দিতে পারছি না। আমাদের ব্রাঞ্চের সংখ্যা কম। মাত্র ৫০টি শাখা। বাংলাদেশ ব্যাংক তো আর আমাকে ৫-১০ বছর সময় দেবে না।

বিডিবিএলের কর্মীরা মার্জারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে খোলা চিঠি দিয়েছেন, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিডিবিএল চেয়ারম্যান বলেন, এখানে কেউ একা নয়, দুই ব্যাংকের পর্ষদ মিলে একীভূতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কাজেই পর্ষদ অনেক কিছু প্লাস-মাইনাস করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেটা বেটার, সেটাই করা হয়েছে।

সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী বলেন, অনেক চিন্তা ভাবনা করেই দুই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ মার্জারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কোনো চাপের মুখে নয়, বরং নিজেরাই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখানে দুই ব্যাংকের দুই ধরনের অভিজ্ঞতা আছে। যেগুলা কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। বিডিবিএলের চেয়ারম্যানের কিছু প্রশ্ন ছিল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সেগুলোর সন্তোষজনক জবাব দিয়েছেন।

সোনালী ব্যাংকের এমডি আফজাল করিম বলেন, সোনালী ব্যাংকের ডিপোজিট এক লাখ পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে বিডিবিএলে এর প্রায় ৫০ ভাগের এক ভাগ। এতে সোনালী ব্যাংকে খুব বেশি ইফেক্ট পড়বে না। আবার বিডিবিএলের এমপ্লয়ীদের শঙ্কিত বা আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নাই।

এদিকে ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা ফেরানোর কথা বলে তাড়াহুড়ো করে একীভূত করণের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ঝুঁকিতে থাকা দুর্বল ব্যাংকগুলোকে অপেক্ষাকৃত সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার উদ্যোগ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে পরামর্শ দিয়ে আসছে আইএমএফ। তারই অংশ হিসেবে রোডম্যাপ ঠিক করা হয়। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকে এক বছর সময় দিয়ে ‘প্রম্পট কারেক্টিভ অ্যাকশন, পিসিএ’ নীতি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।